<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৭ বছরের কিশোর মোহাম্মদ আকাশ। পরিবারের আর্থিক অনটনে লেখাপড়া বেশি দূর এগোয়নি। কৃষক বাবার সংসারে আর্থিক অনটন মেটাতে কাজ নেয় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিষ্টির দোকানে। মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পাসপোর্ট করেছিল আকাশ। কিন্তু পুলিশের একটি গুলি সব স্বপ্ন শেষ করে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু করে দেয় আকাশকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২০ জুলাই গুলিবিদ্ধ হওয়ায় বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়েছে আকাশের। চিকিৎসার জন্য ঋণ করে চার লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বিয়াশি গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আকাশ। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় আকাশ। বাবা দিনমজুর দুলাল মিয়ার বাড়ির জায়গা আর একটা ঘর ছাড়া কোনো জমিজমা নেই। জেএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করে সে। দুই বছর আগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিষ্টির দোকানে সেলসম্যানের কাজ নেয়। এতেই সংসারের অভাব ঘুচে যাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশের গুলিতে সব স্বপ্ন শেষ তার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, ২০ জুলাই সকাল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছিল। জীবন বাঁচাতে দোকানের শাটার টেনে থাই গ্লাসের দরজা বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান করে দোকানের মালিক জাফর আলী, কর্মচারী মাসুম ও আকাশ। এক পর্যায়ে দোকানে কয়েক রাউন্ড গুলি করে পুলিশ। এতে দোকানের উত্তর পাশের গ্লাস ভেঙে যায়। গুলিতে আহত হন দোকানের মালিক জাফর আলী। পরে দোকানের সামনের শাটার ও থাই গ্লাস ভেঙে ভেতরে ঢুকে খুব কাছ থেকে আকাশের বাঁ হাঁটুতে গুলি করে পুলিশ। পুলিশ চলে যাওয়ার পর জাফর আলীকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর আকাশকে ঢাকার শ্যামলী এলাকায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার তিন দিন চিকিৎসা চলে। কিন্তু অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চার দিন পর আকাশের বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মোহাম্মদ আকাশ জানায়, মা-বাবা এলাকা থেকে ঋণ করে টাকা এনে চিকিৎসা করাচ্ছেন। দুঃখ হলো, কেউ কোনো খবরও নিতে এলো না। বেসরকারি একটা সংস্থা থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা পাওয়া গেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আকাশের বাবা দুলাল মিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাটা পা নিয়ে ছেলেটা গ্রামের বাড়িতে শুয়ে রয়েছে। চার লাখ টাকা ধারদেনা করে সুদে এনে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু এই আড়াই মাসে কেউ খবরও নেয়নি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>