<p style="text-align:justify">প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের এক-দশমাংশ আয়তনজুড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি এলাকা, যা তিনটি জেলা—রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি নিয়ে গঠিত। চট্টগ্রাম বিভাগের এই এলাকা পাহাড় ও উপত্যকায় পূর্ণ বলে এর নামকরণ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই তিনটি জেলার মোট আয়তন ১৩ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার।</p> <p style="text-align:justify">পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা প্রধান নদী হলো কর্ণফুলী। এই নদীতে বাঁধ দিয়ে কাপ্তাইয়ে গড়ে তোলা কাপ্তাই হ্রদে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা এই অঞ্চল অধিকার করেন। ১২৪০ সালের দিকে ত্রিপুরার রাজা এই এলাকা দখল করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="প্রিয় নবী (সা.)-এর বিভিন্ন নাম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/18/1729221964-48d7e98e6f9fc05670bcbf4e704b8997.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>প্রিয় নবী (সা.)-এর বিভিন্ন নাম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Islamic-lifestylie/2024/10/18/1436382" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">১৫৭৫ সালে আরাকানের রাজা এই এলাকা পুনর্দখল করেন এবং ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত অধিকারে রাখেন। বর্তমান নৃগোষ্ঠীগুলোর নাম (যেমন—মারমা), বিভিন্ন প্রশাসনিক পরিভাষা (যেমন—‘মাং’ মানে গভর্নর, ‘পো-মাং’ মানে মহান অধিনায়ক বা ‘রুয়াসা’ বা ‘রোয়াজা’ মানে গ্রাম নেতা) মায়ানমারের সঙ্গে এ অঞ্চলের আদান-প্রদান প্রমাণ করে। মোগল ও প্রারম্ভিক ব্রিটিশ নথিপত্রে অঞ্চলের নাম জুমবঙ্গ, জুমমহল ও কপাসমহল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মোগল সাম্রাজ্য ১৬৬৬ থেকে ১৭৬০ সাল পর্যন্ত এলাকাটি সুবাহ বাংলার অধীনে শাসন করে।</p> <p style="text-align:justify">১৭৬০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি এই এলাকা নিজেদের আয়ত্তে আনে। ১৮৬০ সালে এটি ব্রিটিশ ভারতের অংশ হিসেবে যুক্ত হয়। ব্রিটিশরা এই এলাকার নাম দেয় চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস বা পার্বত্য চট্টগ্রাম। এটি চট্টগ্রাম জেলার অংশ হিসেবে বাংলা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল। ১৯৪৭ সালে এই এলাকা পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/18/1729222081-fece4f1c74722dc4779cde4f98b2b4a5.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2024/10/18/1436383" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটি বাংলাদেশের জেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বিভক্ত করা হয়। বাংলাদেশের প্রায় এক-দশমাংশ ভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর নৈসর্গিক খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলা নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলকে নিয়ে বিভাজনের রাজনীতি ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলো সম্প্রতি নতুন করে অস্থির হয়ে উঠেছে। অস্থিরতার পেছনে রয়েছে নানা কারণ।</p> <p style="text-align:justify"> </p> <p style="text-align:justify"><img alt="পার্বত্য অঞ্চলের জীবনযাত্রা শান্তিপূর্ণ হোক" height="216" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/18-10-2024/4.jpg" width="320" />দেশপ্রেমিক জনসাধারণ শান্তিপ্রিয় উপজাতি জনগোষ্ঠীর বিরোধী নয়। তারা চায় সমান সুযোগ-সুবিধা ও সম-অধিকারের ভিত্তিতে ওই অঞ্চলে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে।</p> <p style="text-align:justify">সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া অস্থিরতা ও সংঘাত গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একাধিক বিষয় নিয়ে পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন, বিশেষত শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য প্রতিটি পদক্ষেপকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সংগীতশিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/18/1729222383-b7a4bab2425a35d176186d959d33241a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সংগীতশিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/10/18/1436384" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা অগ্রগণ্য। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও আন্ত জাতিগত সংঘর্ষ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী সেখানকার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। সেনাবাহিনীর মানবিক ও সমন্বিত উদ্যোগ; যেমন—জাতীয় দিবসগুলোতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মিলনমেলা আয়োজন, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা দেওয়া ও ঐক্যবদ্ধ উৎসবগুলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে কার্যকর হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সাম্প্রদায়িক শান্তিকে চ্যালেঞ্জ করছে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব আরো জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অঢেল সম্পদ পেয়ে বনি ইসরাঈলের তিন ব্যক্তির আচরণ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/18/1729223074-f84e0ea49c450a6411911e8957c6ef67.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অঢেল সম্পদ পেয়ে বনি ইসরাঈলের তিন ব্যক্তির আচরণ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Islamic-lifestylie/2024/10/18/1436386" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তি ছিল দীর্ঘ সংঘাতের অবসানে একটি আশার আলো। তবে ২৫ বছর পরও শান্তি পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় হতাশা তৈরি হয়েছে। চুক্তির মাধ্যমে শরণার্থীজীবনের অবসান ঘটলেও পাহাড়ি জনগণের স্বপ্ন পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি, যার ফলে শান্তিচুক্তির প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে অনেকের।</p> <p style="text-align:justify">পার্বত্য চট্টগ্রামে সেটলারদের আগমন অনেকের কাছে সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হলেও অন্যদের মতে এটি সমাধানের পথ হতে পারে। জাতিগত সামঞ্জস্য ও সম্প্রীতি রক্ষায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও সেটলারদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা প্রয়োজন। সেটলার ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যেতে পারে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কৃত্রিম চিনি বয়ে আনতে পারে যেসব বিপদ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/18/1729223922-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কৃত্রিম চিনি বয়ে আনতে পারে যেসব বিপদ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/prescription/2024/10/18/1436388" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">পার্বত্য চট্টগ্রাম শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নয়, জিওপলিটিকসেও এর কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। ভারতের সীমান্তবর্তী হওয়ায় এই অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের জটিলতায় আবদ্ধ।</p> <p style="text-align:justify">সন্ত্রাস নয়, শান্তিময় জীবনযাত্রা গড়ে তোলার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সরকার, সেনাবাহিনী, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা শান্তিপূর্ণ হোক।</p> <p style="text-align:justify"><strong>লেখক : </strong>নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কলামিস্ট</p>
