<p style="text-align:justify">আট বছর আগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে হট্টগোল ও সংশ্লিষ্ট বিচারপতিকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে কয়েকজন আইনজীবী এ ঘটনা ঘটান। তারা বিএনপিপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্যে শিক্ষার্থীরা, ৪ দফা দাবি ঘোষণা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/28/1732770970-161fae19423df2f4fe2381be1058d00f.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্যে শিক্ষার্থীরা, ৪ দফা দাবি ঘোষণা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/28/1451530" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন আইনজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, দুপুরে বেঞ্চটিতে বিচারকাজ চলছিল। তখন কয়েকজন আইনজীবী দল বেঁধে এজলাসকক্ষে ঢুকে ডায়াসের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। তাদের একজন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘একজন বিচারপতি হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে রায়ে রাজনৈতিক ভাষায় বিরূপ মন্তব্য করেছেন। পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে আপনি এমনটা করেছেন। ফলে আপনার শপথ ভঙ্গ হয়েছে। আপনি এখনো একই চিন্তা-ভাবনা পোষণ করলে আপনার বিচারকাজ পরিচালনার অধিকার নেই।’ </p> <p style="text-align:justify">তখন আরেকজন আইনজীবী বিচারপতি আশরাফুল কামালকে এজলাস থেকে নেমে যেতে বলেন। আর পেছন থেকে একজন ডিম ছুড়ে মারেন, যদিও তা বিচারপতির গায়ে লাগেনি। এর পরই হট্টগোল শুরু হলে দুই বিচারপতি এজলাস ত্যাগ করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মুরগির খামার থেকে বছরে আসছে হাজার কোটি টাকা!" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/28/1732770674-90aea096449506e8e9b84dba67d4c97b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মুরগির খামার থেকে বছরে আসছে হাজার কোটি টাকা!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2024/11/28/1451529" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে ফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন অবগত কি না জানতে রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞাকে ফোন করলে তিনিও ফোন ধরেননি।</p> <p style="text-align:justify">সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব সংসদে পাস হয়, যা ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিত। পরে সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন আইনজীবীর রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৫ মে এই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন।</p> <p style="text-align:justify">বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সিরিয়ার আলেপ্পোতে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ, নিহত ১০০" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/28/1732770322-d99119ca42e35bfa7fbc7fba9ab1d88a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সিরিয়ার আলেপ্পোতে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ, নিহত ১০০</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/28/1451527" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি আশরাফুল কামাল বলেন, ‘মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাকবাকুম করে ক্ষমতা নিয়ে নিলেন তথা রাষ্ট্রপতির পদ দখল করলেন। একবারও ভাবলেন না, তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। সরকারি কর্মচারী হয়ে কিভাবে তিনি আর্মি রুলস ভঙ্গ করেন। ভাবলেন না তার শপথের কথা। ভাবলেন না, তিনি দেশকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে মৃত্যুকে বরণ করার শপথ নিয়েছিলেন। ভাবলেন না, তিনি এবং তারা ব্যর্থ হয়েছিলেন দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে রক্ষা করতে। ভাবলেন না, তিনি এবং তারা ব্যর্থ হয়েছেন জাতীয় চার নেতাকে রক্ষা করতে। জনগণ আশ্চর্য হয়ে দেখল, জিয়াউর রহমান দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের দোসর হয়ে তাদের রক্তাক্ত হাতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করলেন। যাকে এককথায় বলা যায়, বন্দুক ঠেকিয়ে জনগণের প্রতিষ্ঠান দখল।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সিরিয়ার আলেপ্পোতে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ, নিহত ১০০" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/28/1732770322-d99119ca42e35bfa7fbc7fba9ab1d88a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সিরিয়ার আলেপ্পোতে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ, নিহত ১০০</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/28/1451527" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">পর্যবেক্ষণে বিচারপতি আশরাফুল কামাল বলেন, ‘আমরা জানি, ডাকাতরা সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করে। ডাকাতদের নেতৃত্বদানকারীকে ডাকাত সর্দার বলে। ডাকাতির সময় ডাকাতরা বাড়ি বা ঘরটি কিছু সময়ের জন্য অস্ত্রের মুখে দখল ও মূল্যবান দ্রব্যাদি লুণ্ঠন করে। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান গং দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও অস্ত্র এবং অবৈধ কলমের খোঁচায় নির্বাচিত জাতীয় সংসদ ভেঙে ডাকাতদের মতো অবৈধভাবে জোরপূর্বক জনগণের ক্ষমতা দখল করেন।</p> <p style="text-align:justify">যে বিচার বিভাগ এবং এর বিচারকদের ওপর আইনগত দায়িত্ব ছিল সংবিধানের সামান্যতম বিচ্যুতিকে রক্ষা করা, সংরক্ষণ করা এবং নিরাপত্তা দেওয়া; সেই বিচার বিভাগ এবং এর তৎকালীন বিচারকরা সংবিধানকে এককথায় হত্যা করলেন, জনগণের রায় ডাকাতি করে জনগণের নির্বাচিত সংসদকে বাতিল করলেন।</p> <p style="text-align:justify">অন্যদিকে জিয়াউর রহমান একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও আর্মি রুলস ভঙ্গ করে, জনগণের রায়ে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ ও দেশের সংবিধানকে হত্যা করে অস্ত্রের মুখে অন্যায়ভাবে, অসত্ভাবে হত্যাকারীদের দোসর হয়ে জনগণকে চরম অবজ্ঞা করে ক্ষমতা দখল করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তথা স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও জামায়াতে ইসলামীকে এ দেশে পুনর্বাসন করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সমন পেয়ে আদালতে সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/28/1732769107-c287d9a4c69a28c54d0acb8353c7d9cf.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সমন পেয়ে আদালতে সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/11/28/1451524" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তাদের রাজনীতি করার অধিকার দেন। নাগরিকত্ব দেন। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী এবং মানবতাবিরোধী অপরাধীদের এমপি করেন এবং তাদের মন্ত্রী বানিয়ে গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভমের সঙ্গে বেঈমানি করেন। এর পরও কি বাংলাদেশের জনগণ জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা বলতে পারে?’</p> <p style="text-align:justify">পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, জিয়াউর রহমান শুধু জাতির পিতা ও তার পরিবারের এবং জাতীয় চার নেতা হত্যাকারীদের দোসরই হননি, হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছেন রাষ্ট্রদূত, এমপি ইত্যাদি বানিয়ে। তিনি আরো জঘন্য যে কাজটি করেছেন, তা হলো, জনগণের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের হত্যার বিচার বন্ধ করে দায়মুক্তি আইন প্রণয়ন করেন।</p> <p style="text-align:justify">অর্থাৎ তিনি এই দায়মুক্তি আইন দ্বারা সমর্থন দিয়ে প্রমাণ করেন, তিনিও জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারী এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদেরই একজন।</p>