<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকার জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১৬ লাখ। ৫০ বছর পর এখন তা প্রায় দুই-আড়াই কোটিতে পরিণত হয়েছে। একদিকে উন্নত জীবনের আশা, অন্যদিকে নদীভাঙন, খরা, মঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে বসতি হারিয়ে প্রতিনিয়ত গ্রামীণ এলাকার মানুষ ঢাকা শহরে অভিবাসী হচ্ছে। ফলে তৈরি হচ্ছে ঘিঞ্জি দালানকোঠা। বাড়ছে ভিড়, শব্দদূষণ, যানজট, বায়ুদূষণ, মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণসহ নানাবিধ সমস্যা। বাসযোগ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের নিশ্চয়তার ব্যবস্থা সরকারের থাকলেও বিভিন্ন সময় সরকার সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী আবাসনের ব্যবস্থা যেমন করতে পারেনি; একইভাবে বস্তিবাসীর জন্যও দিতে পারেনি বসতির নিশ্চয়তা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন অবস্থায় আজ সোমবার দেশে পালিত হবে বিশ্ব বসতি দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তরুণদের সম্পৃক্ত করি, উন্নত নগর গড়ি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। বাসযোগ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ব বসতি দিবস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ১৯৮৬ সাল থেকে সারা বিশ্বে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব বসতি দিবস পালিত হয়ে আসছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার জনঘনত্বকে উপযুক্ত উপায়ে কাজে লাগিয়ে টেকসই ও বাসযোগ্য নগর গড়া সম্ভব, যার মাধ্যমে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দিক দিয়ে লাভবান হতে পারে পুরো জাতি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানুষ হরেক রকম চিন্তা থেকে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে ঢুকছে। কেউ শিক্ষা অর্জনের জন্য একবার রাজধানীতে প্রবেশ করলে তিনি কিন্তু আর শহর ছেড়ে যাচ্ছেন না, গেলেও সেটি একেবারেই কম। আবার কাজের খোঁজে আসা ব্যক্তিরাও ধীরে ধীরে কর্মের সন্ধান মিললে পরিবার নিয়ে আসছেন। এভাবেই জনসংখ্যা বাড়ছে। তবে সে অনুযায়ী আমাদের শহরের ধারণ ক্ষমতা তো বাড়ছে না। তবে জনঘনত্বকে উপযুক্ত উপায়ে কাজে লাগিয়ে টেকসই ও বাসযোগ্য নগর গড়া সম্ভব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত শহর ঢাকা বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম শহর। এখানে দুই কোটি ৩২ লাখ মানুষ বাস করে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ২০১৮ সালেও ঢাকা ছিল এই তালিকার ৭ নম্বরে। ছয় বছরের ব্যবধানে এখন ৪ নম্বরে চলে এসেছে। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩ শতাংশেরও বেশি। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ঢাকামুখী হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার অবস্থান হবে তৃতীয়। নগরায়ণ পরিকল্পনায় কেবল ঢাকাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলা শহর এবং বাজারকেন্দ্রিক মফস্বল শহর রয়েছে। নগরে বসবাসের সুযোগ তৈরি, অর্থায়ন, নগর দারিদ্র্য, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের কর্মসংস্থান, এসব বিষয় নগরায়ণের শর্ত। এসব দিকে দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাশ্রয়ী আবাসন এখন সময়ের দাবি। এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে। সরকারের সদিচ্ছাই পারে আবাসন সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে। আর এ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের হতে হবে যথেষ্ট সংবেদনশীল। সবার জন্য বসতি নিশ্চিত করলে তবেই একটি সাম্যময় সমাজ তৈরি হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, ঢাকা শহরে মোট তিন হাজার ৩৯৪টি বস্তি রয়েছে। এসব বস্তিতে মোট ঘরের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজারের মতো। বস্তিবাসীর মধ্যে বেশির ভাগই পোশাক শ্রমিক, গৃহকর্মী, দিনমজুর, রিকশাচালক এবং খুচরা ব্যবসায়ী। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভিন্ন সময় সরকার বস্তিবাসীর জন্য বিভিন্ন পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। সরকার বস্তি উচ্ছেদ করে বস্তিবাসীর জন্য নতুন বাসস্থান নির্মাণ করে। সরকার বস্তিবাসীর আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, যাতে তারা নতুন বাসস্থান কিনতে বা ভাড়া নিতে পারে। এর পরও বস্তিবাসীর আবাসন সংকটের কোনো সুরাহা এ পর্যন্ত হয়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বসতির ক্ষেত্রে দেশের সার্বিক অবস্থাও প্রায় একই রকম। বসতবাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যানব্যুরোর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মাটি/বালি/কাদা দিয়ে তৈরি (ঘরের মেঝের হিসাবে) বসতবাড়ি রয়েছে ৪৯.২২ শতাংশ, টিনের ঘর রয়েছে ৩.২৪ শতাংশ (বসতঘরের দেয়ালের নির্মাণ উপকরণের হিসাবে), পাকা বাড়ি রয়েছে ২০.৯১ শতাংশ (বসতঘরের ছাদ নির্মাণের হিসাবে)।</span></span></span></span></p> <p> </p>