<p>‘ছোটবেলায় কোলে থাকা অবস্থায় ছেলেটা মারা গেলে মনেরে বুঝ দিতে পারতাম এত কষ্ট পাইতাম না। যতটা কষ্ট পাইছি এই বয়সে এসে মারা যাওয়ায়। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেছি। গত কয়েক বছর ধরে আমি কিডনি জটিলতায় ভুগতেছি। ছেলের আয়ের টাকায় সংসারের পাশাপাশি আমার চিকিৎসা চলতো। এখন ছেলে নাই, তাই ঠিক মতো ওষুধ কিনে খেতে পারছি না। আল্লায় আমার ছেলেরে নিয়া গেছে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ মো. সোহেল রানার মা সাফিয়া বেগম।</p> <p>২২ বছর বয়সী সোহেল রানা ঢাকার আদাবর এলাকায় একটি থ্রিপিস কারখানায় অ্যাম্বডারির কাজ করতেন। তিনি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল হকের ছেলে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সাবেক মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর বাড়িতে আগুন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/17/1731834748-bb0539e38a0bbccfd78c345448c2f33e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সাবেক মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর বাড়িতে আগুন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/17/1447624" target="_blank"> </a></div> </div> <p>কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাফিয়া বেগম জানান, তিনি ৫ আগস্ট সকালে মেয়ে নুর জাহানের বাসায় যান। সেদিন দুপুর ১২টার দিকে বাসায় ফেরেন তিনি। এ সময় ছেলে সোহেলকে অন্য এক বন্ধুর সঙ্গে রিকশায় যেতে দেখেন। ছেলেকে কোথায় যায় জিজ্ঞেস করেছিলেন। ছেলে উত্তরে বলে ছিল বোনের বাসায় যায়। মা সাফিয়া বেগম ছেলেকে বলে ছিলেন ‘বাবা বাইরে যেয়ো না। আর তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আইসো।’ এটাই ছিল তার সঙ্গে ছেলে সোহেল রানার শেষ কথা। এর পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক অপরিচিত লোক ফোন করে জানায় সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। তার মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আছে।</p> <p>খবর পেয়ে দ্রুত সোহেলের বড় ভাই ইব্রাহীম হাসপাতালে ছুটে যান। সেখান থেকে সে রাতেই মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে ভোলার উদ্দেশে রওনা হন। এর পরদিন ৬ আগস্ট বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="১ মাস ২৮ দিনের মাথায় কক্সবাজার সদর থানার ওসি নোমান প্রত্যাহার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/17/1731829629-1c7e89c3694f352a9c98241cec343367.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>১ মাস ২৮ দিনের মাথায় কক্সবাজার সদর থানার ওসি নোমান প্রত্যাহার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/17/1447603" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সাফিয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার বড় ছেলে ইব্রাহীম কাজ করতে গিয়ে ছয় তলা পড়ে গিয়ে আহত হয়ে বাসায় রয়েছেন। ঠিকভাবে কাজ করতে পারেন না। তাই অভাবের কারণে তাদের সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্য দিকে নিজে কিডনি রোগে ভুগছেন। টাকার অভাবে নিয়মিত ওষুধও খেতে পারছেন না।</p> <p>শহীদ সোহেল রানার বড় ভাই মো. ইব্রাহীম জানান, রাজনৈতিক কারণে ২০০৯ সালের দিকে পুরো পরিবার নিয়ে তারা ঢাকায় পাড়ি জমান। তার বাবা আব্দুল হক রিকশা চালিয়ে তাদের তিন ভাই ও এক বোনকে নিয়ে ঢাকার আদাবর ১০ নম্বর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। পারিবারিকভাবে তারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই গ্রাম ছাড়তে হয়েছে তাদের। এরপর আস্তে আস্তে তারা বড় হলে ইব্রাহীম রাজ মিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। আর মেজ ভাই সোহেল রানা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে অভাবের কারণে আর পড়ালেখা করতে পারেননি। এরই মধ্যে ২০১৮ সালে বাবা আব্দুল হকের ব্ল্যাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়লে সোহেল রানা ঢাকার আদাবর এলাকায় একটি থ্রিপিসের কারখানায় অ্যাম্বডারির কাজ নেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হিসেব করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াসহ আ. লীগ নেতাকর্মীদের যা বললেন বিএনপি নেতা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/17/1731824124-794cdb9c73f8c687c66ee249c67e263a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হিসেব করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াসহ আ. লীগ নেতাকর্মীদের যা বললেন বিএনপি নেতা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/17/1447577" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরো জানান, ২০২০ সালে বাবা আব্দুল হক মারা যান। সোহেল রানাকে বছর দুয়েক আগে বিয়ে করান। সেই ঘরে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যান। বন্ধুদের সঙ্গে আদাবর এলাকায় আন্দোলনে যোগ দেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে হঠাৎ একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে সোহেল আদাবর থানার সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার লাশ হাসপাতালে রয়েছে। এ খবর পেয়ে তারা গিয়ে সেখান থেকে মরদেহ বুঝে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কেশবপুরে ২ প্রতিষ্ঠানে লুটপাট-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/17/1731817467-d99119ca42e35bfa7fbc7fba9ab1d88a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কেশবপুরে ২ প্রতিষ্ঠানে লুটপাট-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/17/1447555" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এ ঘটনায় বড় ভাই ইব্রাহীম বাদী হয়ে ২০ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০০ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। তিনি ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে ভাইয়ের রেখে যাওয়া অবুঝ সন্তান তাইয়্যেবার ভবিষ্যতের জন্য কিছু করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ফল ভোগ করছেন শেখ হাসিনা : কাদের সিদ্দিকী" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/17/1731828839-0331f1beab22fb6d25616fda3a99b07b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ফল ভোগ করছেন শেখ হাসিনা : কাদের সিদ্দিকী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/17/1447598" target="_blank"> </a></div> </div>