<p>গলাচিপায় আগাম তরমুজ চাষে নতুন স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। দিন দিন আবহাওয়ার পরিবর্তনে দিশাহারা কৃষকরা এবার প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পট বা পলিব্যাগে বীজ বপন করে চারা তৈরি করছেন। এতে জমি প্রস্তুতের ১৫-২০ দিন আগেই চারা রোপণ উপযুক্ত হয়ে যায়। কৃষকদের ধারণা, এই পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও ফসল সুরক্ষিত থাকবে। এসব তথ্য পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও কৃষি অফিসের সূত্রে।</p> <p>গলাচিপা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর উপজেলায় ৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সম্ভাব্য বাজারমূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ফলন ভালো হলে এই অঙ্ক আরো বাড়তে পারে।</p> <p>গলাচিপা সদর ইউনিয়নের তরমুজ চাষি আবু আক্কাস মৃধা জানান, এ বছর চার একর জমির জন্য ৯ হাজার পলিব্যাগে তরমুজের বীজ বপন করেছেন। পলিব্যাগে বীজ বপনের সুবিধা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আমন ধান কাটতে দেরি হয়। তরমুজের চাষ মৌসুম শুরু হলেও তখনো ক্ষেতে ধান থাকে। ধান কেটে জমি চাষ করতে সময় লেগে যায় ২০-২৫ দিন। কিন্তু পলিব্যাগে বীজ লাগালে এই সময়টা নষ্ট হয় না। ফলে সঠিক সময়ে তরমুজের ফলন পাওয়া সম্ভব হয়।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, প্রতি পলিব্যাগে সার, বীজ এবং শ্রমিক মিলিয়ে ৩ টাকা ৪৫ পয়সা খরচ হয়। এখান থেকে সরাসরি চারা আগেই তৈরি করা ম্যাদায় (মাটির ঢিপি) লাগানো যায়। এতে মাত্র ১০০ দিনের মধ্যেই তরমুজ পেকে যায়।</p> <p>গলাচিপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি মোস্তফা সরদার বলেন, ‘এ বছর তিন একর জমিতে তরমুজ চাষ করছি। আমি কখনো তরমুজ চাষে লোকসান দিইনি। তবে আবহাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তরমুজের ফলন কখনোই সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।’</p> <p>গলাচিপা উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. আকরামুজ্জামান বলেন, ‘আগাম তরমুজের আশায় কৃষকরা পলিব্যাগে বীজ বপন করছেন। এতে তারা ইতোমধ্যে ভালো সুফল পেয়েছেন। এ বছর সব ঠিক থাকলে প্রায় ৮৯৫০ হেক্টর জমিতে উৎপন্ন তরমুজ থেকে ৭০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হতে পারে। এটি গলাচিপার কৃষকদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।’</p>