<p>উন্নত চরিত্র ছাড়া নিজে যেমন হেদায়াতপ্রাপ্ত হওয়া সম্ভব নয়, তেমনি অন্যকেও হেদায়াতের দাওয়াত দেওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে মহান আল্লাহ তাঁর রাসুলকে সর্বোত্কৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী করে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নিশ্চয়ই আপনি মহৎ চরিত্রের ওপর রয়েছেন।’ (সুরা : কলাম, আয়াত : ৪)</p> <p>আয়াতে উল্লিখিত, ‘মহৎ চরিত্র’-এর অর্থ নির্ধারণে কয়েকটি মত বর্ণিত আছে।</p> <p>ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মহৎ চরিত্রের অর্থ মহৎ দ্বিন। কেননা, আল্লাহ তাআলার কাছে ইসলাম অপেক্ষা অধিক প্রিয় কোনো দ্বিন নেই। আয়েশা (রা.) বলেন, স্বয়ং কোরআন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ‘মহৎ চরিত্র’। অর্থাৎ পবিত্র কোরআন যেসব উত্তম কর্ম ও চরিত্র শিক্ষা দেয়, তিনি সেসবের বাস্তব নমুনা। আলী (রা.) বলেন, ‘মহৎ চরিত্র’ বলে কোরআনের শিষ্টাচার বোঝানো হয়েছে; অর্থাৎ যেসব শিষ্টাচার কোরআন শিক্ষা দিয়েছে। (কুরতুবী)</p> <p>তা ছাড়া উত্তম চরিত্র মানুষকে আল্লাহর প্রিয় করে তোলে। যার চরিত্র যত সুন্দর, সে আল্লাহর কাছে তত বেশি প্রিয়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ তারা, যারা উত্তম চরিত্রের অধীকারী। (জামিউস সগির, হাদিস : ২১৮)</p> <p>চারিত্রিক উত্কর্ষ অর্জনের মাধ্যমে মানুষ মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হতে পারে। তাদের মহান আল্লাহ এতই ভালোবাসেন যে তাদের দিনের বেলায় রোজা ও রাত জেগে তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের সমপরিমাণ মর্যাদা দান করেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার ভালো চরিত্রের মাধ্যমে (দিনের) সাওম পালনকারী ও (রাতের) তাহাজ্জুদগুজারীর সমান মর্যাদা লাভ করতে পারে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৯৮)</p> <p>সুবহানাল্লাহ! একজন মুমিনের জন্য এটি কতই না বড় পাওয়া। অন্য অনেক হাদিসেও উত্তম চরিত্র অর্জনকারীদের আরো অনেক বিশেষ মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুল নিজেও উত্তম চরিত্রের মানুষদের শ্রেষ্ঠ মানুষ বলে আখ্যায়িত করেছেন।</p> <p>বিশিষ্ট তাবেঈ মাসরুক (রহ.) বলেন, একবার আমরা আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি আমাদের কাছে হাদিস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) স্বভাবগতভাবে অশালীন ছিলেন না এবং তিনি ইচ্ছা করে অশালীন কথা বলতেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র উত্তম, সে-ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৫)</p> <p> </p>