<p style="text-align:justify">শেরপুরের নকলায় দাফনের দুই মাস পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে নিহত গার্মেন্টসকর্মী শফিক মিয়ার (২৮) লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকালে আদালতের নির্দেশে উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। </p> <p style="text-align:justify">শফিক স্থানীয় জুলহাস মিয়ার ছেলে। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে শফিক ছিল মেজো। সে সোনারগাঁও থানা এলাকায় মিনা গার্মেন্টসে চাকরি করত। শফিক তিন কন্যা সন্তানের জনক।</p> <p style="text-align:justify">পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বেলা ৪টার দিকে গার্মেন্টস থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেনপাড়ায় হয়ে বাসায় ফিরছিল শফিক।  এ সময় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা  সড়ক অবরোধ করে রাখে। অপরদিক থেকে পুলিশের চালানো গুলিতে শফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ওইদিন রাতে শফিকের লাশ বাড়িতে এনে পরদিন তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে।পরবর্তীতে শফিকের চাচাতো ভাই আবু হানিফ (৪০) বাদী হয়ে গত ২৩ আগস্ট সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। </p> <p style="text-align:justify">মামলায় আসামি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩৫ জনকে। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে কবর থেকে শফিকের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শেরপুর জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওলিয়ার রহমান, নকলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাউল আলমসহ পুলিশ সদস্য, নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিকরা।</p> <p style="text-align:justify">স্থানীয়রা বলছেন, হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য শফিক। তার পরিবারের বাস দারিদ্র সীমার নিচে। তার বাবা জুলহাস মিয়া মাছ বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালাতো। কিছুদিন আগে জুলহাস অসুস্থ হয়ে পড়ে। শফিক পরিবারের হাল ধরতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের চাকরি নেয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে তার পরিবার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ছেলের হারানোর শোকে পাথর শফিকের মা, স্ত্রীসহ অবুঝ ৩ শিশুসন্তান।</p>