<p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ দিতে হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি। একইসঙ্গে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার জন্যও প্রকল্প থেকে অর্থ সংস্থান নিশ্চিত করতে চায় ইউজিসি। এই প্রস্তাবনার অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পাইলট প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ইউজিসিতে বিশ্ব ব্যাংকের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ। এসময় তিনি এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।</p> <p style="text-align:justify">তিনি জানান, আবাসিক হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পেতে এবং আবাসিক সংকটের কারণে ক্যাম্পাসের বাইরে ভাড়া বাসায় অবস্থান করা অসচ্ছ্বল মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক চাপ থেকে স্বস্তি দিতে বৃত্তির ব্যবস্থা প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে হিট প্রকল্প সংশোধন ও একটি যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।</p> <p style="text-align:justify">সভায় ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, হিট প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান, বিশ্ব ব্যাংকের লিড ইকোনোমিস্ট অ্যান্ড প্রোগ্রাম লিডার সৈয়দ আমির আহমেদ, সিনিয়র এডুকেশন স্পেশালিস্ট টিএম আসাদুজ্জামনসহ ইউজিসি, বিশ্ব ব্যাংক ও হিট প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ হিট প্রকল্প বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করা এবং প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন।</p> <p style="text-align:justify">প্রফেসর তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘এই প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের জীবনঘনিষ্ঠ বেশ কিছু কার্যক্রম রয়েছে, যেগুলো সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হলে তাদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ শিক্ষার্থীদের কল্যাণ হয় এমন প্রকল্প গ্রহণের জন্য তিনি বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।</p> <p style="text-align:justify">প্রফেসর আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘হলসমূহে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধার অভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া, আবাসিক সুবিধার স্বল্পতার কারণে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।’</p> <p style="text-align:justify">আগামী প্রজন্মের জন্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা, শিক্ষার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত এবং সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে গৃহীত প্রকল্পগুলো যেন শিক্ষার্থীবান্ধব হয় সেদিকে নজর রাখারও আহ্বান জানান তিনি। </p> <p style="text-align:justify">বিশ্ব ব্যাংকের লিড ইকোনোমিস্ট সৈয়দ আমির আহমেদ বলেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইন্টারনেট ও বৃত্তির বিষয়ে ইউজিসির প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে হিট প্রকল্প সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।</p> <p style="text-align:justify">সভায় হিট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর আসাদুজ্জামান সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন। </p> <p style="text-align:justify">দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন এবং রূপান্তরে ইউজিসি হিট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদার হবে।</p> <p style="text-align:justify">শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত পাঁচ বছর মেয়াদি হিট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫০ দশমিক ৯৬ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ বহন করবে বিশ্বব্যাংক।</p>