<p>রংপুর সিটির সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফার একটি বক্তব্যকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুরের রাজনৈতিক মাঠ। জাপার এই শীর্ষ নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার মধ্য রাতেই বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। </p> <p>মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে একই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদিকে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীতে আবারও বিক্ষোভ করে জাতীয় পার্টি। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। দিনভর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি হলেও দুই পক্ষই তাদের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। </p> <p>সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর সেন্ট্রাল রোডে জাপার দলীয় কার্যালয়ে এক সভায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সদ্য বিদায়ী মেয়র মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। তা নাহলে রংপুরে এই দুই সমন্বয়কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন সাবেক এই মেয়র। এমনকি তাদের টোকাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।</p> <p>সাবেক মেয়র মোস্তাফা ওই সভায় বলেন, ‘আজকে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর মতো দুইটা টোকাইকে যদি মনে করেন বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করছে তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। যেভাবে উত্থান হয়, সেভাবে মানুষের পতনও হয়। আমরা চাই সংস্কার কার্যক্রম সমাপ্ত করার কাজটি জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়েই করবেন।’</p> <p>মোস্তফা আরো বলেন, ‘রংপুরে যা করতে চান তা জাতীয় পার্টির অংশ গ্রহণ ছাড়া আমরা ঘটাতে দিব না। জাতীয় পার্টিকে বাদ রেখে কোনো আলোচনা নয়। জাতীয় পার্টিকে সেই সংলাপে ডাকা না হলে তা করতে দেওয়া হবে না। রংপুরে জাতীয় পার্টি বৃহৎ দল। এখানে আমাদের ছাড়া কোনো আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না। সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম রংপুরে আসতে পারবে না। যদি ফেসবুকে ম্যাসেস দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে যার কাছে যা কিছু আছে, তা নিয়ে রংপুরে এই পার্টি অফিসে চলে আসবেন। আমরা দেখায় দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু।’</p> <p>সাবেক মেয়র মোস্তাফার এই বক্তব্য রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। রাজপথে বিক্ষোভ ছাড়াও ক্ষোভ ঝাড়েন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও। গত রাতে নগরীতে বিক্ষোভ শেষে জাপার এই নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ ও বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানায় তারা।</p> <p>বিক্ষোভ মিছিল থেকে অবিলম্বে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমা চাওয়াসহ বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। নয়তো ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।</p> <p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলেন, ছাত্র-জনতার মুক্তির লড়াই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান। অসংখ্য প্রাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাওয়া সবার মুক্তির প্ল্যাটফরম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহরা চব্বিশ বিপ্লবের নায়ক, তাদের অবাঞ্ছিত করার এখতিয়ার জাতীয় পার্টির নেই।</p> <p>প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুরের প্রতিনিধি ইমরান আহমেদ, মোতাওয়াক্কীল বিল্লাহ শাহ্ ফকির, ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ। শহীদ আবু সাঈদের সহযোদ্ধারাও মেয়রের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দেন।</p> <p>মেয়রের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে সমন্বয়ক সামছুর রহমান সুমন বলেন, এখনো শহীদদের রক্তের দাগ শুকায়নি।</p>