<p style="text-align:justify">আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে পুলিশ ও জনগণের যৌথ ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে পুলিশের কর্মকাণ্ডকে স্বচ্ছ রাখতে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদরা পুলিশদের বিপদে ফেলতে পারবেন না। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আমাই) অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ভয়েস ফর রিফর্ম এর আয়োজনে ‘পুলিশের আনুগত্য হোক আইন ও জনগণের প্রতি, ক্ষমতার প্রতি নয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।</p> <p style="text-align:justify">সভায় বক্তারা বলেন, সাধারণ মানুষ আইনি সহায়তা নিতে থানাকে আরো কার্যকর ভূমিকায় দেখতে চায়। এজন্য প্রতিটি থানায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক ও এনজিও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। যেখানে পুলিশ ক্ষমতার প্রতি আনুগত্য ছেড়ে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এই সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার প্রয়োজন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="‘আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ সদস্যরা তামিমের মরদেহ পুড়িয়েছে’" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728128936-9e8a01bfb2c96c61eda1158eb7452e8d.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>‘আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ সদস্যরা তামিমের মরদেহ পুড়িয়েছে’</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2024/10/05/1432083" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সভায় মূল আলোচক ছিলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মির্জা হাসান এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি মো. নাজমূল হক।</p> <p style="text-align:justify">সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে প্রথমে নিয়োগে স্বচ্ছতা ও চাকরির ধরণে পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কি এই দায়িত্ব নেবেন? পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হবে, এতে সাহসের প্রয়োজন।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমার গদি ঠিক থাক, বাকি যা হবার হোক- এমন রাজনীতি থাকলে পুলিশ বাহিনী সংস্কার সম্ভব হবে না। এ ছাড়াও দেশ স্বাধীন করলেন, তবে ক্ষমতা উপভোগ করতে পছন্দ করেন; আবার প্রজাতান্ত্রিক শাষণতন্ত্র করলেন, তবে তা বাস্তবায়নে যা প্রয়োজন তা করলেন না-এসব করলে তো সংস্কার করা যাবে না। আমরা দেখেছি, পুলিশের এমন নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে, যা চিন্তা করা যায় না। সংস্কার করতে হলে তা দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে। এজন্য সে ধরনের মানষিকতা থাকা প্রয়োজন। আইনেও পরিবর্তন আনতে হবে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অন্তর্বর্তী সরকারকে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির ১৩ প্রস্তাব" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728128443-e78578c892c509b4d5963e27286f0f4a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অন্তর্বর্তী সরকারকে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির ১৩ প্রস্তাব</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/05/1432081" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি নাজমুল হক বলেন, ‘রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা দেখে যদি পুলিশের নিয়োগ হয়, তবে তারা নিরপেক্ষ কিভাবে হবে? বিশেষ করে সার্জেন্ট এবং কনস্টেবল নিয়োগে পৃথক কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যথায় আবার পুলিশ পালিয়ে যাবে, আর আমরা বিপাকে পড়ব। কনস্টেবল নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা কম। নিয়োগের পর তাদের ৬ মাসের প্রশিক্ষণ ও হাতে অস্ত্র দিয়ে কাজে পাঠানো হয়। এরপর আর কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। ফলে তারা গুলি ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। তাদের মানবিক গুণাবলি শেখাতে এসব বিষয় সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জনসাধারণ কিভাবে পুলিশের সেবা পাবে সে বিষয়ে পাঠে একটি অধ্যায় রাখা যেতে পারে। তবে শুধু পুলিশ সংস্কার করলে তো হবে না, বিচারিক ও নির্বাহী প্রশাসনকেও স্বচ্ছ করতে হবে। অন্যথায় পুলিশ সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না।’</p> <p style="text-align:justify">ভারতকে দেশি আসামিদের তাবু আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্রিমিনালদের সেফ টেন্ট হলো ভারত। তারা আমাদের এমন বন্ধু যে, যতদিন তাদের কথা শুনে চলব ততদিন বন্ধুত্ব থাকবে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="‘নদী-খাল দখলমুক্ত করতে জনমত গড়ে তুলতে হবে’" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728127159-d515dc95be25e9e1402d10e15171dc23.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>‘নদী-খাল দখলমুক্ত করতে জনমত গড়ে তুলতে হবে’</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2024/10/05/1432074" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ড. মির্জা হাসান বলেন, ‘২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রথমবারের মতো পুলিশ চেয়েছে দলীয়করণের বাইরে গিয়ে কাজ করতে। এই সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দিক ছিল। বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারদের হস্তক্ষেপ থেকে বের হওয়া, স্বাধীন কমিশন গঠন এবং রাজনৈতিক লেজুরবৃত্তি থেকে বের হওয়া। কিন্তু রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার অভাবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া বিসিএস অ্যাডমিনরা অসহযোগিতা করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আমি বলব, পুলিশ কর্মকর্তারা ভুল করেছেন। ক্ষমতার অধীনে নয়, বরং জনতার অধীনেই তাদের থাকতে হবে। ২০০৮-২০১০ সালেও এমন ৫টি পরিবর্তনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। কারণ এই সংস্কার ছিল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী।’</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও বিশিষ্ট আলোচকচিত্রী শহিদুল আলম।</p>