<p>বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। সপ্তাহের ব্যবধানে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় দ্বিগুণ রোগী। বেশির ভাগ রোগী ঢাকা, সাভার ও গাজীপুরে অবস্থান করার সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। বাড়তি রোগী সামলাতে চালু করা হয়েছে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু হয়নি। রোগীরা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে রোগীদের মধ্যে মশারি ব্যবহারে অনীহা দেখা গেছে।</p> <p>চিকিৎসকদের ভাষ্য, প্রতিবছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী বেশি থাকে। তবে এবার শুরুতে রোগী কম থাকলেও এখন ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে।</p> <p>পরিসংখ্যান বলছে, এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় দুই হাজার চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন দুই শতাধিক রোগী। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, অন্য রোগীদের সঙ্গেই চিকিৎসা চলছে ডেঙ্গু রোগীর। ব্যবস্থা নেই পর্যাপ্ত মশারীর।</p> <p>সিটি করপোরেশন বলছে, মশক নিধনে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ ও সুযোগ সুবিধা আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় নগরীজুড়ে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়ত বংশ বিস্তার করছে এডিস মশা। ফলে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।</p> <p>বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিভাগের ৬টি জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি ৪১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ ও সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন তারা। বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে প্রায় ২০০ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চলতি বছরের ৯ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দুই হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।’</p> <p>নগরবাসী জানায়, দেশে নানা বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপের বিষয়টি অনেকটা আড়ালে পড়ে গেছে। প্রতিনিয়ত মশার উপদ্রব বাড়ায় চিন্তিত তারা। সিটি করপোরেশন থেকে যে মশার ওষুধ দেওয়া হয় তা নিয়ে আছে নানা অভিযোগ।</p> <p>সিটি করপোরেশন বলছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এনেক্স ভবনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ক্ষতি হয় মশক নিধন সরঞ্জামের। ফলে মশক নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে শিগগিরই এর সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।</p> <p>বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পল্লবী রানী বলেন, ‘এনেক্স ভবনে আগুন দেওয়ার আগে ১০টি ফগার মেশিন ও ৪৫টি হ্যান্ড স্প্রে থাকলেও বর্তমানে ৯টি ফগার মেশিন ও ২০টি হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে ৫৫ জন কর্মচারী ৩০টি ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে ৩০টি ফগার মেশিন ও ৯০টি হ্যান্ড স্প্রের চাহিদা দিয়ে একটি টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।’</p> <p>শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, ৫০০ শয্যার হাসপাতালে ৩ হাজার রোগীর সেবা দেওয়ার পর ডেঙ্গু রোগীদের নিয়ে বিপাকে তারা। আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগ ঢাকা থেকে আগত। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালু করা সম্ভব হয়নি। নানান প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।’</p>