<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরকারের নানা উদ্যোগের পরও পোশাক খাতের শ্রম অসন্তোষ ও অস্থিরতা কাটছে না। দফায় দফায় মালিক, শ্রমিক ও সরকার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার পরও শ্রম অসন্তোষ পুরোপুরি কাটানো সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্য মূল্যে শ্রমিকদের নিত্যপ্রয়োজনীর পণ্য দেওয়া হচ্ছে। তার পরও পোশাক শিল্পাঞ্চলে শ্রম অসন্তোষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য ধাপে ধাপে পরিকল্পিতভাবে এই অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। এর পেছনে আওয়ামী লীগের উসকানি. ঝুট সন্ত্রাস, ভারতের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতা এবং মালিকদের পেটোয়া বাহিনীর যোগসূত্র থাকতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী ১৫ থেকে ২০ জন পোশাক শিল্পের মালিককে কঠোর নজরদারিতে আনা গেলে এই শ্রম অসন্তোষ থামানো সম্ভব বলে মনে করছেন তারা। তাদের মতে, শ্রম অসন্তোষে পেছন থেকে কমবেশি ৫০ জন মালিক ইন্ধন দিচ্ছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শ্রমিক নেতারা জানান, ৯৫ শতাংশ কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ঘটে বকেয়া বেতনের জন্য। তবে এখন প্রায় পাঁচ হাজার কারখানার মধ্যে মাত্র কয়েকটিতে বকেয়া রয়েছে। এমন বকেয়া আগেও ছিল। এবার রাজনৈতিক পটপরির্বতনের সুযোগ নিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কিছু অতি উৎসাহী শ্রমিক উদ্ভট সব দাবি করে প্রথমে কারখানার চাকা বন্ধ করে। পরে তাদের রাস্তায় নামিয়ে দেয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে বিজিএমইএর তথ্য অনুসারে, গতকালও মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন দুই কারখানার শ্রমিকরা। গাজীপুর মহানগরীর জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকার দুটি কারখানার শ্রমিকরা এক মাসের বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শ্রমিকরা জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে পোশাক ও সিরামিক কারখানায় ৪১ হাজার কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে আরএমজি কারখানার শ্রমিকরা সপ্তাহখানেক ধরেই সড়ক অবরোধ করে গত মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানাচ্ছেন। অন্যদিকে জিরানী ডরিন ফ্যাক্টরির ১৩ জন স্টাফ ছাঁটাই ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল সকাল থেকে একই মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন ওই কারখানার শ্রমিকরা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে মূলস্ফীতি আর মজুরি বকেয়ার ফলে শ্রমিকদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। মজুরি না পেলে প্রথমে তারা বাড়িওয়ালার রোষানলে পড়েন। পরে মুদি দোকানের মাসিক বকেয়া নিয়ে অসম্মানের শিকার হতে হয়। এর ফলে বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের মাঠে নামতে হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চলমান শ্রমিক অসন্তোষে বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানাসহ অন্য কয়েকটি কারখানার অসন্তোষ পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি নাজমা আক্তার। তিনি বলেন, চলমান শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্ট, রাজনৈতিক। বেশির ভাগ কারখানার মালিক আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এই অসন্তোষ।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কয়েকটি কারখানার বকেয়া থাকতে পারে। এটাকে পুঁজি করে আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ী। এমন ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হবে না। এদের ১৫ থেকে ২০ জনকে কঠোর নজরদারিতে আনা গেলে এই সংকট শিগগিরই থেমে যাবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পোশাক খাত নিয়ে কয়েকজন শ্রমিক নেতা উদ্বেগ প্রকাশ করে কালের কণ্ঠকে জানান, ক্ষমতার পালাবদলের পর পোশাক কারখানায় কাজ কমছে। ক্রেতারা এখন কার্যাদেশ কমিয়ে দিয়েছে। এর সুযোগ নিচ্ছে প্রতিযোগী দেশ। তাদের রপ্তানি আয় বাড়ছে। ভারত সরকার নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে পোশাক খাতকে উৎসাহিত করছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে বিজিএমইএর সাবেক এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে আন্তরিক নয় বিজিএমইএ সহায়ক কমিটি। সরকার সম্প্রতি বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ করে। প্রশাসককে সহায়তার জন্য সহায়ক কমিটিও করা হয়। কিন্তু সেই কমিটিও কার্যকর ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ রয়েছে বিজিএমইএ সদস্যদের।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নিট পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরকার পতনের পর তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করে। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। এর সঙ্গে বকেয়া বেতন, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও বিদেশি ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে কিছু কারখানা মালিকের অনুপস্থিতিও শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। এই পরিস্থিতিতে ১০-১৫ শতাংশ ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে। কয়েকটি দেশ এই সুযোগ ব্যবহার করে ক্রেতাগোষ্ঠী টানার চেষ্টা করছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">টাকার সংকটে বেক্সিমকোর ২৪ কারখানা বন্ধ, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ অনিশ্চিত</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একসময়ের দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে। এই সংকটের কারণে শাইনপুকুর সিরামিকস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির বন্ধ কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪টিতে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত আগস্ট থেকে বেক্সিমকোর কারখানাগুলো কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলতে না পারায় উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। গাজীপুরের চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে শ্রমিকদের টানা পাঁচ দিনের অবরোধের পর এই সংকট আরো প্রকট হয়ে ওঠে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>