<p style="text-align: justify;">পেপার, জেমি ও ইয়ানি নামের রোবট তিনটি বেশ ব্যস্ত৷ জার্মানির এরলেনবাখ শহরে কারিতাসের সেন্ট জন্স বৃদ্ধাশ্রমে এই রোবটগুলো কাজ করে৷ এরা দেখতে মানুষের মতো। তারা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের হৃদয় জয় করতে পারে৷ শারীরিক গঠনের সুবিধাও রয়েছে৷ কিছুটা শিশুর মতো৷ আমাদের বয়স্ক মানুষগুলো সব সময় বসে থাকেন৷ উচ্চতার দৌলতে রোবটগুলো তাদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে৷</p> <p style="text-align: justify;">পেপার ও অন্যান্য রোবট বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের ব্যস্ত রাখে৷ দুপুরে ঘুমের সময়ও রোবট তাদের ওপর নজর রাখে৷ কেউ ঘুম থেকে উঠে গেলে জেমি নার্সিং কর্মীদের সংকেত পাঠায়৷ ফলে মানুষ কর্মীরা কিছুটা বিশ্রাম পান৷ সুসানে কোনিশ বলেন, সহকর্মীরাও অবশ্যই বাসিন্দাদের ওপর নজর রাখেন৷ কিন্তু তারই মাঝে তাদের কখনো অন্য কোনো কাজও সারতে হয়৷</p> <p style="text-align: justify;">ইয়ানি শুধু নাচের মাধ্যমে মনোরঞ্জন করে না, ওষুধ খাওয়ার কথাও মনে করিয়ে দেয়৷ নার্সিং স্টাফদের সাধারণত সে সময় উপস্থিত থাকার কোনো প্রয়োজন হয় না৷ সুযোগ পেলে ইয়ানি একাই সেই কাজ সামলাতে পারে৷ সেন্ট জন বৃদ্ধাশ্রমের কর্মী নিকোল স্ট্রেল-আবট বলেন, ‘আমরা এমনটা করি না, কারণ যন্ত্র মানুষের বিকল্প হোক- আমাদের কাছে তা একেবারেই কাম্য নয়৷ কোনো না কোনো কর্মী সঙ্গেই উপস্থিত থাকেন৷’</p> <p style="text-align: justify;">পেপার, জেমি ও ইয়ানি কাগজে-কলমে নার্সিং রোবট হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি৷ তাদের ক্ষমতা আসলে সীমিত৷</p> <p style="text-align: justify;">গার্মি নামের রোবট এমন সব মানুষকে দৈনন্দিন কাজে সাহায্য করে, যাদের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে৷ জেরিয়াট্রনিক্স গবেষণাকেন্দ্রের গুন্টার স্টাইনেবাখ বলেন, ‘আমরা সেই লক্ষ্যই পূরণ করতে চাই৷ আমরা রোগীদের এমনভাবে সাহায্য করতে চাই, যাতে তারা যতকাল সম্ভব নিজেদের মর্জিমাফিক বাসায় থাকতে পারেন৷ সঙ্গে শুধু যান্ত্রিক সাহায্যের ব্যবস্থা থাকবে৷’</p> <p style="text-align: justify;">আশা করা হচ্ছে, বাসার কাজে রোবটের পুরোপুরি ব্যবহার সম্ভব করতে আরো অনেক সময় লাগবে৷ গার্মি এখনো গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে৷ দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি সেই রোবট টেলিমেডিসিনের ক্ষেত্রেও সহায়তা করতে পারবে।</p> <p style="text-align: justify;">ড. আবদেল জলিল নাসেরি গত প্রায় চার বছর ধরে নিজের টিমের সঙ্গে একটি গবেষণা চালাচ্ছেন। রোবটিকস ও এআই কিভাবে স্বাস্থ্য ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে সার্থকভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটিই তাদের গবেষণার বিষয়৷ ধারাবাহিকভাবে গার্মির উন্নতি ঘটানো হচ্ছে৷ সেই রোবট এমনকি রোগীর প্রয়োজনও শনাক্ত করতে পারছে৷ </p> <p style="text-align: justify;">ড. নাসেরি জানান, এই রোবট মুখের অভিব্যক্তি চিনতে পারে৷ আনন্দ, ব্যথা ইত্যাদি টের পায়৷ রোগী কেমন বোধ করছেন, রোবট তা বুঝতে পারে৷ সেই অনুযায়ী রোবট পদক্ষেপ নিতে পারে৷ এ ছাড়া পড়ে যাওয়ার মতো দৃশ্যমান ঘটনাও সে চিনতে পারে৷ রোবট সরাসরি প্রশ্নও করতে পারে৷ রোগী যদি বলে তেষ্টা পাচ্ছে, গার্মি তখন প্রশ্ন করে, তুমি কি এক বোতল পানি নাকি গরম চা পান করতে চাও? কেউ যদি বলে ঠাণ্ডা লাগছে, তখন গার্মি বলে, আমি কি একটা চাদর নাকি জ্যাকেট নিয়ে আসব?</p> <p style="text-align: justify;">খুদে সাহায্যকারীরা নার্সিং কর্মীদের কাজের বোঝা কিছুটা কমাচ্ছে এবং অবশ্যই সবার মনে অনেক আনন্দ দিচ্ছে৷</p> <p style="text-align: justify;">সূত্র : ডয়চে ভেলে</p>