<p>আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন প্রভাবশালী সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে ২২৭টি মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগেও হয়েছে পাঁচটি মামলা। দুর্নীতির এসব মামলার তদন্তের স্বার্থে তার ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেছেন আদালত। এতে ১২ কোটি ১১ লাখ ৯৪ হাজার ১৮০ টাকা রয়েছে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। </p> <p>মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আদালতের একাধিক সূত্র এ তথ্য কালের কণ্ঠকে জানিয়েছে। </p> <p>কামালের অবরুদ্ধ হওয়া ব্যাংক হিসাবের মধ্যে জনতা ব্যাংক পিএলসিতে পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৫১২ টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির তিনটা হিসাবে তিন কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৯৪ টাকা, সীমান্ত ব্যাংক পিএলসিতে এক কোটি ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৬ টাকা, সিটি ব্যাংক পিএলসির তিনটা হিসাবে এক কোটি ৫৯ লাখ ৫২ হাজার ৪২৬ টাকা ও সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে ৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা রয়েছে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ভারতে পালানোর পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২৩৭ মামলা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/05/1730800477-7a811b7bb3b60679ada4131ec1be5d7a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ভারতে পালানোর পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২৩৭ মামলা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/05/1443024" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এদিন দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭-এর বিধি ১৮ মোতাবেক আসাদুজ্জামান খান কামালের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, আসামি আসাদুজ্জামান খান অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রেখে এবং আটটি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৫৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৬ টাকা লেনদেন করে মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তা রূপান্তর বা স্থানান্তর বা হস্তান্তর করেছেন। তিনি অবৈধ পন্থায় অর্জিত সম্পদ অন্যত্র বিক্রয়/হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। এ কারণে তার নামে ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। তার ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করা না গেলে বিচারকালে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।</p> <p>এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান ও কন্যা সাফিয়া তাসনিম খানসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। পরে ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের দপ্তরে দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারের সিপিইউ ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে দুদক। পরে ওই দিন আদালত ওই আবেদনটি মঞ্জুর করেন। ওই  আবেদনে বলা হয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনের বিভিন্ন দপ্তরে বদলি, পদোন্নতি ও জনবল নিয়োগে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধানকারী টিমের অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শেখ হাসিনাকে কেন ভারতে ঠাঁই দেওয়া হলো, প্রশ্ন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/05/1730801620-ebb9b608351209a4fa0989afd9624516.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শেখ হাসিনাকে কেন ভারতে ঠাঁই দেওয়া হলো, প্রশ্ন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/05/1443029" target="_blank"> </a></div> </div> <p><br /> অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস মনির হোসেনের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারে নিয়োগ বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে ঘুষের বিনিময়ে তদবিরসহ আরো অবৈধ লেনদেনসংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ আগস্ট দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর এপিএস মনির হোসেনের ব্যবহৃত রুম নং-৩০৪ থেকে তার ব্যবহৃত কম্পিউটারের সিপিইউটি জব্দ করা হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে কম্পিউটারের সিপিইউয়ের হার্ডডিস্ক ও এসএসডিটি ব্ল্যাংক অবস্থায় পাওয়া যায়। হার্ডডিস্ক ও এসএসডিটি ব্ল্যাংক থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে ঘুষের বিনিময়ে তদবিরসহ আরো অবৈধ লেনদেনসংক্রান্ত তথ্য থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। যা ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করলে উদ্ধার করার সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ওই কম্পিউটারের সিপিইউয়ের হার্ডডিস্ক ও এসএসডির তথ্য উদ্ধারে ফরেনসিক মতামত বিশেষ প্রয়োজন।</p> <p>গত ১৫ সেপ্টেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মোট ৭৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিরা ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে অপরাধলব্ধ এসব সম্পদ অর্জন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।</p> <p>আসাদুজ্জামান খান কামাল ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ঢাকা-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ফের শপথ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অসহযোগ আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে ভারত চলে যান। পরে রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিলে তিনি সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ হারান। এর পর থেকে তিনি অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে আছেন।<br />  </p>