<p style="text-align:justify">বেদম পেটানোর পর দুই তরুণকে পিঠমোড়া করে গাছের সঙ্গে বাঁধা হয়। এরপর চলছে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা। নির্মম মারধরের ফলে শরীরে হওয়া ক্ষতস্থানে কেউ লবণ ঘষছে, কেউ চোখে-মুখে ঘষছে মরিচের গুঁড়া। তীব্র যন্ত্রণায় দুই তরুণ যতই চিৎকার করছে, ততই উল্লাস করে নির্যাতনকারীরা। ওই নির্যাতনের একটি ভিডিও গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়ে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="তিন মাস ধরে লাপাত্তা ১৬ চেয়ারম্যান ও মেম্বার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/01/1730451497-3d86c5f65fcbe005a17507b12b7ca7c4.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>তিন মাস ধরে লাপাত্তা ১৬ চেয়ারম্যান ও মেম্বার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/01/1441518" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">দুই মিনিট চৌদ্দ সেকেন্ডের ভিডিও’তে দেখা গেছে, ‘নির্যাতনে অংশ নেয় একজন নারীও। ওই সময় কয়েকজন শিশু, নারীসহ অনেকেই নির্বিকার দাঁড়িয়ে নির্যাতন দেখছিল।’</p> <p style="text-align:justify">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী ইউনিয়নের আবদার গ্রামে সাইলাপাড়া এলাকায়।</p> <p style="text-align:justify">নির্যাতনের শিকার তরুণরা হলেন, মাইনুদ্দিন সোহেল (২৬) ও আলমগীর হোসেন (২৪)। তাঁরা দুইজনই ওই এলাকার ইরেক্টস পুলস অ্যান্ড স্ট্রাকচারস লিমিটেড কারখানার শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে মাইনুদ্দিন সোহেল ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ভাতাদিয়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে ও আলমগীর হোসেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আবদার গ্রামের আছিম উদ্দিনের ছেলে। মাইনুদ্দিন সোহেল কারখানাটির ভেতর আবাসিক ভবনে থেকে চাকরি করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে: ফরহাদ মজহার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/01/1730451195-7ea2b8e652dc9d9828a1ecc9e7b55059.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে: ফরহাদ মজহার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/01/1441517" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">মাইনুদ্দিন সোহেল অভিযোগ করেন, অটোরিকশা চোর অপবাদ দিয়ে তাঁদের তুলে নিয়ে প্রায় ১১ ঘণ্টা আটকে রেখে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে নগদ ৩০ হাজার টাকায় তাদের মুক্তি মেলে।</p> <p style="text-align:justify">ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাইনুদ্দিন সোহেল জানান, গত মঙ্গলবার রাতের শিফটে কাজ শেষে তিনি ও আলমগীর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কারখানার মূল ফটকের সামনে চা খেতে যান। সেখান থেকে আট থেকে দশজন ব্যক্তি তাঁদের তুলে নিয়ে যায়। পাশের একটি বনের ভেতর নিয়ে তাঁদের দুইজনকে নির্মমভাবে পেটানো হয়। ওই সময় নির্যাতনকারীদের পায়ে ধরেও তাঁরা রেহাই পাননি। একপর্যায়ে সেখান থেকে কয়েকশ গজ দূরে একটি বাড়ির সামনে নিয়ে দুইজনকেই পিঠমোড়া করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। সেখানেও দফায় দফায় তাঁদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।</p> <p style="text-align:justify">মাইনুদ্দিন সোহেল কান্নায় ভেঙে পড়ে জানান, নির্মম মারধরের ফলে আলমগীর ও তাঁর শরীরে কয়েকটি ক্ষত হয়। নির্যাতনকারীরা ওই ক্ষতস্থানে লবণ ঘষে দেয়। এখানেই থামেনি নির্যাতনকারীরা; তাঁদের চোখে-মুখে ঘষা হয় মরিচের গুঁড়া। ওই সময় তীব্র যন্ত্রণায় তাঁরা যখন চিৎকার করছিলেন, তখন নির্যাতনকারীরা হাসছিল।</p> <p style="text-align:justify">মাইনুদ্দিন সোহেল দাবি করেন, ‘কখন, কার অটোরিকশা চুরি হয়েছে; আমি এর কিছুই জানিনা। নির্যাতনকারী কাউকেই চিনিনা।’ তিনি অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে নির্যাতনকারীরা তাঁর কাছে নগদ এক লাখ টাকা দাবি করেন। বিষয়টি জানালে তাঁর স্ত্রী সোনার গয়না বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা পাঠান। ওই টাকায় তাঁদের মুক্তি মেলে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="যুক্তরাষ্ট্রে ‘আর্লি ভোটিং’-এর সুবিধা নিলেন ছয় কোটির বেশি ভোটদাতা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/01/1730450913-0fe2139b6f9163c35648cb82bdd0a4d0.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>যুক্তরাষ্ট্রে ‘আর্লি ভোটিং’-এর সুবিধা নিলেন ছয় কোটির বেশি ভোটদাতা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/01/1441515" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">মাইনুদ্দিনের ভাই মহিউদ্দিন জানান, বারবার নির্যাতনকারীদের পা ধরে ভাইকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানালেও মন গলেনি কারো। নিরুপায় হয়ে ওইদিন দুপুর একটার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দেন তিনি। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে তাঁর ভাইসহ দুইজনকে হাসপাতালে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চলে যান। নির্যাতনকারীরা পুলিশকে ‘এখনই হাসপাতালে নিচ্ছি’ বলে আশ্বস্ত করলেও ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাঁদের আটকে রাখে।</p> <p style="text-align:justify">নির্যাতনের প্রসঙ্গে চুরি হওয়া অটোরিকশাটির মালিক ফাইজ উদ্দিন বলেন, ‘গত শুক্রবার দুই তরুণ অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে শ্রীপুরসহ বরমী ও কাওরাইদ যায়। একপর্যায়ে তারা পানীওর সঙ্গে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে চালককে খাওয়ায়। পরে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনার পর চালককে উদ্ধার করে বিভিন্ন এলাকায় যাই। এর একপর্যায়ে মাইনুদ্দিন সোহেল ও আলমগীরকে শনাক্ত করে অটোরিকশাচালক।’</p> <p style="text-align:justify">ফাইজ উদ্দিন নির্যাতনে জড়িত নয় দাবি করে বলেন, ‘ওই দুইজনকে ধরে শত শত মানুষ মারধর করেছে। আমার কিছু করার ছিল না। আমি নির্যাতন করিনি।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মেগা প্রকল্প দেখলেই ‘মাথা নষ্ট’ হয়ে যেত লোটাস কামালের" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/01/1730449067-d82319912041449cd31bdb7e7569d171.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মেগা প্রকল্প দেখলেই ‘মাথা নষ্ট’ হয়ে যেত লোটাস কামালের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/01/1441512" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্যাতনের ভিডিওটি পেয়েছি। নির্যাতনের শিকার তরুণদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>