<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। মৃত্যুর হারও আশঙ্কাজনক। গত আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রোগী বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। এতে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর জায়গা হচ্ছে না। শয্যা না থাকায় হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে ঠাঁই নিতে হয়েছে বাড়তি রোগীদের। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পুরুষ ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মেঝে ও করিডর রোগীতে ঠাসা। মেঝেতে পা ফেলা দায়। কোনো জায়গা নেই। ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত একজন নার্স জানান, ২০ শয্যার এই ওয়ার্ডে বর্তমানে ভর্তি আছে ৬২ জন। শয্যার বিপরীতে এই সংখ্যা তিন গুণের বেশি। রোগী সামাল দিতে তাঁদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শয্যা ফাঁকা নেই মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর এই তিন হাসপাতালে ভর্তি রোগী, স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ রোগী ঢাকার বাসিন্দা হলেও বাইরে থেকে আসা ২০ শতাংশের বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে এসব হাসপাতালে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর শয্যায় ভর্তি মো. আশিক কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি এসেছেন নরসিংদী থেকে। রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার সঙ্গে রক্তক্ষরণ হওয়ায় নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একই ওয়ার্ডে আশিকের মতো বাইরে থেকে আসা রোগী ভর্তি অন্তত ১৫ জন। তারা নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরিশাল, ভোলা, মানিকগঞ্জ, হবিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও টাঙ্গাইল থেকে এসেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসাসেবা বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি বলে মনে করছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, ঢাকা শহরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় সব রোগী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসছে চিকিৎসার জন্য। মাধ্যমিক হাসপাতাল বা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থা থাকলে এর কয়েক গুণ বেশি রোগীর সেবা দেওয়া যেত। মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক কমানো যেত। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর চার সরকারি হাসপাতালে প্রচণ্ড চাপ</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালকে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এসব হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রোগী ৯৭৬ জন। এর মধ্যে ৪৯৯ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে চার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ৩০ হাজার ৯৩৮ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে ঢাকায় ১৩ হাজার ৫০৮ ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয় ১৭ হাজার ৪৩০ জন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর নির্ধারিত সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে আট হাজার ২৩৯ ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে শুধু চারটি হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছে মোট চার হাজার ৯৩৪ রোগী, যা ঢাকার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর ৬০ শতাংশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সরকারি এই বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে গতকাল পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ১৬০ ডেঙ্গু রোগী। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক হাজার ৫০০ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৮৩১ জন ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে ৪৪৩ জন ভর্তি হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূলত স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা মেলায় সরকারি হাসপাতালগুলোয় বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সত্যজিৎ সাহা বলেন, জ্বর, শরীর ব্যথা বা মাথা ব্যথা, পেটের সমস্যা নিয়ে রোগীরা বেশি আসছে। কিছু রোগী উপসর্গ ছাড়াও আসছে। তবে গত বছরের তুলনায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে মনে হচ্ছে। রোগীরা জ্বর আসার দুই দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে পজিটিভ হলে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, ডেঙ্গু হলে রোগী বা সাধারণ মানুষ রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট কমে যাওয়াই নয়, বরং রোগী মারা যায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে। তাই প্লাটিলেটের সংখ্যা ১০ হাজারের ওপরে থাকলে ও রক্তপাত (অ্যাকটিভ ব্লিডিং) না থাকলে, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><strong><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেপ্টেম্বরে রোগী বেড়েছে প্রায় তিন গুণ </span></span></span></span></span></strong></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরো এক হাজার ১৫২ জন। এ নিয়ে গেল সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ১৮ হাজার ৯৭ জন, এই সময়ে রোগটিতে মারা গেছে ৮০ জন। আগের মাস আগস্টে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ছিল ছয় হাজার ৫২১ জন, মৃত্যু ২৭ জনের। অর্থাৎ, গত এক মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের তথ্য মতে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩০ হাজার ৯৩৮ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছে ১৬৩ জন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>