<p>গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েছে। গত তিন মাসে হত্যা, গুম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঢাকায় মামলা হয়েছে প্রায় ৩৪৫টি। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই মামলা ২৩৭টি। আদালত ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।</p> <p>এদিকে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ৩৫৩ জন। এদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, আমলা-পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিক, দলীয় নেতাকর্মী রয়েছেন। মামলার এজাহারে শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের পদধারী ৫৫৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিয়ের ১৫ পর জানলেন স্ত্রী মাদক মামলার আসামি, পাঠালেন ডির্ভোসের চিঠি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/05/1730798250-5e2e737ee95e6332c47dea67df7642bb.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিয়ের ১৫ বছর পর জানলেন স্ত্রী মাদক মামলার আসামি, পাঠালেন ডির্ভোসের চিঠি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/05/1443012" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এসব মামলায় আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। হুকুমদাতা, অর্থদাতা এবং পরিকল্পনাকারী হিসাবে আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক এই তালিকায় রয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মী।</p> <p>এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ট্রেনের আসনে বসতে না দেওয়ায় জুতাপেটা, অতঃপর..." height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/05/1730799515-0331f1beab22fb6d25616fda3a99b07b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ট্রেনের আসনে বসতে না দেওয়ায় জুতাপেটা, অতঃপর...</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/05/1443018" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত মামলা</strong></p> <p>ঢাকায় দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের পদধারী ৫৫৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। পাশাপাশি সাবেক সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে ১৮০টি, আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ৬৭টি, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের বিরুদ্ধে ৬০টি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে ৬৭টি, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের বিরুদ্ধে ৬৪টি, সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ৪১টি, জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ৫৯টি, উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩৭টি, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে ৫৩টি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে ২৯টি, হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে ৩৫টি, দীপু মনির বিরুদ্ধে ২৫টি, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ২০টি, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ২২টি, রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে ২৭টি, শাহাজান খানের বিরুদ্ধে ১৬টি, সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বিরুদ্ধে ১৫টি, সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছে।</p> <p><strong>পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যত মামলা</strong></p> <p>পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ১২৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। এছাড়া সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে ১১৮টি, পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমারের বিরুদ্ধে ১০৮টি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৯৫টি, সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০টি, শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ১১টি, বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধে ৭টি, সাবেক ডিসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা হয়েছে।</p> <p>এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর। তদন্তে যা আসবে সেটা অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।</p> <p>ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চায় মানুষ। দেশের ইতিহাসে প্রকাশ্যে এমন হত্যাকাণ্ডের নজির নেই। এসব মামলার বিচারে সাক্ষীর অভাব হবে না। তাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এসব মামলার বিচার হোক। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ বিচারে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।</p>