<p>কক্সবাজারে বিদেশ যাওয়ার টাকা না পেয়ে আট বছর বয়সী ভাতিজিকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের লিংকরোড থেকে চাচাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।  </p> <p>গ্রেপ্তাররা হলেন রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের সিকদার পাড়া অফিসের চর এলাকার মো. নুরুল আবছারের ছেলে হাসনাইনুল হক প্রকাশ নাঈম (২৩) ও একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব দ্বীপ ফতেখাঁরকুল এলাকার আবদুস ছোবহানের ছেলে মো. শাহীন (২৫)। </p> <p> কক্সবাজারে দায়িত্বরত র‌্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও সিনিয়র সরকারি পুলিশ সুপার দেবজিত পাল জানান, সোমবার মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসের চর সিকদারপাড়া এলাকায় এমদাদুল উলুম মাদ্রাসা গেটের সামনে থেকে আফিয়া জান্নাত আরোয়া (৮) নামের ওই শিশু অপহরণের শিকার হয়। আরোয়া ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চর সিকদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারুল হকের মেয়ে। </p> <p>আরোয়া রামুর ফতেখাঁরকুল অফিসের চর সিকদারপাড়া অছি উদ্দিন জামাদার নুরানি মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সে প্রতিদিনের মতো রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে অপহৃত হয়।</p> <p>পরে একই দিন বেলা ১১টার দিকে অপহৃত শিশুটির মায়ের মোবাইল নম্বরে কল করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অপহরণকারীদের দাবি মতো মুক্তিপণের টাকা না দিলে শিশুটিকে মানব পাচারকারীর মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশে পাচার করে দেবে অথবা খুন করে লাশ গুম করে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয় তারা। </p> <p>শিশুটির মা বাদী হয়ে রামু থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। </p> <p>মঙ্গলবার বিষয়টি জানতে পারে র‌্যাব। তারা ওইদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কক্সবাজার শহরতলীর লিংক রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার ও দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে। </p> <p>র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দু’জন বন্ধু এবং গ্রেফতার হওয়া হাসনাইনুল হক ওরফে নাঈম অপহরণের শিকার আফিয়া জান্নাত আরোয়া’র আপন চাচা। </p> <p>র‌্যাবের দাবি, নাঈম বিদেশ যাওয়ার জন্য পরিবারের কাছে টাকা চাইলে বাসা থেকে টাকা না দেওয়ায় তিনি তার বন্ধু শাহীনকে নিয়ে তারই আপন ভাতিজিকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন শিশুটি মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ঘটনাস্থল থেকে সিএনজিতে তুলে ঈদগাঁওয়ের দিকে নিয়ে যায়। </p> <p>তাদের মতে, চতুরতার কৌশল অবলম্বন করে তারা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের জন্য ঈদগাঁও থেকে চৌফলদন্ডী এবং চৌফলদন্ডী থেকে কুতুপালংয়ে নিয়ে যায় শিশুটিকে। তারপর সেখানে শাহীনের এক চাচার বাসায় অবস্থান নেন তারা। এক পর্যায়ে শিশুটির পরিবারের কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। </p> <p>এ ছাড়া তারা শিশুটির পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি নাটকীয়তার আশ্রয় নেন। শিশু আরোয়ার শরীরে নকল ব্যান্ডেজ করে ছবি তুলে পাঠানো হতো পরিবারের কাছে। যাতে শিশুটির পরিবার মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে তাড়াতাড়ি তাদের চাহিদা মতো মুক্তিপণ দিয়ে দেয়। </p> <p>র‌্যাব জানিয়েছে, শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে তারা ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। ওই টাকা পাওয়ার পর পুনরায় নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের জন্য তারা কুতুপালং থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে কলাতলী এবং কলাতলী থেকে লিংক রোড এলাকায় আসলে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে।</p>