<p style="text-align:justify">বাগেরহাটের ফকিরহাটে দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের ২০টি মহিষের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খামারের মাঠে ও শেডে একে একে ওই মহিষগুলোর মৃত্যু হয়। </p> <p style="text-align:justify">মারা যাওয়া প্রতিটি মহিষ গাভি প্রজাতির এবং তাদের বয়স আনুমানিক পাঁচ থেকে ছয় বছর। খামার কর্তৃপক্ষ এতগুলো মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাতে পারেনি। তবে তাদের ধারণা, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মহিষগুলোর মৃত্যু হতে পারে। মহিষের মৃত্যুর কারণ জানতে একটি মহিষের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য শেড থেকে খামার অভ্যন্তরে লেকের পুকুরসংলগ্ন মাঠে পূর্ণবয়স্ক মহিষগুলোকে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর একের পর এক মহিষের শরীরের কম্পন শুরু হয় এবং ছটফট করতে থাকে। এক পর্যায়ে এক এক করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খামারের শেডে এবং খামার অভ্যন্তরে ২০টি মহিষ মারা যায়। </p> <p style="text-align:justify">মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের ব্যবস্থাপক হাসান হাবিব জানান, সকাল ৭টার দিকে শেড থেকে খামার অভ্যন্তরে মাঠে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মহিষ নেওয়া হয়। সেখানে হঠাৎ করে প্রথমে তারা একটি মহিষকে ছটফট করতে দেখে এবং চিকিৎসা দেওয়ার আগেই ওই মহিষটি মারা যায়। এরপর একের পর এক মহিষ ছটফট করতে করতে মারা যায়। খামারে মহিষ অসুস্থ হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাগেরহাট, খুলনা এবং বরিশালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়। প্রাণিসম্পদ বিভাগের জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা দ্রুত খামারে ছুটে আসেন।</p> <p style="text-align:justify">ব্যবস্থাপক হাসান হাবিব আরো জানান, খামারে ছোট-বড় মিলে ৪৩৭টি মহিষ ছিল। এর মধ্যে ২০টি মারা গেছে। বর্তমানে খামারে ছোট-বড় মিলে ৪১৭টি মহিষ রয়েছে। যে ২০টি মহিষ মারা গেছে, সব কটি গাভি প্রজাতির এবং তাদের বয়স পাঁচ থেকে ছয় বছর হবে।</p> <p style="text-align:justify">বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. সাহেব আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি খামারে ছুটে যান। ধারণা করা হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মহিষগুলোর মৃত্যু হয়েছে। মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে একটি মহিষের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মৃত মহিষগুলো খামারে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদের এই কর্মকর্তা।</p> <p style="text-align:justify">বাগেরহাট জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনোহর চন্দ্র মণ্ডল জানান, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে সে একটি মহিষের ময়নাতদন্ত করেছে। ময়নাতদন্ত করে মহিষের হার্ট, লিভার, কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সেন্ট্রাল ডিজিজ ইনভেস্টিগেশন ল্যাবরেটরিতে (সিডিআইএল) পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।</p> <p style="text-align:justify">স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, খামারের মধ্যে যে পুকুর রয়েছে, সেখানে খামারের কিছু কর্মচারী মাছ চাষ করেন। ওই মাছের জন্য রাখা পচা খাবার খেয়ে মহিষের মৃত্যু হতে পারে। আর মাঝেমধ্যে পচা ও মানহীন খাবার খেয়ে খামারের মহিষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন এবং খামারের ব্যবস্থাপনাকে ভালোভাবে পরিচালনার দাবি তাদের।</p>