<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুহিবুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাঁর ব্যাপক অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণে পরিষদের সদস্যসহ ইউনিয়নবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে ভাগ্য বদলে হয়ে যান কোটি টাকার মালিক। এমনকি এলাকার সেবাগ্রহীতা নাগরিকদেরও বিভিন্ন সময়ে লাঞ্ছিত, অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও বাদ পড়েনি তাঁর হাত থেকে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুসন্ধান করে জানা গেছে, স্থানীয় রবিরবাজারে স্টেপ ওয়ান ফ্যাশন এবং স্টেপ ওয়ান টেলিকম নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল চেয়ারম্যানের বন্ধু নজরুল ইসলাম কয়েছের। সেখানে যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতেন আজাদ ও তাঁর বন্ধু কয়েছ। ওই দোকানে আজাদ মোবাইল অপারেটরের কাজ করতেন। ওই সময় আজাদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা তেমন উন্নত ছিল না। কিন্তু গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে ভাগ্য বদলে যায় আজাদের। ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ অভিযোগ করে বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করে চেয়ারম্যান আজাদ এখন সিনেমার নায়কের মতো দামি গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করেন। বছর দেড়েক আগে প্রায় ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে নিশান ঝুঁকি ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি কিনেন চেয়ারম্যান আজাদ। এ ছাড়া নিজের ছেলের শখ পূরণের জন্য সম্প্রতি দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান হওয়ার আগে তাঁর যে জরাজীর্ণ থাকার ঘর ছিল সেটি এখন আলিশান বাড়িতে রূপান্তর করেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে গত ৪ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান আজাদের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে চেয়ারম্যান আজাদের পদত্যাগ ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে তারা চেয়ারম্যানের কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রাখে। ওই দিন বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাঁর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপিও পেশ করা হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবর পরিষদের ১০ জন সদস্য একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগ হলো- জন্ম নিবন্ধনের অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে টাকা আত্মসাৎ, ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, গভীর নলকূপ বরাদ্দে অনিয়মসহ অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দায়িত্ব পালনকালে আমি কোন ঘুষ খাইনি, চুল পরিমাণ কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি করিনি। যদি কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে স্বেচ্ছায় চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দামি গাড়ি কেনা ও বাড়ি তৈরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় গাড়িটি ক্রয় ও পারিবারিক আয়ের টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরি করেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গৃহকরের টাকা আত্মসাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবছর ইউনিয়নে মাত্র সাড়ে ছয় থেকে সাত লাখ টাকা আদায় হয়। সেই টাকা পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সম্মানীসহ উন্নয়ন খাতে ব্যয় হয়। জন্ম সনদের ফি আত্মসাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জন্ম সনদের টাকা আদায় করা আমার দায়িত্ব নয়। সেটি সচিবের দায়িত্ব। তৎকালীন সচিবের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক ভালো না থাকায় ইউনিয়নের সার্বিক বিষয় ও জনগণকে কন্ট্রোল করার জন্য আমার বন্ধু কয়েছকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span>  </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span></span></span></span></p>