<p>ব্যক্তি করদাতাদের রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় এক মাস বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন করদাতারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এ বছর ৩০ জুনের আগে যাঁরা টিআইএন গ্রহণ করেছেন, তাঁদের আয়কর রিটার্ন দিতে হবে। এবার ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার সুবিধা চালু হয়েছে। যাঁদের মোট পরিসম্পদ ৫০ লাখ টাকার কম এবং আয় ৫ লাখ টাকার নিচে, তাঁরা এক পাতার ফরম পূরণ করেই রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।</p> <p><strong>করমুক্ত আয়সীমা</strong></p> <p>ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা নির্ধারিত হয়েছে ভিন্নভাবে। পুরুষ করদাতাদের ক্ষেত্রে এই সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নারীদের বা ৬৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতাদের জন্য ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫ লাখ টাকা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের জন্য এই করমুক্ত সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বাড়ানো হবে। যদি পিতা-মাতা দুজনেই করদাতা হন, তবে এই সুবিধা যেকোনো একজন নিতে পারবেন।</p> <p>কোনো ব্যক্তির আয় নির্ধারিত করমুক্ত সীমার নিচে হলে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে, তবে কর দিতে হবে না। তবে আয়ের পরিমাণ যদি নির্ধারিত সীমার চেয়ে মাত্র ১ টাকা বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তাঁকে ন্যূনতম আয়কর প্রদান করতে হবে।</p> <p><strong>ন্যূনতম আয়কর</strong></p> <p>এ বছর নিয়মিত আয়ের ওপর ন্যূনতম আয়কর ছাড়াও ৪০টি খাতের আয়ের ওপর ন্যূনতম আয়কর ধার্য করা হয়েছে। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী আমানত ও স্থায়ী আমানত, লভ্যাংশ, শ্রমিক কল্যাণ তহবিল, লটারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিয়মিত আয়ের পরের স্লাব থেকে কর গণনা করতে হবে। ওই খাতের উৎসে কর অন্য খাতের আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে না। যদি ন্যূনতম খাতের আয়কর কম হয়, তবে অতিরিক্ত কর প্রদান করতে হবে। সঞ্চয়পত্রের ওপর উৎসে কর চূড়ান্ত করদায় অর্থাৎ সঞ্চপত্রের সুদ খাতে অতিরিক্ত কোনো কর দিতে হবে না।</p> <p>ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার পাঁচ হাজার টাকা এবং অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার চার হাজার টাকা। সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতাকে ন্যূনতম কর হিসেবে তিন হাজার টাকা প্রদান করতে হবে।</p> <p>একজন সাধারণ করদাতার কর রেয়াতের জন্য তিনটি বিষয় বিবেচিত হবে। মোট নিয়মিত করযোগ্য আয়ের ৩ শতাংশ (কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত কর হারের আয় ব্যতীত); বা প্রকৃত অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ; অথবা ১০ লাখ টাকা; এই তিনটির মধ্যে যেটি কম।</p> <p>করদাতার মোট পরিসম্পদ যদি চার কোটি টাকার বেশি বা একের অধিক মোটরগাড়ি বা আট হাজার বর্গফুটের অধিক আয়তনের গৃহসম্পত্তি থাকে, তাঁকে ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সারচার্জ প্রদান করতে হবে।</p> <p><strong>আয়করের বর্তমান হার</strong></p> <p>প্রথম ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর শূন্য, পরবর্তী ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ২০ শতাংশ, অবশিষ্ট মোট আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ।</p>