<p>কাতার বিশ্বকাপ এখনো টাটকা স্মৃতি, এর মধ্যেই আরেকটা বিশ্বকাপের দামামা বেজে গেছে মধ্যপ্রাচ্যে। বিশ্বকে স্বাগত জানাতে তৈরি এবার সৌদি আরব। মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানে এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশে ফুটবল বিশ্বকাপ—একসময় তো ভাবাই যেত না। সময় বদলে গেছে।</p> <p>কাতার পথ দেখিয়েছে। মেসি-রোনালদোকে উড়িয়ে এনে সৌদি দেখিয়েছে তাদের সামর্থ্য। ‘পেট্রোডলার’ কথা বলে, এটা স্রেফ কথার কথা নয় তাহলে!<br /> ২০২২ বিশ্বকাপ কাতারকে দেওয়া নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। আবার দুর্দান্ত আয়োজনে সেই বিতর্ক ধামাচাপা দিয়েছে কাতার।</p> <p>২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পাওয়া সৌদি আরবের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। অবশ্য মরুর দেশে আরেকটি বিশ্বকাপ আয়োজন না করে উপায়ও ছিল না ফিফার হাতে। কারণ ফিফার রীতি অনুযায়ী এক মহাদেশে দুটি বিশ্বকাপ আয়োজনের মাঝে অন্তত ১২ বছরের ব্যবধান থাকতে হবে। এই নিয়মে ২০৩৪ চাইতে পারত না উত্তর আমেরিকার কোনো দেশ।</p> <p>২০২৬ বিশ্বকাপের আসর উত্তর আমেরিকায় বসছে। দক্ষিণ আমেরিকারও একই দশা। ২০৩০ বিশ্বকাপে বেশির স্পেন ও পর্তুগালের পাশাপাশি মরক্কো, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়েতে তিনটি ম্যাচ হওয়ায় ২০৩৪-এর ‘বিড’ থেকেই বাদ আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা। তাতে ফিফার হাতে বিকল্প ছিল শুধু এশিয়া ও ওশেনিয়া। সৌদি আরব নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করার পর দেখা গেছে এশিয়ার আর কোনো দেশ এগোয়নি।</p> <p>শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়াও। সেই কাজটাই করেছে সৌদি আরব। তাদের ‘বিডিং’ নিয়ে ফিফার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী শতকের বিশ্বকাপ কেমন হবে, তারই একটা ছাপ পাওয়া যাবে এই আসরে। ৫-এর মধ্যে ৪.২ নম্বর পেয়েছে সৌদি আরবের প্রস্তাব, বিশ্বকাপ ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ। সেখানে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি কানেই তুলছে না ফিফা। সৌদি আরবের ‘ক্রাউন প্রিন্স’ মুহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ‘সৌদি আরবের অগ্রগতি এই বিশ্বকাপ দিয়ে পুরো বিশ্বের কাছে তুলে ধরার দারুণ সুযোগ আমাদের সামনে।’<br /> মূলত ‘ভিশন ২০৩০’-এর সাফল্য উপভোগ করতে চলেছে সৌদি আরব, যেখানে তেলনির্ভর অর্থনীতিকে আরো নানা দিকে ছড়িয়ে দিতে চলেছে তারা। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিনিয়োগ করেছে তারা সৌদি ক্লাবগুলোতে। ফুটবলের পর টেনিস, গলফ, বক্সিংয়ের নতুন ঠিকানা হতে চলেছে রিয়াদ ও জেদ্দা।</p> <p>সৌদি আরব ক্রমেই পাল্টাচ্ছে। ২০৩৪ সালে পরিবর্তিত এই সৌদি আরবকেই দেখবে বিশ্ব। গত পরশু একই সঙ্গে ২০৩০ ও ২০৩৪ সালের স্বাগতিকদের নাম ঘোষণা করেছে ফিফা। ২০৩০ বিশ্বকাপে শতবর্ষ উদযাপন করবে ফিফা। সেটি মাথায় রেখে তিন মহাদেশের ছয় দেশে আয়োজিত হবে বিশ্বকাপ।</p>