<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। উত্তরাধিকার সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দাদার কাছ থেকে ১৮৯০ সালের দিকে সেই জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব পান। এরপর ১৮৯২ সালে একটি ভবন নির্মাণ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহের জমিদারি পরিচালনা করতেন এবং খাজনা গ্রহণ করতেন। সেই ভবনটিই কাছারিবাড়ি বলে পরিচিত। বয়সের ভারে জীর্ণ এবং ঝোপজঙ্গলে ঘেরা রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির নিকটবর্তী পদ্মাপারের সেই পরিত্যক্ত কাছারিবাড়িটিতে বহু বছর পর প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। সংস্কার করার পর কাছারিবাড়িটি নতুন রূপে ফিরেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে, শিলাইদহ ইউনিয়নের কশবা গ্রামের এই কাছারিবাড়িতে বসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯০ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারি পরিচালনা করেছেন। শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি থেকে কিছু দূর এগিয়ে গেলে সড়কের ডান পাশে পদ্মা নদীর অতি নিকটে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত এই কাছারিবাড়িটি অবস্থিত। ১৩২ বছরের পুরনো এই কাছারিবাড়িটি অতি সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সংস্কার করা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে কাছারিবাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণমুখী করে নির্মিত দোতলা লালচে রঙের এই স্থাপনাটির দেয়ালসহ দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট এবং প্রস্থ ২৫ মিটার। স্থাপনার দেয়ালগুলো তিন ফুট চওড়া করে গাঁথুনি দেওয়া। এটির নিচতলায় চারটি কক্ষ এবং সামনে লম্বা একটি বারান্দা রয়েছে। নিচতলার কক্ষগুলোতে ১২টি দরজা এবং দোতলার কক্ষগুলোতে ১৩টি দরজা রয়েছে। নিচতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় ওঠার জন্য পশ্চিম পাশের বাইরের দেয়ালের সঙ্গে একটি সিঁড়ি রয়েছে। দ্বিতীয় তলাটি প্রায় নিচতলার আদলে নির্মিত। তবে দ্বিতীয় তলার সামনের বারান্দাটি ছাদবিহীন। এই বারান্দাটির সামনে স্বল্প উচ্চতার প্রাচীর রয়েছে। বিশিষ্টজনরা জানান, ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই কাছারিবাড়ির নির্মাণসামগ্রী হিসেবে পোড়া মাটি, ইট, চুন, বালু, লোহা ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। বাড়ির সামনে বিস্তীর্ণ মাঠ এবং বাড়ির উঠানের বাঁ পাশে এখনো শতবর্ষী কয়েকটি আমগাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিলাইদহ কুঠিবাড়ির কাস্টডিয়ান আল আমীন জানান, পরিত্যক্ত কাছারিবাড়িটি ২০১৮ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের মে মাস থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটি সংস্কারের কাজ শুরু করে চলতি বছরের জুনে মোটামুটিভাবে সমাপ্ত করে। পুরো সংস্কার কাজ সমাপ্ত হলে দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন তারেক জানান, রবীন্দ্র যুগের এই কাছারিবাড়িটি যুগের পর যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। বর্তমানে নতুন করে বাড়িটি সংস্কার করায় বাড়িটি দেখার জন্য এখন দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছে।</span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>