<p style="text-align:justify">২০২৩ সালের আগ পর্যন্ত আমদানি করা সারের সরবরাহ ও পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনায় নেতৃত্ব দিয়েছে পোটন ট্রেডার্স। প্রতিষ্ঠানটির মালিক কামরুল আশরাফ খান পোটন। একই সঙ্গে তিনি সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) চেয়ারম্যান ও নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। </p> <p style="text-align:justify">সরকারি প্রতিষ্ঠানের তদন্তে উঠে এসেছে, পোটন ট্রেডার্স ২০২১ সালেই প্রায় আড়াই লাখ টন সার গায়েব করে দিয়েছে। এসব সারের ক্রয়মূল্য এক হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। কৃষি খাতে ওই সময় ভর্তুকি ছিল ছয় হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। ফলে মোট ভর্তুকির প্রায় ২০ শতাংশ পরিমাণ অর্থ দুর্নীতি করেছে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া নানা পর্যায়ে সারের দুর্নীতি ও অপচয়ে প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত হয়েছেন কৃষক।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিনিয়োগ পেতে প্রয়োজন নির্বাচিত সরকার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/18/1731898097-834c9e740f2acbb13b72bd0e948f2745.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিনিয়োগ পেতে প্রয়োজন নির্বাচিত সরকার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/18/1447915" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, দুই দশক আগেও কৃষিতে ভর্তুকি ছিল দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা। সেই ভর্তুকির অর্থ গত অর্থবছরে ২৫ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। এমনকি গত ১৬ অর্থবছরে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, যার বেশির ভাগই মেরে দেওয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ কৃষক সরকারের এই ভর্তুকি সুবিধা পাননি। গত দেড় দশকের সার নিয়ে নানা কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির কারণে কৃষি খাতে ভর্তুকির পুরো অর্থ কৃষকের কাছে পৌঁছায়নি। </p> <p style="text-align:justify">কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদে কৃষকের ভর্তুকির টাকা গায়েব ও দুর্নীতি করা হয়েছে। কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই কাজে নিয়োজিত ছিল। যারা দুর্নীতি করেছে সেই সময় তাদের ঠিকভাবে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে, হুমকি দেওয়া হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিরক্তিকর বিষয় আছে, তবে সেগুলো বাধা হবে না: ভারতীয় হাইকমিশনার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/18/1731897437-994df35b01f69a73cacd0f483b57bda7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিরক্তিকর বিষয় আছে, তবে সেগুলো বাধা হবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/18/1447913" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ফলে কৃষিতে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের কাছে পৌঁছায়নি। কিন্তু সারের দাম কমাতে এই ভর্তুকির কোনো বিকল্প নেই। গত ১৬ বছরে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে কৃষক আরো কম দামে সার পেতেন। শস্য উৎপাদন আরো বাড়ানো যেত। তাই সামনের দিনে ভর্তুকির অর্থ নিয়ে যারা দুর্নীতি করবে, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা না হলে নতুন করে এ খাতে দুর্নীতিবাজদের পুনর্জন্ম হবে।</p> <p style="text-align:justify">কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশে সাধারণত প্রধান চারটি সার ব্যবহৃত হয়। এগুলো হলো—ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি (পটাশ)। ইউরিয়া সার আমদানি করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। বাকি সার আমদানি করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। গত বছর প্রায় ৬৫ লাখ টন সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২৬ লাখ টন ইউরিয়া, সাড়ে সাত লাখ টন টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট), সাড়ে ১৬ লাখ টন ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) এবং সাড়ে আট লাখ টন এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া অনান্য সারের চাহিদা প্রায় আট লাখ টন। এর মধ্যে দেশে ইউরিয়া সার উৎপাদন হয় ৯ থেকে ১০ লাখ টন। সব মিলিয়ে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দিতে হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সোনারগাঁয়ে টিস্যু কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/18/1731897364-8cda81fc7ad906927144235dda5fdf15.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সোনারগাঁয়ে টিস্যু কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/18/1447912" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">আবার ভর্তুকি সারের দুর্নীতির বড় ক্ষেত্র পরিবহন খাত। বাফার গুদামের জায়গা স্বল্পতার কারণে কম-বেশি তিন লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ টন সার সব সময় পরিবহন ঠিকাদারদের কাছে গুদামের বাইরে ট্রানজিটে থাকে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সমাপনী ট্রানজিট সার ছিল দুই লাখ ৭৯ হাজার টন। পরিবহন ঠিকাদারদের পত্র অনুযায়ী, বিল পরিশোধের জন্য প্রভিশনে রাখা সারের পরিমাণ ৯ লাখ ৪৬ হাজার টন। বাকি সারের কোনো উল্লেখ ছিল না। এভাবেই পরিবহন ঠিকাদাররা সার উত্তোলনের পর বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন বাফার গুদামে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি থাকলেও নির্ধারিত সময়ে এসব সার পৌঁছানো হয়নি। এতে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা ফাঁকি দিয়েছে পোটন ট্রেডার্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সার আত্মসাৎ-দুর্নীতির মাধ্যমে ভর্তুকির বড় একটি অংশ লণ্ঠন করেছেন ডিলার, সার ব্যবসায়ী, সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীরা। গত ১৬ অর্থবছরে এক লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা কৃষিখাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। যার ৯৮ শতাংশ গেছে সার খাতে। আর সেই সার খাতেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষকদের বঞ্চিত করা হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অভিমত : ভালো প্রতিষ্ঠান বিপদে পড়লে সংকট বাড়বে" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/18/1731896966-89553f946263af945513ff760ef9a7df.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অভিমত : ভালো প্রতিষ্ঠান বিপদে পড়লে সংকট বাড়বে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/11/18/1447910" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশে সারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে। ভর্তুকির অর্থ সঠিকভাবে কৃষকের কাছে পৌঁছাতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের সার পেতে যাতে কোনো ধরনের হয়রান হতে না হয় সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। আগের সরকারের আমলে সারের দাম বেশি দেওয়ার বিষয়টিও বাতিল করা হয়েছে। প্রতি টন সার আমদানিতে প্রায় ১০০ ডলার বেশি দাম চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেই চুক্তি বাতিল করে দাম কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছি। এ ছাড়া সারের ব্যবহার বিধিতে আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করার উদ্যোগ নিচ্ছি।’</p>