<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলা অডিটরিয়ামে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ক্ষুদ্রঋণ নিতে এসেছেন প্রায় পাঁচ শর মতো নারী। অতিথিদের অপেক্ষায় বসেছিলেন সবাই। অতিথিরা এলেন, মঞ্চে আসন গ্রহণ করলেন। সংবাদ সংগ্রহের জন্য অনেক সাংবাদিকও এসেছেন। আমরা ঢাকা থেকে কয়েকজনের টিম সেখানে উপস্থিত হয়েছি। একেবারে সামনের সারিতে দুই ছেলেকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে মনমরা হয়ে বসে আছেন এক দুঃখিনী মা। দেখে মনে হলো তিনি কাঁদছেন। খানিকটা আগ্রহ নিয়েই এগিয়ে গেলাম। পাশে বসে মন খারাপের কারণ জানতে চাইলাম। হু হু করে কেঁদে উঠলেন সেই মা। নাম তাঁর মর্জিনা। বাশগাড়ী গ্রামে তাঁদের বাড়ি। জানালেন, কিছুদিন আগেই স্বামীকে হারিয়েছেন। বাবা হারিয়ে এখন এতিম সন্তান দুটি মাকে ছাড়া কিছু বোঝে না। মাও অতি কষ্টে তাদের আগলে রেখেছেন। মাস ছয়েক আগে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দুটি ছাগল কিনেছিলেন। স্বামী অটো চালাতেন। বড় ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোটটিকে সামনের বছর স্কুলে দেবেন। এমনই নানা স্বপ্ন নিয়ে ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার। হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন মর্জিনা। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। অপারেশন করাতে হবে। অনেক টাকার প্রয়োজন। চিন্তিত স্বামী নানা চেষ্টা করে টাকা জোগাড় করতে থাকলেন, কিন্তু টাকা জোগাড়ের ধকল সামলাতে পারলেন না মর্জিনার স্বামী। চিন্তায় চিন্তায় অস্থির হয়ে স্ট্রোক করলেন। চিকিৎসা করানোর মতো সময়ই দিলেন না। মর্জিনা ও দুই ছেলেকে রেখে পরপারে পাড়ি জমালেন তিনি। এদিকে হাসপাতালের বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা নেই মর্জিনার। স্বামীর লাশটি পর্যন্ত দেখতে পারেননি এই দুঃখিনী নারী। সে কারণেই তাঁর চোখের পানি আর কমে না। দুই ছেলেকে জড়িয়ে স্বামীর কথা মনে করেই কাঁদছিলেন তিনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মর্জিনার শত মন খারাপের মাঝেও কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। স্বামী মারা যাওয়ার পর মর্জিনার নেওয়া ঋণের টাকা মওকুফ করে দিয়েছে দেশসেরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় পরিচালিত বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। একটি বা দুটি কিস্তি তিনি দিতে পেরেছিলেন। বাকি টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। শুধু তা-ই নয়, দুই ছেলেকে নিয়ে প্রাথমিকভাবে চলার জন্য কিছু আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। মর্জিনা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন থেকে ঋণ নিয়ে যে ছাগল কিনছিলাম, সেখান থেকে একটি ছাগল বাচ্চা দিছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর খুবই অসহায় হইছিলাম। কী করে ঋণের টাকা পরিশোধ করব, খুব চিন্তায় ছিলাম। বসুন্ধরার স্যারেরা আমার টাকা মাফ করে দিছেন। কিছু টাকা সহায়তা দিছেন। এখন আমি দুই পোলা নিয়া চলতে পারব। আল্লাহর রহমতে আর সমস্যা হবে না। বসুন্ধরার জন্য দোয়া করি। আল্লায় হেগোরে ভালো রাহুক।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>