<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের কিসমত নড়াইল গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা কিতাব জান (৫০)। পানির তোড়ে তছনছ হয়ে যায় তাঁর মাটির ঘরটি। এর পর থেকে স্বামীকে নিয়ে চরম কষ্টে দিন পার করছেন। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে তাঁর কাছে কোনো সহযোগিতা পৌঁছায়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হালুয়াঘাটের কৈচাপুর ইউনিয়নের মোফাজ্জল হোসেন জানান, বন্যায় তাঁরও ঘর ভেঙে গেছে। কিন্তু তিনি কোনো সহায়তা পাননি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, যোগাযোগ সমস্যার কারণে কিছু কিছু এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে সবার কাছেই ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন তাঁরা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নালিতাবাড়ী (শেরপুর) : গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের আটভাইপাড়া গ্র্রামে দেখা যায়, প্রায় ৫০টি বাড়ি বন্যায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত। বাড়িগুলোর মেঝেতে খানাখন্দ হয়ে পানি জমে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর একজন হামিদুল ইসলাম (৪৫) জানান, তাঁর দুটি ঘর ছিল, দুটিই ভেঙে গেছে। ঘরের সব মালপত্র পানিতে ভেসে গেছে। পরে বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি কান্নারত অবস্থায় বললেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আজ ছয় দিন পর একজনে এক সের চাউল দিয়া গেছে। হেইডাই লবণ দিয়া মাহায়া পুলাপান লইয়া খাইসি। কেউ কুনো ত্রাণ দেয় না।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একই গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার (৫০) বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর তিনটি ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পানি। তিনি ম্লান গলায় বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পাঁচ দিন ধইরা অন্যের দেওয়া খাবার খাই, কিন্তু আমাদের গ্রামে কেউ কিছু দিতে আসে নাই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নয়াবিল ইউনিয়নের খরিশাকুড়া গ্রামের কান্তি কল্যাণ বর্মণের ঘরে দুর্গাপূজার সময়ও নেই কোনো খাবার। একই চিত্র ওই গ্রামের সনাতন ধর্মের চিন্তা হরণ (৬০), পরেশ বর্মণ (৪৫), রেমন ম্রংসহ প্রায় ১০০ পরিবারের। তাঁরা জানান, নয়াবিল ইউপি চেয়ারম্যান বন্যার দিন চিড়া-মুড়ি দিয়েছিলেন, এরপর আর কোনো সহযোগিতা কেউ করেনি। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ময়মনসিংহে ২৫ হাজার হেক্টরের আমন নষ্ট </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ময়মনসিংহের তিন উপজেলা ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট ও ফুলপুরে বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। তবে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রোপা আমনের। জেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, তিন উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর রোপা আমন ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ধোবাউড়া উপজেলায় রোপা আমনের জমি নষ্ট হয়েছে ১০ হাজার ৫৬০ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ২৫০ জন কৃষক। হালুয়াঘাটে রোপা আমনের জমি নষ্ট হয়েছে ১০ হাজার ৩১০ হেক্টর। এই উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ২৭৫ জন কৃষক। আর ফুলপুরে নষ্ট হয়েছে তিন হাজার ৪০৫ হেক্টর জমি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬০০ জন কৃষক। এসব এলাকার কৃষকরা ধানের আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হালুয়াঘাটের স্বদেশী ইউনিয়নের মাছাইল এলাকার কৃষক বাবুল হোসেন জানান, এবার আমন মৌসুমে দেড় একর বন্ধকি জমিতে তিনি চিকন জাতের তুলসিমালা ধান রোপণ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ধানক্ষেতে এখনো গলা সমান পানি। পানিতে নেমে তিনি দেখেন, ধানগাছগুলো হাত দিয়ে ধরলেই উঠে যাচ্ছে, অর্থাৎ সব ধানগাছ পচে গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের কৃষক একরামুল জানান, বাড়ির পাশের বিলে ধান চাষ করেছিলেন। সেখান থেকে এক মুঠো ধানেরও আশা নেই। তাঁরা কী খাবেন তা নিয়ে চিন্তায় আছেন। একই উপজেলার উপসী ইউনিয়নের কৃষক লিটন মিয়াও জানান, তাঁর ধানি জমি সবই পানির নিচে। এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড. নাসরীন মুক্তি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে আমরা আছি। তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব দ্রুতই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p> </p>