<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, যে পরিমাণ টাকা লুট হয়েছে, তার শূন্যস্থান পূরণ করতে কমপক্ষে দুই লাখ কোটি টাকা প্রয়োজন। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গভর্নর বলেন, দেশের ব্যাংক খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর এসব অর্থ বেরিয়েছে সংকটে থাকা আটটি ব্যাংক থেকে। এ জন্য ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আহসান এইচ মনসুর বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা নতুন টাকা ছাপিয়ে আর কোনো ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেব না। কারণ আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে গেলে এখন দুই লাখ কোটি টাকা ছাপিয়ে দিতে হবে। এতে দেশের মুদ্রাবাজার, বিদেশি মুদ্রাবাজার, মূল্যস্ফীতিসহ সব কিছুই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এ জন্য আমরা আন্তঃব্যাংককে সংকটে থাকা আট ব্যাংকের প্রয়োজন অনুযায়ী তারল্য সহায়তা দিতে বলেছি। যেখানে গ্যারান্টার হিসেবে কাজ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আশা করি, এটা কাজে দেবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, আপতত এসব ব্যাংক কোনো ধরনের ঋণ বিতরণ করবে না। শুধু আমানতকারীদের কিছু কিছু টাকা ফিরত দেবে। তবে এতে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমরা আমানতকারীদের অধিকার সংরক্ষণ করব। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা সময় দিতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশ থেকে আট ব্যাংকের মাধ্যমে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে। এতে এসব ব্যাংকগুলোয় তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। আমরা সীমিত পরিসরে তারল্য সাপোর্ট দিতে চাই। সরকার আমানতকারীর কথা ভেবে তাদের পাশে দাঁড়াবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, এই ব্যাংকগুলোতে সমস্যা বহুদিন ধরেই ছিল। আমানতকারীরাও তা জানতেন। তার পরও বিভিন্ন লোভে আপনারা সেখানে টাকা রেখেছেন। এ জন্য লুটপাট করতে সহজ হয়েছে। তবু আমরা আমানতকারীর স্বার্থটা দেখব, যাতে তাঁরা অর্থ ফিরে পান। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, আমরা আমানতকারীদের অনুরোধ করব আপনারা একসঙ্গে টাকা উত্তোলন করবেন না। আপনাদের প্রয়োজনমতো টাকা উত্তোলন করুন। আমাদের কিছুটা সময় দেন। আমরা আশা করি ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে। এই সাত থেকে আটটা ব্যাংকের কারণে পুরো ব্যাংক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গভর্নর বলেন, ব্যাংকের মাধ্যমে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে। প্রথমে পাচারকারীর দেশের মধ্যে থাকা সম্পদ উদ্ধার করব। পাশাপাশি পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহায়তা চেয়েছি কয়েকটি দেশের কাছে। পাচারকারীরা দুবাই, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করেছে। এ জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে এসব দেশ থেকে টাকা উদ্ধারে ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সম্পদ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আমরা তাদের সহায়তা নেব। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচারকারী একটি পরিবার যুক্তরাজ্যে ৫০০ থেকে ৬০০ বাড়ি কিনেছে বলে শুনেছি। সে বিষয়ে আমরা আরো বিস্তর কাজ করছি। এ ছাড়া যারা ব্যাংক লুট করেছে, আমরা তাদের দেশে থাকা সম্পদ থেকে দায় শোধে ব্যবস্থা নেব। এরপর তাদের বিদেশি সম্পদে আমরা হাত দেব।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর ব্যাংক সংস্কারে তিনটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশের ব্যাংক খাত অনেকটাই ভঙ্গুর। এটা ঠিক করতে আমাদের ব্যাপকভাবে কয়েক বছর পর্যন্ত কাজ করতে হবে। এর সীমা এক-দুটি ব্যাংকে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা সবগুলো ব্যাংককেই দেখব এবং কাজ করব। এ জন্য একটি টাস্কফোর্স কাজ করবে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে কিছু অভিজ্ঞ লোক থাকবে। পাশাপাশি আমরা বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের হায়ার করব। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশরা আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গভর্নর বলেন, আরেকটি টাস্কফোর্স বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবে। আমরা যেইভাবেই বলি ব্যাংক খাতের দুর্বলতার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বড় দায় রয়েছে। ওই টাস্কফোর্স বাংলাদেশ ব্যাংকের ম্যানেজমেন্ট, অপারেশন, রাজনৈতিক চাপ, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করবে। এককথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করতে কাজ করবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আহসান এইচ মনসুর বলেন, তৃতীয় টাস্কফোর্স হবে সম্পদ উত্তোলনের জন্য। অর্থাৎ খারাপ সম্পদ রিকভারির জন্য দুদক, সিআইডি, বিএফআইইউ, আদালতসহ সব বিষয় সমন্বয় করবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কিছু কিছু নীতি পরিবর্তন বা সহায়তার প্রয়োজন পড়বে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p>