<p>সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অন্তত দুই বছর সময় দিতে চায় গণ অধিকার পরিষদ। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর এফডিসিতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর। অনুষ্ঠানে  সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। </p> <p>নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমি মনে করি যে এই সরকারের ন্যূনতম ২ বছর থাকা দরকার। এখন যদি এক বছর ছয় মাসের মধ্যে একটা নির্বাচন হয়, তাহলে আপনাদের কি মনে হয়, বিদ্যমান ব্যবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হবে? এখন যারা ক্ষমতায় আসার মতো সম্ভাব্য দল রয়েছে, আমরা দেখেছি অতীতেও এই দলগুলো ক্ষমতায় ছিল। তাদের কর্মকাণ্ড ও চরিত্র দেখেছি। রাতারাতি তো এই চরিত্রের বদল হবে না।’  </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নৌকা থাকায় নাম পরিবর্তন হতে পারে মন্ত্রণালয়ের" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/28/1727514835-63993f668a7fc09f6f5ecd542a1c356e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নৌকা থাকায় নাম পরিবর্তন হতে পারে মন্ত্রণালয়ের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/28/1429754" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি বলেন, দুই বছরের জন্য একটা জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রয়োজন, যারা রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তন এনে একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবে। এনজিও মার্কা চেহারা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের পরিধি বাড়িয়ে বিভিন্ন দল থেকে প্রতিনিধি নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ সরকার গঠন করা উচিত।</p> <p>সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘বিগত আওয়ামী সরকারের ছাত্রসংগঠন গত ১৫ বছরে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতির নামে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল তা ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। এখন ছাত্ররাজনীতির কথা শুনলেই ভয় হয়। ছাত্রলীগের বিগত সময়ে নানা কর্মকাণ্ড আমাদের শঙ্কিত করে তোলে। ছাত্ররাজনীতির কথা ভাবতেই মনে হয় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণসহ সব ধরনের অপকর্ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নাহিদ ও পলককে নিয়ে যা বললেন সূচনা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/28/1727516241-8477ffd024e1cdcb28530c14e591cfda.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নাহিদ ও পলককে নিয়ে যা বললেন সূচনা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/09/28/1429758" target="_blank"> </a></div> </div> <p>আওয়ামী লীগের দেশ পরিচালনার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হল দখল, সিট দখল, গণরুমে নির্যাতন, র‌্যাগিং অতি সাধারণ কর্মকাণ্ডে পারিণত করেছিল ছাত্রলীগ। ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিছিলে নিয়ে যাওয়া, দলীয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে বাধ্য করা, হলে মাদকের ব্যবসা, বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অস্ত্র ভাড়া দেওয়াসহ বহুমুখী অপকর্মে জড়িত ছিল তৎকালীন ক্ষমতাশীন দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব নিয়োগের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের দেওয়া তালিকা থেকে নিয়োগ দিতে হতো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব উন্নয়নকাজে পার্সেন্টেজ নিত তারা। ঠিকাদারি কাজ কারা পাবে প্রশাসনকে সে নিদের্শনাও ছাত্রলীগ দিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররাজনীতির মুখোশের আড়ালে ক্ষমতা, সম্পদ, টাকা পয়সা, তদবির বাণিজ্যই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই সময়ের ছাত্ররাজনীতিতে। বিগত সরকারের ১৫ বছরের শাসন আমলে ছাত্রলীগ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে অত্যাচার করেছে তার জন্য তাদের সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিসি, প্রো ভিসি, প্রক্টরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন আজ, নেই কোনো আয়োজন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/28/1727498234-c6a975e768b32d55a3c2cd4d71c0ece5.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন আজ, নেই কোনো আয়োজন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/28/1429705" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরো বলেন, ‘কখনো ভাবি ছাত্ররাজনীতি না থাকলেই হয়তো ভালো হয়। আবার ভাবি এই ছাত্ররাই তো ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১, ৯০সহ সব আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে আমাদের অধিকার আদায় করেছে। জুলাই বিপ্লবে হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতা শহীদ হয়ে দেশে নতুন স্বাধীনতার জন্ম দিয়েছে। চোখ হারিয়ে, পঙ্গুত্ব বরণ করে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। সর্বশেষ যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে তার অগ্রভাগে ছিল আমাদের ছাত্ররা। তাহলে কেন আমরা ছাত্ররাজনীতির পক্ষে থাকব না।’ </p> <p>ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ১০ দফা সুপারিশ করেন। </p> <p>সেগুলো হলো—১. উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। ২. শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার না বানানো। ৩. লেজুড়ভিত্তিক ছাত্রসংগঠন বা দলীয় পরিচয়ের পরিবর্তে ব্যক্তি পর্যায়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন করা। ৪. রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচনসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। ৫. বিগত শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, যৌন হয়রানি, নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিচার দ্রুততম সময়ে করার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অনিয়মে যুক্ত প্রশাসনের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন অনুযায়ী বর্তমান প্রশাসনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৬. বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাদা-লাল-নীল-বেগুনি ইত্যাদি নামকরণের মাধ্যমে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা। ৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং, টর্চার সেল, হল দখল, সিট দখল, আদিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস দমনে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হওয়া। ৮. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সব মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের হলে সহাবস্থান নিশ্চিত করা। ৯. শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক বিবেচনার পরিবর্তে যোগ্য মেধাবীদের শিক্ষকতায় আসার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। ১০. আসন্ন বাজেটে উচ্চ শিক্ষা প্রদানকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য গবেষণা, বৃত্তি ও কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো।</p> <p>ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের অন্তরায়’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হযন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, জোসিন্তা জিনিয়া, সাংবাদিক সৈয়দ আব্দুল মুহিত, সাংবাদিক শারমিন নাহার নীরা ও জাফর ইকবাল। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।</p>