<p>বই পড়া সবসময় উপকার—এটা আসলে এক বড় মিথ। বইপড়ার উপকারী দিক যেমন আছেন, এবার এই অভ্যাস স্বাস্থ্য ও সামাজিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটা কোনো তত্ত্বকথা নয়। বলছেন খোদ বিজ্ঞানীরাও। </p> <p>একথা সত্যি যে, বইপড়া, জ্ঞান অর্জন, মননশীলতা বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে। কিন্তু সব ভালোর উল্টোপিঠে যেমন এককটা ক্ষতিকার দিক থাকে, বই পড়ারও আছে। যারা অতিরিক্ত বই পড়েন বা যারা বই পড়ার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন না, তাদের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দিতে পারে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বই পড়লে কি বুদ্ধি বাড়ে, বিজ্ঞান কী বলে?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/10/1728559338-fa2d68a654296f5680e8c4d469b866db.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বই পড়লে কি বুদ্ধি বাড়ে, বিজ্ঞান কী বলে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/10/1433807" target="_blank"> </a></div> </div> <p>দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়ার কারণে চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। বিশেষ করে যদি যদি কমি আলো পড়া হয়। এছাড়া খুব ছোট অক্ষরেরর প্রিন্ট করা বই পড়লেও চোখে চাপ পড়ে। </p> <p>লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উইলিয়াম প্যাডি এবং তাঁর দল এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, যারা প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে ছোট ফন্টে বই পড়েন তাদের চোখে শুষ্কতা, ঝাপসা দৃষ্টি এবং মাথাব্যথার সমস্যা হতে পারে। এর ফলে, দীর্ঘমেয়াদে চশমার প্রয়োজন হয় তাঁদের।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পৃথিবীর প্রথম লিখিত বই কোনটি?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/13/1728804458-3547ceaf51a4026bfbe9bb3a9beebf2b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পৃথিবীর প্রথম লিখিত বই কোনটি?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/13/1434679" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বই পড়া যেমন আপনার একাকীত্ব কাটাতে ভূমিকা রাখতে পারে, তেমনি এটা সামাজিক দূরত্ব তৈরির ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারে। আপনি যখন খুব বেশি বেশি বই পড়বেন, তখন পরিবার, সমাজ কিংবা বন্ধুবান্ধদের বেশি সময় দিতে পারবেন না। এতে সামাজিক সম্পর্কগুলো শিথিল হয়ে পড়ে। ফলে আরও বেশি একাকীত্ব চেপে বসতে পারে আপনার ওপর।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্ট পুটনাম এ বিষয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন। তিনি দেখিয়েছেন, যারা অত্যাধিক বই পড়েন এবং অন্যান্য সামাজিক ক্রিয়াকলাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখেন, তারা ধীরে ধীরে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা থেকে মানসিক চাপ ও হতাশা তৈরি হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মানুষের দর্শন অনুভূতির স্থায়িত্ব ০.১ সেকেন্ড কেন?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/13/1728816718-34e1469980ebea62a1794cde9b89e3f6.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মানুষের দর্শন অনুভূতির স্থায়িত্ব ০.১ সেকেন্ড কেন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/13/1434717" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বই পড়া মজার হলেও সব ধরনের বইয়ের ক্ষেত্রে সেটা নাও হতে পারে। কিছু বইয়ের বিষয়বস্তু সুখকর নয়। সেগুলো আপনার ওপর মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষত, থ্রিলার, হরর বা দুঃখের কাহিনিগুলো মানুষকে উদ্বিগ্ন করতে পারে। এর থেকে তৈরি হতে পারে হতাশা।</p> <p>নেদারল্যান্ডের আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লেয়ার জেনসেন এই বিষয়টা নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি দেখিয়েছেন, যেসব মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে আবেগপ্রবণ বা মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয় এমন বই পড়েন, তাদের উদ্বেগ ও হতাশা তৈরি হয়। তাঁরা অবসাদে ভূগতে শুরু করেন এক সময়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কখন ঘুম থেকে উঠবেন?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/13/1728806453-65502e9f6d322cd4ead3d4cef24286f8.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কখন ঘুম থেকে উঠবেন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/13/1434686" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বই পড়ার জন্য সঠিক স্থান নির্বাচনও জরুরি। অনেকে এই বিষয়টার দিকে খেয়াল রাখেন না। বিশেষ করে যেখানে বসে বই পড়ছেন, সেই স্থানটা ও বসার ভঙ্গীও শারিরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়া মেরুদণ্ড এবং ঘাড়-ব্যথার কারণ হতে পারে।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক রবার্ট গটলিব এ বিষয়ে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়ার ফলে শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে মেরুদণ্ডের স্থায়ী সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক ভঙ্গিমায় বসে বই পড়া অত্যন্ত জরুরি।</p> <p>বেশিরভাগ মানুষ রাতে ঘুমানোর আগে বই পড়তে পছন্দ করেন। এটা ভালো অভ্যাস। তবে এজন্য কাগজের বই পড়া জরুরি। রাতে মোবাইলে বা ইবুক রিডারে বই পড়লে উল্টো ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। ইবুক রিডার বা মোবাইলের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। মেলাটিন হরমোনের সঠিক মাত্রায় ঠিকাঠাক ঘুমের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বাড়িতেই করুন স্বাস্থ্য পরীক্ষা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/09/1728461551-aa07ea992dc23c1ea3956c4385e20553.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বাড়িতেই করুন স্বাস্থ্য পরীক্ষা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/09/1433433" target="_blank"> </a></div> </div> <p>যুক্তরাষ্টের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটির গবেষক চে-হুয়া লিন—এ বিষটা নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর মতে, ইবুক পড়ার কারণে মানুষের ঘুমের মান কমে যায় এবং ঘুমের সময়সূচিতে ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমের সঙ্গে জড়িত নানা রকম শারিরিক ক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দিতে পারে।</p> <p>অতিমাত্রায় বই পড়ার ফলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে মানসিক স্থবিরতা বা অলসতার সৃষ্টি হতে পারে। বই পড়া মানসিক বিকাশে সাহায্য করে বটে, কিন্তু কখনো কখনো এটি শারীরিক কার্যক্রমের বিকল্প হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে শারীরিক কাজ বা ব্যায়াম করেন না, তাঁরা আরও অলস হয়ে পড়েন। মুটিয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। এবং নানারকম শারিরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।</p> <p>ক্ষতিকর প্রভাব আছে বলে কি আপনি বই পড়া ছেড়ে দেবেন? তাহলে বই পড়ার উপকারী দিকগুলো থেকে যে বঞ্চিত হবেন। এর থেকে রক্ষা পেতে হলে সঠিক নিয়মে বই পড়তে হবে। যেমন, সঠিক ভঙ্গিমা মেনে বই পড়া উচিত। দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়লে মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া জরুরি। চোখের সুরক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়লে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম দিতে হবে চোখকেও। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="চোখের পাতা লাফায় কেন? এটা কি কোনো রোগের লক্ষণ?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/08/29/1724915013-bfcb52048e8f3dbe6c60dd48b18eec24.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>চোখের পাতা লাফায় কেন? এটা কি কোনো রোগের লক্ষণ?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/08/29/1419964" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বই পড়ার অভ্যাসের পাশাপাশি সামাজিক সম্পর্কগুলো যাতে আলগা না হয়ে পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বই পড়ুন, তবে পরিবার ও সন্তানকে পর্যপ্ত সময় দিতে ভুলেবেন না। মাঝে মাঝে বন্ধুদের সঙ্গে সুস্থ্য আড্ডা মানসিক প্রশান্তি দিতে পারে।<br /> ইবুকে বই পড়লে নীল আলোর ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। নীল আলো প্রতিরোধী চশমা এক্ষেত্রে ভালো কাজ দেয়। রাতে ইবুক রিডারের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, কাগজের বই পড়ুন। অবশ্যই আপনার চোখের সঙ্গে মানাসই আকারের অক্ষরে ছাপা বই পড়ুন।</p> <p>সূত্র: সায়েন্স ডিরেক্ট<br />  </p>