<p style="text-align:justify">টাকার হিসাবটা আট হাজার কোটি টাকা। সময়ের হিসাবে ৯ বছর। ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ) নামে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুরো টাকাটাই নিজেদের পকেটে পোরা হয়েছে। ফোরামের সব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিমালিকানাধীন। আর ওই টাকা লুটপাট করতে ব্যবহার করা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/07/1730954486-bab11c8734a49c5786d2df2b8e7e3538.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/07/1443783" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিষয়টি টেলিযোগাযোগ খাতে ছিল অনেকটা ওপেন সিক্রেট। কিন্তু এ নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করেননি। ব্যবসাসংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রতিবাদের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে থামিয়ে রাখা হয়। একই লাইসেন্স নিয়ে কেউ হাঁকিয়েছেন বিএমডাব্লিউ আবার কেউ ঢাকার রাস্তায় ঘুরেছেন রিকশা ও লোকাল বাসে চেপে। </p> <p style="text-align:justify">বিদেশ থেকে ফোন এলে বা দেশ থেকে বিদেশে ফোন করলে সেটা সরাসরি হ্যান্ডসেটে আসে না। রিংটোন বাজে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে। এসব ধাপ হচ্ছে গেটওয়ে। বিদেশ থেকে প্রথমে কল আসে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে বা আইজিডাব্লিউ অপারেটরের কাছে। এরপর যায় ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ বা আইসিএক্স-এ। এই এক্সচেঞ্জ অপারেটর পাঠিয়ে দেন নির্ধারিত মোবাইল অথবা ল্যান্ডফোন গ্রাহককে। তখন পরীক্ষামূলক তিন থেকে ছয় মাসের কথা বলা হলেও এখনো চলছে এই সিন্ডিকেট বাণিজ্য।</p> <p style="text-align:justify"><strong>যে কৌশলে কুক্ষিগত করা হয় আইজিডাব্লিউ ব্যবসা</strong></p> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সরকারি দলের কয়েকজন নেতা মিলে ২০১৫ সালে এ পরিকল্পনা তৈরি করেন। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায়ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা আছেন। অনেকটা চাপে পড়েই বিটিআরসিকে তাতে সায় দিতে হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ) নামের এ সংগঠনে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বাংলা একাডেমিও দলীয়করণ মুক্ত হতে পারেনি : সাক্ষাৎকারে সভাপতি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/07/1730955147-3072e50477a3e0c6146c942e3262c2f1.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বাংলা একাডেমিও দলীয়করণ মুক্ত হতে পারেনি : সাক্ষাৎকারে সভাপতি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/07/1443789" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বের পাশাপাশি তার ছেলে শায়ান রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এ ছক সম্পন্ন করা হয়। বিটিআরসিতে আইজিডাব্লিও ফোরামের প্রায় সব বৈঠকেই শায়ান নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। ২০১৫ সালে দেশে মোট ২৯টি ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটর থাকলেও তাদের সংগঠন ‘আইওএফ’-এর মধ্য থেকে সাত আইজিডাব্লিউ আন্তর্জাতিক কল পরিচালনায় কর্তৃত্ব পায়। </p> <p style="text-align:justify">প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইউনিক ইনফোওয়ে, ডিজিকন টেলিকমিউনিকেশনস, রুটস কমিউনিকেশনস, গ্লোবাল ভয়েস, বাংলা ট্র্যাক ও নভো টেলিকম। নতুন প্রক্রিয়া চালুর সে সময়ের হিসাবে (২০১৫) প্রতি মাসে মোবাইল অপারেটররা  ১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা, আইসিএক্সগুলো ১৬ কোটি টাকা, বিটিআরসি প্রায় ৪৭ কোটি টাকা রাজস্ব হারায়। অন্যদিকে আইজিডাব্লিউগুলোর লাভ মাসে ৭০ কোটি থেকে বেড়ে ১৪০ কোটি টাকা হয়। সবচেয়ে বেশি লাভ পায় নিয়ন্ত্রণকারী এই সাত প্রতিষ্ঠান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জিয়ার ৭ নভেম্বরের উত্থান ছিল গণবিপ্লবের ফসল" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/07/1730955070-cde670c972c67f62a89c4fdf7968a1bb.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জিয়ার ৭ নভেম্বরের উত্থান ছিল গণবিপ্লবের ফসল</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2024/11/07/1443788" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ব্যবসাসংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ) নামে একটি সংগঠন তৈরির প্রস্তাবে সায় দিয়ে তা অনুমোদনের জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বিটিআরসি। অনেকটা চাপে পড়েই তাদের এ কাজ করতে হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">বিটিআরসির তখনকার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী মো. মেজবাহুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিটি ইস্যু করা হয় ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ। আইজিডাব্লিউ সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে মোবাইল অপারেটর রবির কোম্পানি সচিব ও চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার শাহেদ আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আইজিডাব্লিউ ফোরামকে অনেকে বলেন প্ল্যাটফরম। কিন্তু আমাদের কাছে এটা একটা লেয়ার। কারণ এখানে ২টা সুইচ আলাদা। আপনি যে নামেই ডাকেন না কেন, এখানে আইজিডাব্লিউদের সুইচ আছে পরে, কিন্তু আইওএসদের সুইচ আছে। তারা যে বিজনেস মডেলটা দাঁড় করিয়েছেন সেটা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/07/1730954486-bab11c8734a49c5786d2df2b8e7e3538.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/07/1443783" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তাদের নিয়ম অনুযায়ী যত ইন্টারন্যাশনাল কল আসবে যে রেটই আনুক না কেন সেই রেটটা তারা কারো সঙ্গে শেয়ার করবেন না। বিটিআরসির সঙ্গে তাদের যে সমঝোতা রয়েছে, সে অনুযায়ী অপারেটর ও সরকারের সঙ্গে শেয়ার করবে। এই রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের যে বৈষম্যটা প্রথম দিন থেকে এখন পর্যন্ত তা কার্যকর। আমরা কাগজে-কলমে দেখাতে পারব, এর ফলে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা অপারেটর ও সরকার বঞ্চিত হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, এই বিজনেস মডেলটা প্রথমে পাকিস্তান চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেখানকার উচ্চ আদালত তা বাতিল করে দেয়। কারণ এতে অস্বচ্ছতার বিষয়টি স্পষ্ট। এ ক্ষেত্রে বিটিআরসির ভূমিকা প্রসঙ্গে শাহেদ আলম বলেন, বিটিআরসি যখন পরীক্ষামূলকভাবে দিয়েছিল তখন মন্ত্রণালয়ের একটি অনুমোদন নেওয়া হয়। এখন যেহেতু মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কিছু বলছে না, তাই বিটিআরসিও কিছু বলছে না। তবে বিটিআরসি চাইলে এটা বাতিল করে দিতে পারে। কারণ এটা পলিসির একেবারে বাইরে।</p> <p style="text-align:justify">এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পরীক্ষামূলক প্ল্যাটফরমের তকমা দিয়ে একটি অবৈধ লেয়ার তৈরি করে আইনের বেড়াজালে সরকারের যে হাজার হাজার কোটি টাকার লুটপাটের ফর্মুলা বন্দোবস্ত হয়েছে তার বিচার অবশ্যই হতে হবে। ৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তনের পরও আইওএফের নামে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রাজস্ব থেকে প্রতিদিন যে কোটি কোটি টাকার লুটপাট অব্যাহত রাখা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিটিআরসি কেন এ প্রথা এখনো চালু রেখেছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="রঙিলা কিতাবের আদ্যোপান্ত" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/07/1730955780-2d8d12be9ef56c1450576ce1ffc574b3.png" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>রঙিলা কিতাবের আদ্যোপান্ত</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/11/07/1443792" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বাংলাদেশ কনটেক্সটে আইওএফের কোনো প্রয়োজন নেই। রাজনৈতিক সুবিধা, অর্থ পাচার বন্ধ করতে হলে এ স্তরটা দ্রুত তুলে নিতে হবে। টেলিকম সেক্টরে দীর্ঘদিন একটি কথা শোনা যায় যে সাবেক ডাক ও টেলিযোযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মন্ত্রিত্ব চলে গিয়েছিল আইওএফকে অনৈতিক সুবিধা দিতে সম্মত না হওয়ার কারণে। এ বিষয়টিরও একটি তদন্ত হওয়া উচিত।</p>