<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খবরে প্রকাশ, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহে বড় ধরনের বৃদ্ধি ঘটেছে। কেউ বলে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লম্ফন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। স্মর্তব্য, ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতনের অভিযোগে বিগত সরকারের বিরুদ্ধে প্রবাসীরা এক জোট হয়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন, যে রেমিট্যান্স আমাদের প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালক বলে পরিসংখ্যানগতভাবে প্রতীয়মান। বাংলাদেশের গ্রামীণ রূপান্তরের অন্যতম খেলোয়াড় বা নিয়ামক হচ্ছে বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ। গ্রামীণ খানার গড়পড়তা আয়ের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আসে শুধু প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ থেকে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যা হোক, বলা হচ্ছে এক থেকে দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি এই সেপ্টেম্বর মাসে পাঠিয়েছেন ২.৪০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টাকার অঙ্কে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। বলা হচ্ছে, দেশের ইতিহাসে কোনো একক মাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাস আয়। সাধারণত যা হয়, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো উৎসব সামনে রেখে দেশে রেমিট্যান্সপ্রবাহ উপচে পড়ে, কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বড় কোনো উৎসব ছাড়া এত বেশি পরিমাণ অর্থ দেশে ঢুকেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, করোনাভাইরাস-সৃষ্ট দুর্যোগের সময় প্রবাসীরা রেকর্ড ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, প্রবাসীরা দেশের গণ-অভ্যুত্থানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বলেই দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের উৎসবে শামিল হচ্ছেন। বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশের এযাবৎকালের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের অন্যতম জ্বালানি হলো রেমিট্যান্স। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু যাঁরা অর্থনীতির চাকায় জ্বালানি জোগান, আমরা কতটুকু তাঁদের প্রাপ্য সম্মান দেখাই? হ্যাঁ, হয়তো দেখাই, তবে কাজির গরুর মতো কাগজে-কলমে, গোয়ালে নয়। প্রবাসীদের প্রতি আচরণ অনেকটাই ওই রকম। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অনারারি প্রফেসরিয়াল ফেলো এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ সম্প্রতি বিষয়টির ওপর আলোকপাত করেছেন। প্রথমত, তিনি মনে করেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, বিশেষত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন এবং নির্গমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উভয় ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রকম অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চাদরে ঢাকা কার্যক্রম বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য ব্যাপক ভোগান্তির কারণ। শ্রমিকদের এয়ারপোর্টে প্রবেশ, ইমিগ্রেশন, লাগেজ নিরাপত্তা ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রেই হয়রানিতে নাস্তানাবুদ হতে হয়। সম্ভবত অশিক্ষিত এবং শ্রমিক শ্রেণির বলে এয়ারপোর্ট কর্মকর্তাদের অশোভন, অমানবিক আচরণ, কিছু না কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। ইদানীং এসব </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনাচার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বন্ধে পদক্ষেপ প্রতিশ্রুত, তবে সত্যিকার অর্থে আচরণে টেকসই পরিবর্তন আনতে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টি দিয়ে মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করছেন তিনি। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেবল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা নয়, জাতীয়ভাবেও প্রয়োজন মানসিকতায় পরিবর্তন। পোশাকশিল্প আমাদের প্রধান রপ্তানি খাত বিবেচনায় সেখানে শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত, আন্তর্জাতিক কমপ্লায়েন্স ও মানোন্নয়ন করতে সরকারি প্রচেষ্টার কমতি নেই। সে তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দ্বিতীয় উৎস সত্ত্বেও কিন্তু প্রবাসী কল্যাণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রলাণয় দুটি বিভিন্নভাবে যেমন বিতর্কিত, ঠিক তেমনি এদের ব্যবস্থাপনায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসগামী শ্রমিকদের জন্য কোনো আস্থার জায়গা নয়। এদের প্রশ্রয়েই দশকের পর দশক চলছে দালালদের দৌরাত্ম্য, যার সঙ্গে আরো যুক্ত প্রবাসগামী শ্রমিকদের নিয়ে বিমান সিন্ডিকেটের টিকিট বাণিজ্য। সেই অর্থে বিমানবন্দরের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি জাতীয় পর্যায়ে প্রবাসী শ্রমিক বিষয়ে সরকারি নীতি ও সেবা প্রদানে কাঠামোগত দুর্বলতা ও সমন্বয়ের ঘাটতির এক রকম প্রতিফলন। এসব কিছুর বিবেচনায়ই হয়তো বর্তমান সরকার প্রবাসীদের ভিআইপি মর্যাদা দেওয়ার কথা বলছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্বিতীয়ত, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বীকৃতি নিশ্চিত করার জন্য তিনটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন এই অধ্যাপক এবং সেই তিনটি বিষয় অনেকটা হুবহু এ রকম। এক. তাঁদের দেশে রেখে যাওয়া সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর মধ্যে এনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা। দুই. তাঁদের বিনিয়োগকৃত <img alt="রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবহেলা করা যাবে না" height="436" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/11-10-2024/Untitled-1.jpg" style="float:left" width="500" />ব্যবসায় উদ্যোগে কর মওকুফ করা এবং এসব উদ্যোগ সফল করতে বাড়তি প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা। তিন. প্রবাসে চাকরি ও মজুরি সংক্রান্ত প্রতারণা ও নির্যাতন মোকাবেলায় আইনি সহযোগিতা। একই সঙ্গে প্রবাসীদের সঠিক নিবন্ধন ও তাঁদের পরিবারের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি স্বচ্ছ ও সর্বজনীন ডাটাবেইস অত্যন্ত জরুরি। প্রত্যাবর্তিত প্রবাসীদের দেশের উন্নয়নে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে সংক্রান্ত পরিকল্পনার কথাও চিন্তায় রেখে ডাটাবেইস থেকে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটির ভিত্তিতে ইস্যু হতে পারে স্মার্ট কার্ড, যেখানে সব ধরনের শনাক্তকরণ তথ্য থাকবে। প্রবাসে কর্মরত সময়ে নির্যাতনকারী মালিকপক্ষ কিংবা দালালরা শ্রমিকদের পাসপোর্ট নিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে নিবন্ধিত শ্রমিকদের জন্য স্মার্ট কার্ড কিছুটা আইনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চতুর্থত, গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে প্রশিক্ষণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিকদের আয় অন্য শ্রমিকদের চেয়ে বেশি। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রমবাজার ধরে রাখতে কিংবা নতুন বাজারে প্রবেশ করতে গেলে দক্ষ জনশক্তির কোনো বিকল্প নেই। লো ভ্যালু-অ্যাডেড থেকে হাই ভ্যালু-অ্যাডেড রপ্তানি খাতে উত্তরণের এ রকম লক্ষ্য আমাদের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের জন্যও সত্য। কিন্তু জনশক্তি খাতে নীতি, নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিন ক্ষেত্রেই ঘাটতি। আগামী দিনগুলোতে এশিয়ার উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে কৃষি ও শিল্প; দুই খাতেই বিভিন্ন পেশায় দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা বাড়বে। আসিয়ান অঞ্চলের শ্রমিকদের এ ধরনের দক্ষতা থাকায় ২০২২ সালে তারা অস্ট্রেলিয়ার কৃষি খাতে একটি আকর্ষণীয় স্কিমের জন্য বিবেচ্য হয়েছে। কানাডায় একই রকম সুযোগ আছে এবং আসবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পঞ্চমত, এবং বলা বাহুল্য, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে আমাদের শিক্ষার মান সর্বজনীনভাবে নিম্ন বিধায় কর্মবাজারে নতুন দক্ষতা অর্জন ও টেকসই করতে সম্পূরক সাক্ষরতার বিকল্প নেই। মোটকথা, শ্রমিক ও শিক্ষা অর্থনীতিতে প্রাজ্ঞ নিয়াজ আসাদুল্লাহ মনে করেন, সুনির্দিষ্ট ও বাজারমুখী কারিগরি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার পাশাপাশি স্কুল শিক্ষা পর্যায়ে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। এবং তাহলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কর্মবাজারে আমাদের শ্রমিকরা বাংলাদেশকে একটি দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত করতে পারেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব শেষে, ষাটের দশক থেকে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে নাড়াচাড়া হলেও অদ্যাবধি এর উত্কর্ষ উন্নয়ন দৃশ্যমান নয়। উপরন্তু কারিগরি শিক্ষা নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে নীতিনির্ধারক ও রাজনীতিবিদ অক্ষমতার পরিচয় দিয়ে কেবল সাধারণ উচ্চশিক্ষার ওপর ভর করেছেন। অথচ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুভস্য শীঘ্রম</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হলে হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিসহ বিশ্বের অনেক সেবা এবং শিল্প খাতে আমাদের কারিগরি গ্র্যাজুয়েটরা অবদান রাখতে পারতেন। গবেষক মনে করেন, কেবল অপরিকল্পিত প্রসার এবং নিম্নমান</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই দুই কারণে বাংলাদেশ কারিগরি গ্র্যাজুয়েট রপ্তানির দেশ হিসেবে পরিচিত হতে পারেনি। দুঃখ করে তিনি বলছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জার্মানি যেখানে উচ্চমানের কারিগরি শিক্ষিত কর্মী দিয়ে শিল্প খাতের ব্যাপক অর্জন টেকসই করেছে, আমাদের কারিগরি শিক্ষা না পারছে দেশের চাহিদা মেটাতে, না পারছে বিদেশে শ্রম রপ্তানি করতে। একইভাবে আমরা ব্যর্থ মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে মাদরাসা শিক্ষিত, আরবি ভাষায় দক্ষ গ্র্যাজুয়েট রপ্তানি করতে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারত কিংবা অন্যান্য দেশ থেকে যাঁরা আমাদের পোশাকশিল্পে কাজ করছেন, তাঁরা ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত। এক অর্থে এটি আমাদের ব্যবসায় প্রশাসন শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা। এত বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রিধারী ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট থাকা সত্ত্বেও কেন আমাদের পোশাকশিল্প খাত ভারতীয় ব্যবস্থাপকনির্ভর? এত বিজনেস স্কুলের ভূমিকা কী? আমাদের বিশ্বমানের পোশাক খাত আছে। অথচ কেন আমরা সর্বজনীন মানের প্রশাসনে দক্ষ কর্মশক্তি তৈরি করতে ব্যর্থ?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের একটি গ্লোবাল ট্যালেন্টপুল আছে। তাদের নিয়েও সরকারের করণীয় আছে। দেশে বিভিন্ন খাতে তাদের শিক্ষা ও দক্ষতা কাজে লাগানো যায়। মাইগ্রেন্ট এন্টারপ্রেনারশিপ বলে একটি কথা আছে। অর্থাৎ প্রবাসীদের দেশে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজে লাগানো। যেমন আপনি যাচ্ছেন কর্মী হিসেবে, বেরোচ্ছেন উদ্যোক্তা হয়ে। অর্থাৎ বিদেশি শ্রমবাজারে কর্মী হিসেবে ঢুকছেন, দেশে এসে হলেন উদ্যোক্তা। এমন সুযোগ পেলে শ্রমিকরাও উজ্জীবিত হতে পারেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৩. </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কথা পরিষ্কার। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম বৃহৎ অংশীদার বিদেশে কর্মরত শ্রমিক। তাঁদের পাঠানো বছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভে যায়, মোট আমদানি ব্যয়ের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মেটায়। তাঁদের বেশির ভাগ আধাশিক্ষিত কিংবা মূর্খ, প্রশিক্ষণের অভাব নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেয় খুব কম মজুরির বিনিময়ে। বিমানবন্দরে প্লেনে ওঠা এবং নামার আগে যে ফরমটি পূরণ করতে হয়, তা-ও অন্যকে দিয়ে করাতে হয়। ঢাকায় ঢোকার পর প্লেন নামার আগে তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে দেশের মাটি, আকাশ, প্রকৃতি দেখার জন্য। তাদের এই হুমড়ি খাওয়া অবস্থা নিয়ে এক বিখ্যাত অধ্যাপক এক অনুষ্ঠানে একবার বেশ রসালো কৌতুক (অমানবিক অবশ্যই) করে হাসির রোল সৃষ্টি করেছিলেন। অথচ অধ্যাপক মহোদয় ভুলে গিয়েছিলেন, যে প্লেনে তিনি দেশে ফিরছিলেন, ওই প্লেনটি এই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে কেনা। তাঁরা দালালের খপ্পরে পড়ে অনেক ব্যয় করে বিদেশে যান, অথচ খরচ কমানোর কিংবা বিড়ম্বনা দূর করার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা আশা করব, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য ব্যয়ে বিদেশে যাওয়া, বিমানবন্দরে প্রাধিকার ভিত্তিতে তাঁদের প্রতি আচরণ এবং যাওয়ার আগে তাঁদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রিজার্ভ যখন তলানিতে, তখন দুই হাত পেতে তাঁদের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা ভিক্ষা চেয়েছিলাম; তাঁরা সায় দিয়ে এক মাসেই ২.৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন, যার বেশির ভাগ আসে মধ্যপ্রাচ্য এবং উপসাগরীয় দেশে থাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে। আমরা যেন তাঁদের প্রতি আমাদের কর্তব্যে অবহেলা না করি। </span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বি. দ্র. বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের বা সবার সমস্যা সমাধানে সম্প্রতি ঘোষিত প্রতিশ্রুতি এবং পদক্ষেপ কিছুটা হলেও আশার আলো জাগায়। </span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : অর্থনীতিবিদ। সাবেক উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p>