<p style="text-align:justify">শ্রমিক অসন্তোষ ও অস্থিরতার কারণে আগামী দুই মৌসুমে পোশাক রপ্তানির আদেশ ১০ থেকে ১৮ শতাংশ কমার আশঙ্কা করছেন শিল্প মালিকরা। চলমান সংকটকে সুবিধাভোগীগোষ্ঠীর ফায়দা হাসিলের পথ বলে মনে করছে বিজিএমইএ। তারা বলছে, এ সময়ে আগামী শীত মৌসুমের কার্যাদেশ পাওয়ার কথা। অস্থিরতা দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশ থেকে বিকল্প উৎসর কথাও ভাবতে পারে অনেক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ফরমায়েশি রায়নির্ভর ছিল দেশের বিচার বিভাগ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/23/1727066298-6046a443dbf5a715af69044902efb911.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ফরমায়েশি রায়নির্ভর ছিল দেশের বিচার বিভাগ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/09/23/1428100" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতনের পর শিল্পাঞ্চলে এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা অস্থিরতায় রপ্তানি আদেশ কমার আশঙ্কা করছেন তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। এদিকে হাজিরা বোনাস বৃদ্ধিসহ ১২ দফা দাবিতে গতকাল রবিবারও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন গাজীপুরের শ্রমিকরা।</p> <p style="text-align:justify">এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালক মো. আশিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ সময় (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) আগামী শীত মৌসুমের কার্যাদেশ পাওয়ার সময়। কিন্তু শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কারখানা বন্ধ রাখায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">এতে ক্রেতারা অনেকটা দ্বিধাদন্দ্বে পড়ছেন। ফলে বাংলাদেশ থেকে বিকল্প উৎসর কথাও ভাবতে পারেন তাঁরা। তবে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর আস্থাও তাঁদের রয়েছে।’ তাঁরা মনে করেন, এই সংকট কেটে যাবে।</p> <p style="text-align:justify">তবে শ্রমিক নেতারা মনে করেন, মালিকরা শ্রমিকদের ঠিক সময়ে বেতন-বোনাস দেওয়াসহ ন্যায্য দাবি পূরণ করলে শ্রমিক অসন্তোষ হতো না। তাই আন্দোলনের কারণে রপ্তানি আদেশ কমার দায়ও নেবেন না তাঁরা। এই প্রসঙ্গে পোশাকশিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, মালিক-শ্রমিকদের আস্থার অভাব বয়েছে। সেই সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে স্বাধীনভাবে কথা বলতে না পারায় শ্রমিকরা বর্তমানে তাঁদের ন্যায্য দাবি নিয়ে কথা বলছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে পারছে না বর্তমান সরকারও, অনৈতিক দাবির অভিযোগ!" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/23/1727065622-6f4054eefa37d9e39f33f06fe0d73c59.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে পারছে না বর্তমান সরকারও, অনৈতিক দাবির অভিযোগ!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/23/1428098" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘ওভারটাইম মজুরিটা আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে দিতে হবে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে সেটা দিতে হবে। এটা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের যে টিফিন বিল দেওয়া হচ্ছে তা খুবই অপ্রতুল।’ </p> <p style="text-align:justify">বিজিএমইএ বলছে, চলমান পরিস্থিতির কারণ শ্রমিক অসন্তোষ নয়, বরং স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়ে এ শিল্প ধ্বংসের পাঁয়তারার অভিযোগ তাদের। সংকট সমাধান না হলে পাশের দেশে ক্রয়াদেশ চলে যাওয়ার শঙ্কায় তারা।   </p> <p style="text-align:justify">বিজিএমইএর সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘যে অর্ডারটা এর মধ্যে হতে পারত, সে অর্ডার ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারছি যে আগামী তিন মাসের অর্ডার কিছুটা হলেও কমে গেছে বা চলে যাচ্ছে।’</p> <p style="text-align:justify">দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশের জোগানদাতা এবং ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের এই খাতের আড়াই হাজার কারখানা বিজিএমইএর সদস্য। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ নিটওয়্যার ও সোয়েটার এবং বাকি ৬০ শতাংশই ওভেন খাতের।</p> <p style="text-align:justify">পোশাকশিল্পের এই অস্থিরতায় এরই মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সম্ভাব্য ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম উপদেষ্টা। সম্প্রতি তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, কয়েকটি দেশ এই সুযোগ ব্যবহার করে ক্রেতাগোষ্ঠীকে টানার চেষ্টা করছে।</p> <p style="text-align:justify">শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা কারণে গত এক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক শিল্প-কারখানায় ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে দুই শতাধিক কারখানায় উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। ফলে শিল্পের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই)।</p> <p style="text-align:justify">শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও অসন্তোষ কমেনি, বরং বিভিন্ন ধরনের অযৌক্তিক দাবি তুলে কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালিকরা। প্রথমে মজুরি ও হাজিরা বোনাস বৃদ্ধির দাবিতে মাঠে নামেন শ্রমিকরা। পরে তাঁরা চাকরির ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতার দাবি জানান। পাশাপাশি তাঁরা বেকারদের জন্য চাকরি ও কর্মচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি তোলেন।</p> <p style="text-align:justify">শ্রমিক নেতা ও মালিকপক্ষ তাঁদের সব দাবি যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেছে। তারা মনে করছে, যে ধরনের দাবি উত্থাপন করা হচ্ছে তা সব পূরণযোগ্য নয়। কোনো ক্ষেত্রে অযৌক্তিকও।</p> <p style="text-align:justify">বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মাদ হাতেম বলেন, ‘চলমান শ্রমিক অসন্তোষ থামাতে না পারলে আমরা যথাসময়ে পণ্য রপ্তানি করতে পারব না। অন্যদিকে এ অবস্থা চলমান থাকলে বৈশ্বিক ক্রেতারা আমাদের ওপর আস্থা হারাবে। ফলে আগামী সিজনের জন্য যে পরিমাণ কার্যাদেশ প্রয়োজন তা পেতে আমরা ব্যর্থ হবো।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘এতে একদিকে যেমন মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, অন্যদিকে শ্রমিকরা চাকরিঝুঁকিতে পড়বেন। কারণ পর্যাপ্ত কার্যাদেশ না থাকলে আমরা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে পারব না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখতে হতে পারে।’</p> <p style="text-align:justify">সাধারণত শ্রমিকদের দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়নগুলো নেতৃত্ব দেয়। কিন্তু চলমান বিক্ষোভে শ্রমিক সংগঠনের নেতারা যুক্ত নন, বরং তাঁরা এটা অযৌক্তিক আন্দোলন বলছেন। মালিক ও শ্রমিক নেতারা এ আন্দোলনের পেছনে আধিপত্য বিস্তার ও ব্যবসা দখলের অপচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তাঁদের দাবি, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং এক ধরনের অশ্রমিক স্থানীয় লোকজন শ্রমিকদের উসকে দিয়ে তাদের নিজস্ব উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য ব্যবহার করছে।</p>