<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তরের দুই জেলায় চলতি মৌসুমে খরা ও আগাম বন্যায় কমে গেছে পাটের উৎপাদন। সোনালি আঁশখ্যাত পাটের রং হয়েছে বিবর্ণ। পাশাপাশি পাট চাষে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন কৃষকরা। উত্তরের যে জেলাগুলোতে পাট বেশি চাষ হয় তার মধ্যে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা অন্যতম। তবে কৃষকরা বলছেন, বন্যা ও খরার কারণে তাঁদের জেলায় পাট উৎপাদন কমেছে। তাঁরা পাচ্ছেন না ন্যায্য দাম। প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে গড়ে দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। কিছু পাট বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ১০০ টাকায়। তবে বন্যার কারণে এই পাটের উৎপাদন অনেক কম। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারি তথ্য-উপাত্ত বলছে, চলতি বছরের জুলাই মাসের বন্যায় ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর অববাহিকার কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার পাঁচ হাজার ১৯.৩১ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষকের উৎপাদন কমবে ২০ হাজার ২৮৩ টন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদন বলছে, উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে বন্যায় কুড়িগ্রামে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাটক্ষেতের। জেলার ২১ হাজার ৩৪৬ জন কৃষক পাট চাষ করেছেন। তাঁদের প্রায় দুই হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমির পাট নষ্ট হয়েছে, যার আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর জেলার পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়েছে ১৭ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে। কুড়িগ্রামে মোট দুই জাতের পাটের চাষ হয়। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছর জেলায় ১৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। অধিকাংশ পাট দেশি ও তোষা জাতের।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার কুড়িগ্রাম জেলার যাত্রাপুর হাটে গিয়ে দেখা যায় পাট কেনাবেচার চিত্র। তবে হাটে গত মৌসুমের তুলনায় পাটের আমদানি কম। জেলার অন্যতম এই প্রাচীন হাটে মাদারগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে রৌমারী উপজেলার মানুষজন আসে পাট কেনাবেচা করতে। এ ছাড়া আইড়মারি, বথুয়াতলী, সাহেবের আলগা, মেকুরের আলগা, দইখাওয়া, তালপট্টি, পোড়ারচরসহ ৫০টি চরের মানুষ আসে এখানে পাট বিক্রি করতে। হাটে আসা কৃষকরা বলছেন, বন্যার কারণে তাঁদের পাটের আবাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। গত মৌসুমে এই হাটে যেখানে এক হাজার থেকে দুই হাজার মণ পাট উঠত, সে জায়গায় এবার পাট উঠেছে ১০০ মণের কাছাকাছি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাটে আসা শাহিনুর নামের এক কৃষক কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বন্যার আগে যে পাটটা আমি তুলতে পেরেছি তার দাম এখন বলছে দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা (প্রতি মণ)। আর বন্যার ক্ষতির পর যে পাট তুলতে পেরেছি তার দাম বলছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশরাফ আলীর নামের আরেক ব্যবসায়ী কালের কণ্ঠকে বলেন, গত বছরও এ হাটে এই সময় দুই হাজার থেকে তিন হাজার মণ পাট আমদানি হয়েছিল। এ বছর হাটে ২০০ থেকে ৩০০ মণ পাট উঠেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বন্যায় লালমনিরহাট ও গাইবান্ধার তুলনায় কুড়িগ্রাম জেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় পাট চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা পাঠিয়েছি মন্ত্রণালয়ে। সরকার যদি পুনর্বাসন প্রকল্প নেয়, তাহলে তারা অগ্রাধিকার পাবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাইবান্ধায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পাট চাষে আগ্রহ কমছে পাট চাষিদের। পরিশ্রমের তুলনায় ভালো দাম না মেলায় এই পরিস্থিতি। জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকার চরের কৃষক আবদুল গফুর মিয়া জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে তোষা পাট চাষ করেছেন। বাজারে মানভেদে দুই হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার টাকা দাম দিচ্ছেন পাট ব্যবসায়ীরা। অপেক্ষাকৃত কম দামে দেশি জাতের পাট বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকায়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেলকার পাট ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, একসময় শুধু যাঁরা পাট ব্যবসা করতেন তাঁরা এখন মৌসুমি ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন। পাট চাষে চাষিদের আগ্রহী করে তুলতে হলে সরকারি বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে প্রণোদনা দিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি বছর জেলায় ১৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে, যা গতবারের তুলনায় কিছুটা কম। তিনি জানান, রোপণের সময় প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবার কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ কমেছে।</span></span></span></span></p> <p> </p>