<p>আলেমদের নেতৃত্বাধীন বা ইসলামী ধারার সেবা সংস্থাগুলোর ভেতর ত্রাণ তপরতায় সবার শীর্ষে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। অতীতের মতো এবারও বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলে সংস্থাটির কার্যক্রম সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। </p> <p>তারা মূলত তিন স্তরবিশিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রথমে তারা প্লাবিত অঞ্চলে হালকা শুকনা খাবার বিতরণ করেছে, যা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় স্তরে ভারী খাবার (যা রান্না করে খেতে হয়) বিতরণ করেছে, যা এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। </p> <p>এ ছাড়া বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পুনর্বাসন ও কর্মস্থানের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। দুর্গম অঞ্চলে ত্রাণ ও সহযোগিতা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতাও নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি দুর্গত এলাকায় পশুখাদ্য বিতরণ এবং জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল চার্জের ব্যবস্থাও করেছে।</p> <p>আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আলহামদু লিল্লাহ! ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা শুরু হওয়ার পর আমরা অতি দ্রুত দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মীরা বন্যা প্লাবিত অঞ্চলের দুর্গম এলাকাগুলো পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ২০ হাজার পরিবারকে শুকনা খাবার বিতরণ করেছি। দ্বিতীয় ধাপে ৭০ হাজার পরিবারের মধ্যে ভারী খাবার বিতরণ করছি। পানি শুকানোর পর আরো ৭০ হাজার পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। বন্যার পানিতে যাদের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—এমন পাঁচ হাজার পরিবারকে চার বান্ডেল টিন ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে—এমন অসহায় পরিবারগুলোর উপার্জনের ব্যবস্থা করব, ইনশাআল্লাহ। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মধ্যে যারা সহায়-সম্বল হারিয়েছে, তাদের সহায়তা দিয়ে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করব। তবে ত্রাণ কার্যক্রমের আর্থিক মূল্য ১০০ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।’</p> <p>২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ইসলামী সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে গণমানুষের বিপুল ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করেছে। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এর মধ্যে আছে সাধারণ মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়, তেমনি আকিজ গ্রুপ, ভিভো বাংলাদেশ ও স্টেটফাস্টের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা। </p> <p>অর্থ সহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বহু মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে আস-সুন্নাহকে সহযোগিতা করছে। এমনকি বরিশাল শহরের একটি দুর্গা মন্দিরের তহবিল থেকে অর্থ দান করা হয়েছে আস-সুন্নাহর ত্রাণ তহবিলে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনও ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। </p> <p>আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের অফিশিয়াল পেজে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কুমিল্লার লাকসামের জ্যোতিপাল মহাথেরো বৌদ্ধ আশ্রমে উপহার পৌঁছে দিয়েছে ফাউন্ডেশনের একটি গাড়ি।</p>