<p>কম্পিউটার প্রযুক্তি এত শক্তিশালী যে তা মানুষের হাতঘড়ি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।  স্ক্যান করেই বলে দিচ্ছে দেহের নানা তথ্য । তবে কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা কিন্তু সন্তষ্ট নন।  তাঁদের চ্যালেঞ্জ একটাই। কম্পিউটার চিপের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চিপের আকৃতি ক্ষুদ্র করা। নিয়ে যেতে হবে পারমাণবিক পর্যায়ে।</p> <p>কম্পিউটার যখন কোয়ান্টাম জগতে প্রবেশ করবে তখন ঘটবে বিপ্লব। সাধারণ কম্পিউটার কাজ করে বাইনারি পদ্ধতিতে। সব তথ্যকে ডিজিটাল বিটের (০ এবং ১) ক্রমে সাজিয়ে বিভিন্ন অপারেশন সম্পন্ন করে। কম্পিউটারের চিপে রয়েছে অসংখ্য ট্রানজিস্টর।</p> <p>এরা ০ এবং ১-এর সংকেত অনুযায়ী চালু আর বন্ধ হয়। একটা ট্রানজিস্টর নির্দিষ্ট সময়ে চালু অথবা বন্ধ, যেকোনো একটা অবস্থায় থাকতে পারে। ফলে একটা কম্পিউটারে যত বেশি ট্রানজিস্টর থাকে, সেই কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা তত বেশি।</p> <p>কোয়ান্টাম কম্পিউটারে অপারেশন হয় কিউবিটের মাধ্যমে। কিউবিট তৈরিতে কোয়ান্টাম কণা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হলো কোয়ান্টাম ডিকোহেরেন্স। বাহ্যিক পরিবেশের প্রভাবে কণাগুলো তার কোয়ান্টাম গুণাবলি হারাতে থাকে। ফলে কার্যক্ষমতা কমে যায় কিউবিটের।</p> <p>তাই কিউবিট তৈরির কিছু বিশেষ পদ্ধতি আছে। একটা পদ্ধতি হলো সুপারকনডাক্টিং সার্কিট ব্যবহার করা। আরেকটি— বিদ্যুৎচুম্বক ক্ষেত্রে ভেসে থাকা ক্ষুদ্র কণা ব্যবহার।</p> <p>কোয়ান্টাম কম্পিউটার এখন সূচনালগ্নে আছে। গুগল, আইবিএম ও মাইক্রোসফটের মতো টেক জায়ান্টরা বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং মেধা ব্যয় করছে এর পেছনে।</p> <p>দ্রুতই কম্পিউটিংয়ের নতুন এক যুগের সূচনা করবে এই প্রযুক্তি। উন্নত মহাকাশযান, নিরাপদ তথ্য যোগাযোগ থেকে শুরু করে খাদ্য ও পণ্য উৎপাদন বাড়াতে অভাবনীয় অবদান রাখতে চলেছে  কোয়ান্টাম কম্পিউটার।<br /> <br /> কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কিউবিট তার সুপারপজিশন এবং এন্ট্যাঙ্গলমেন্টের মতো বিশেষ গুণাবলি ব্যবহার করে অপারেশন সম্পন্ন করে।</p> <p>যেসব সমস্যা সমাধান করতে ক্লাসিক্যাল কম্পিউটারের একশ বছর লাগতো, কোয়ান্টাম কম্পিউটার তা মূহুর্তেই করতে পারবে। যদি একটা পাসওয়ার্ড ভাঙতে সাধারণ কম্পিউটার ১০ বছর নেয়। সেখানে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের লাগবে কয়েক সেকেন্ড।</p> <p>বিজ্ঞানীরা বলেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটার আবিষ্কার হলে মানুষের হাতে অসীম ‘কম্পিউটিং ক্ষমতা’ আসবে। এমনকি বর্তমানের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলতে পারবে এই প্রযুক্তি। অদূর ভবিষ্যতে এটা বেশ ভয়ানক ব্যাপার হবে। বিজ্ঞানীরা সেই সময়টাকে 'কোয়ান্টাম মহাপ্রলয়' বলে সম্বোধন করেছেন।</p> <p><strong>সম্পর্কিত তত্ত্ব</strong><br /> কোয়ান্টাম স্পিন<br /> ডিকোহেরেন্স<br /> বেলের অসমতা<br /> কিউবিট<br /> কোয়ান্টাম ডট</p> <p><strong>বিজ্ঞানী</strong><br /> রিচার্ড ফাইনম্যান<br /> ১৯১৮-৮৮<br /> নোবেল বিজয়ী মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ, পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষক।</p> <p>বর্ণনা<br /> আলেক্সান্ডার হেলেমানস<br />  </p>