<p>সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর সদরের বারোয়ারি বটতলা মহল্লার নিজ বাসায় স্বামী-স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় আট মাস পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে ডিবি পুলিশ। আট মাস তদন্ত শেষে নিহত বিকাশ সরকারের ভাগনে রাজীব ভৌমিককে অভিযুক্ত করে ৩০ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ওয়াদুদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।</p> <p>গত ২৭ জানুয়ারি নিজ বাসার তৃতীয় তলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তাড়াশ পৌর এলাকার শোলাপাড়া মহল্লার মৃত কালিচরণ সরকারের ছোট ছেলে বিকাশ সরকার (৪৫), বিকাশের স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৩৮) ও মেয়ে পারমিতা সরকার তুষি (১৫)। </p> <p>এলাকাবাসী জানায়, গত ২৭ জানুয়ারি রাতে বিকাশ সরকার কে বাজারে দেখা যায়। এরপর থেকে তাকে এবং তার স্ত্রী ও মেয়ে কে স্বজনরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও পাচ্ছিলেন না। পরে অনেক  খোঁজাখুঁজি করেও তাদের সাড়া না পেয়ে বাসায় গিয়ে ফ্লাটে তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে ৩০ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে তারা পুলিশ কে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্ধ ফ্লাটের তালা ভেঙে ভিতরে গিয়ে তাদের মরদেহ দেখতে পান।</p> <p>পুলিশ জানায়, ঘটনার পরপরই পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম মন্ডলের দিকনির্দেশনায় সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ তদন্তে নামে। কোনো চরমপন্থি গ্রুপের টার্গেটে নাকি পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে-প্রাথমিক পর্যায়ে এ ধারণা নিয়ে তারা তদন্ত শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় নিহত বিকাশ সরকারের বড়ভাই প্রকাশ সরকার, ভাতিজা অঙ্কন সরকার ও ভাগনে রাজীব ভৌমিক কে। </p> <p>কিন্তু একটি মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডের সূত্রই পাল্টে দেয় মামলার তদন্তের গতিপ্রকৃতি। পাওনা টাকার জন্যই ঘটনার রাতে ভাগনে রাজীব ভৌমিক (২৬) কৌশলে লোহার রড ও হাসুয়া দিয়ে একে একে তিনজনকে হত্যা করেন। এরপর ফ্লাটের দরজায় তালা ঝুলিয়ে চাবি ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত আলামত নিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। ৩১ জানুয়ারি ডিবি পুলিশ রাজীব ভৌমিক কে আটক করলে তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করে। পরে রাজীব ভৌমিক আদালতেও ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।</p> <p>এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী অফিসার (বর্তমানে ঢাকার মিরপুর থানায় বদলি) মো. ওয়াদুদ আলী বলেন, তদন্ত শেষে মামলার চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে।</p> <p>মামলার বাদী সুকমল চন্দ্র সাহা জানান, হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন হয়েছে, এতে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। সেই সঙ্গে খুনির দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তিও তারা দাবি করেন।</p>