<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছিল সারা দেশ। সেই আন্দোলন দমাতে ব্যাপক সহিংসতার আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের খসড়া তালিকা অনুযায়ী, সেই আন্দোলনে প্রাণ হারায় ৭৩৫ জন এবং আহত হয় ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি। আহতদের নানাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। অনেকেই শারীরিকভাবে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগই এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি তীব্র মানসিক আঘাত। শুধু আহতরা নন, যাঁরা এসব ঘটনার সংস্পর্শে গিয়েছেন, চোখের সামনে বন্ধুকে, স্বজনকে কিংবা শিশুসহ সাধারণ মানুষকে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেছেন, রক্তের ফোয়ারা দেখেছেন, তাঁরাও সেসব স্মৃতি ভুলতে পারছেন না। অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের একদল চিকিৎসক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলির আঘাতে চিকিৎসা নেওয়া ৩১ জন রোগীর ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন। এতে দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশেরই পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিস-অর্ডার বা পিটিএসডি রয়েছে। অর্থাৎ যে ঘটনা বা অভিজ্ঞতা ব্যক্তির মনে আঘাত সৃষ্টি করেছে, তা বারবার তাঁর স্মৃতিতে ফিরে আসছে। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেন্টাল হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যামাং দ্য রেসপন্ডেন্টস অব জুলাই ম্যাসাকার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামের এই সমীক্ষার নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুল আহসান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, সাধারণত পিটিএসডি প্রকাশ পায় এক মাস পর থেকে। ছোট আকারে করা এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশের তীব্র আঘাত-উত্তর মানসিক চাপ বা পিটিএসডি উপসর্গ রয়েছে। বিএসএমএমইউয়ের সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন ৫৩ শতাংশ রোগী। অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগজনিত সমস্যা ছিল ৪২ শতাংশের এবং ডিপ্রেশন বা তীব্র মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল ১১ শতাংশ রোগীর। সহজেই চমকে ওঠা ও অন্যান্য সমস্যা ছিল ৮ শতাংশ রোগীর। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটেও কাউকে কাউকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দেখা গেছে, শারীরিক কোনো আঘাত নেই, কিন্তু তাঁরা মানসিক আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মানসিক সমস্যাগ্রস্ত সবারই চিকিৎসা প্রয়োজন। তা না হলে সমস্যা আরো প্রকট হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু যাঁদের অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এই অর্জন, তাঁদের প্রতি কোনো ধরনের অবহেলা কাম্য নয়। রাষ্ট্র যেমন শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসায় সহায়তা করছে, একইভাবে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়াদেরও চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে।</span></span></span></span></p>