<p>খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এস এম কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) দুদক খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।</p> <p>মামলায় সম্পদ বিবরণীতে ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার তথ্য গোপন ও এককোটি ২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কামরুজ্জামান বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার শিবনগর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান শেখের ছেলে।</p> <p>মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার, দৌলতপুর অঞ্চল, কেএমপি, খুলনা) এস এম কামরুজ্জামান (বিপি- ৬৬৮৯০৪২৭৯১) ঢাকা দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করেছেন। তার আয়ে অসঙ্গতি রয়েছে। বিবরণীতে এই পুলিশ কর্মকর্তা ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার সম্পদের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেছেন। এছাড়া ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে নিজ মালিকানা ও ভোগ দখলে রেখেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।</p> <p>পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে এককোটি ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৪৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ ২ কোটি ৯০ লাখ ২১ হাজার ৮৪৬ টাকার সম্পদ প্রদর্শন করেন। কিন্তু অনুসন্ধানকালে এস এম কামরুজ্জামানের নামে ২ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ হাজার ৬৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবরসহ সর্বমোট ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়।<br />  <br /> অনুসন্ধানকালে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, সম্পদ বিবরণী দাখিলকালে এস এম কামরুজ্জামানের ২ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবরসহ সর্বমোট ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। ওই সময়ে তার ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংকে ৪৫ লাখ টাকার দায় ছিল। দায় বাদে তার নীট সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকা। তার অতীত জীবনের সঞ্চয়, বেতন-ভাতার আয়, বাড়ি-ভাড়ার আয়, মাইক্রোবাস ভাড়া হতে আয়, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রাপ্তি ও জমি বিক্রয় বাবদ মূলধনী আয় থেকে মোট গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৭১৮ টাকা। তিনি পারিবারিক ব্যয় ও ঋণ পরিশোধ বাবদ ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৪ টাকা ব্যয় করেন। তার নীট আয়/সঞ্চয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা। ফলে এস এম কামরুজ্জামানের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকা।</p> <p>সুতরাং এস এম কামরুজ্জামান বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে চাকরি করার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজ মালিকানা ও ভোগ দখলে রেখেছেন।</p> <p>মামলার বাদী দুদক খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’</p>