<p>দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন ৫৫ মেগাওয়াট বন্ধ হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সচল করতে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল।</p> <p>বিদ্যুৎকেন্দ্রটির তিনটি ইউনিটের মধ্যে ২ ও ৩ নম্বর ইউনিট আগে থেকে বন্ধ থাকলেও সচল ছিল ১ নম্বর ইউনিট। ৩১ জুলাই ৩ নম্বর ইউনিটটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আবার ৭ আগস্ট ইউনিটটি চালু করা হয়। তিনটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল ৫২৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১ নম্বর ইউনিট থেকে ১২৫, ২ নম্বর ইউনিট থেকে ১২৫ ও ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এর পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা কথা ছিল। কিন্তু ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়। এই ইউনিটটি মেরামতকাজে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ২০১৪ সালে ৩ নম্বর ইউনিটটি পুরোপুরি নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের শেষের দিকে ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু করা হয়। কয়েক বছর যেতে না যেতেই সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়।<br />  <br /> বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানায়, বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উৎপাদিত কয়লা দিয়ে ৫২৫ মেগাওয়াট বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন কার্যক্রম চালাচ্ছিল চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি মোতাবেক এ সময় উৎপাদন সচল রাখতে ছোট ধরনের মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও তার কিছুই করেনি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। </p> <p>চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সঠিকভাবে মালামাল সরবরাহ করার কথা থাকলেও এবং সেইভাবে চুক্তি হলেও তারা মালামাল সরবরাহ করেনি। যে কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে বারবার ত্রুটি দেখা দেয়। সেই কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজ ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রতিটি ইউনিট সচল রাখতে প্রয়োজন হয় দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প। যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই তিনটি ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি পাম্প নষ্ট থাকায় যেকোনো সময় বন্ধের ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প হিসেবে একটি ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প দিয়ে চলছিল উৎপাদন কার্যক্রম। ফলে মাঝেমধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হতো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন।</p> <p>একাধিকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি অবগত করলেও তারা অজ্ঞাত কারণে তা আমলে নেয়নি। সর্বশেষ ৬ সেপ্টেম্বর মেরামতের মাধ্যমে ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু করা হলে দুই দিনের মাথায় আবারও সোমবার সকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায় সব কার্যক্রম। </p> <p>বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এর আগে এক মাস ছয় দিন বন্ধ থাকার পর ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা ১৭ মিনিট থেকে এ উৎপাদন শুরু হয়। যা দুই দিন পরেই আবার বন্ধ হয়ে যায়। </p> <p>তিনি আরো জানান, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারনেশন্যল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সচল করতে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে। চীন থেকে মেশিন এলেই পুনরায় উৎপাদন শুরু করার কথা বলেছে তারা।</p>