<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠাল, জাতীয় পাখি দোয়েল। তবে জাতীয় পোশাক বলে তেমন কিছু নেই। যদি থাকত, তাহলে হয়তো লুঙ্গির নামটাই থাকত সবার ওপরে। আরামদায়ক পোশাক হিসেবে লুঙ্গির কোনো বিকল্প নেই। একটি প্যান্ট বানাতে কত কাটাকুটি, সেলাইয়ের দরকার হয়, অথচ লুঙ্গি তৈরিতে তেমন কিছুই লাগে না। দুই প্রান্ত ফাঁকা আর একদিকে সেলাই করে এক খণ্ড কাপড় ফানেলের আকার পেলেই হয়ে যায় লুঙ্গি। লুঙ্গির ব্যবহার আছে ভারত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়ার আরো অনেক দেশে। দেশভেদে আকার ও রঙের কিছুটা তফাত থাকলেও লুঙ্গি সব দেশেই সমান জনপ্রিয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লুঙ্গির ইতিহাস বেশ প্রাচীন। মোটামুটি ৮০০ বছর আগে লুঙ্গির যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতের তামিলনাড়ুতে। লুঙ্গির আদিরূপ হিসেবে দেখা হয় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভেশতি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামক এক ধরনের পোশাককে। অবশ্য এই মত নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। ভেশতি ছিল সাদা রঙের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাদা কাপড়ে ফুল, পাতা ও অন্যান্য নকশা যুক্ত হয়ে ভেশতি থেকে একসময় লুঙ্গির আবির্ভাব হয়েছে। ধীরে ধীরে কৃষিপ্রধান এই জনপদে লুঙ্গি হয়ে ওঠে সবার পছন্দের পরিচ্ছদ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে লুঙ্গি ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় যেতে শুরু করে। ডাচদের হাত ধরে লুঙ্গির রপ্তানিও শুরু হয়। এরপর ব্রিটিশরা সেই ধারা বজায় রাখে। অঞ্চলভেদে সারং, মুণ্ডু, হামেইন, সারাম, তহবন্দ, তবন, পিনন, মাওয়ালি, কিটেং, কঙ্গা, কাইকি ইত্যাদি নামেও পরিচিত লুঙ্গি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লুঙ্গি বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী পোশাক। দেশীয় লুঙ্গির বেশির ভাগই তৈরি হয় নরসিংদী, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায়। এর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বসে নরসিংদীর বাবুরহাট, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও টাঙ্গাইলের করটিয়ায়। এসব বাজার থেকেই সারা দেশের পাইকারি ব্যবসায়ীরা লুঙ্গি কিনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। বেশির ভাগ সময় সুতি সুতার নরম কাপড় দিয়ে লুঙ্গি তৈরি করা হয়। এই কাপড় এতটাই আরামদায়ক যে গরমের দিনে লুঙ্গি পরা খুবই স্বস্তিদায়ক। পলিয়েস্টার ও সিল্ক দিয়েও লুঙ্গি বানানো সম্ভব। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর নারীরা লুঙ্গির মতো দেখতে একই রকম একটি পোশাক পরিধান করেন। এটি থামি নামে পরিচিত। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একসময়ের অধিক ব্যবহৃত এই লুঙ্গির ব্যবহার এখন ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তরুণরা লুঙ্গি পরিধানে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত শিল্প-কারখানার উন্নতি ও বিশ্বব্যাপী ইউরোপীয় পোশাকের প্রসারের কারণে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে লুঙ্গি বিলুপ্ত পোশাকের তালিকায় যুক্ত হবে।</span></span></span></span></span></p>