<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬১৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেল। হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেলেও পুলিশ সূত্র নিহতদের বিষয়ে এখনো কোনো সঠিক হিসাব জানায়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং তার পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়-ইউএনএইচসিআর। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলন-বিক্ষোভ ও অস্থিতিশীলতা নিয়ে গতকাল প্রকাশ করা  প্রাথমিক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে গতকাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা (বর্তমানে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বাংলাদেশে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনীর প্রাণঘাতী অস্ত্রের গুলিতে ঢাকা ও বিভিন্ন জেলায় এসব মানুষ হতাহত হয়, যাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী ও তরুণ। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে আহত দুই শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের অনেকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছে। তবে ১৬৩ জন এখনো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আরো ৫ জনের মৃত্যু </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার আইনজীবী মো. আবুল কালাম (৫৬), উত্তরার অটোরিকশাচালক জসিম উদ্দিন সরকার (২৫), নোয়াখালীর মো. আসিফ (২৬), চুয়াডাঙ্গার উজ্জ্বল হোসেন (৩০) ও বরগুনার আল আমিন হোসেন (২৭)। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের মৃত্যু হয়। তাঁদের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন ধানমণ্ডি, শাহবাগ থানা ও ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটে। এই সহিংসতায় মো. আবুল কালাম, জসিম উদ্দিন সরকার, মো. আসিফ, উজ্জ্বল হোসেন ও আল আমিন হোসেন আহত হন। সেই সময় থেকে তাঁরা রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। পাঁচজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নিহতদের মধ্যে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে হামলার শিকার হন আইনজীবী মো. আবুল কালাম। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ধানমণ্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল পৌনে ৮টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আইনজীবী মো. আবুল কালামের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন ধানমণ্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আকিব নুর। তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মো. আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার কাজীরগাঁও গ্রামে। তিনি সেই গ্রামের বাসিন্দা মৃত ছৈয়দুর রহমানের ছেলে। কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা এলাকায় থাকতেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায় গুলিতে আহত হন অটোরিকশাচালক মো. জসিম উদ্দিন। আশপাশের লোকজন জসিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জসিম উদ্দিনের পরিচয় নিশ্চিত করেন জসিম উদ্দিনের স্ত্রী বানেছা আক্তার। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জসিম উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম শাহরিয়ার জীবন স্টালিন। তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জসিম উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার নয়ানগর গ্রামে। তিনি সেই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায় থাকতেন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ৫ আগস্ট মো. আবুল কালাম ও জসিম উদ্দিনের মতো নোয়াখালীতে গুলিবিদ্ধ হন মো. আসিফ। তিনি ৫ আগস্ট বিকেলে নোয়াখালী সোনাইমুড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় আইসিইউতে মারা যান তিনি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মো. আসিফের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহামেদ। তিনি বলেন, মো. আসিফের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার মীর আলীপুর গ্রামে। তিনি সেই গ্রামের বাসিন্দা মোরশেদ আলমের ছেলে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ৫ আগস্টের সহিংসতায় আহত হওয়া আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন চুয়াডাঙ্গার উজ্জ্বল হোসেন ও বরগুনার আল আমিন হোসেন। এঁরা দুজনই দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে দুজনেরই মৃত্যু হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই দুজনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, উজ্জ্বল হোসেনের গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামে। আল আমিন হোসেনের গ্রামের বাড়ি যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার আফরা গ্রামে। তিনি সেই গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের ছেলে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মর্গে এখনো ২০ মরদেহ</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নিহতদের মধ্যে ২০ জনের মরদেহ গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর দুটি হাসপাতালের তিনটি মর্গে পড়ে থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মরদেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় পরিচয় বোঝা যাচ্ছে না জানিয়ে গতকাল বিকেলে হাসপাতাল সূত্র জানায়, থানার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এসব লাশের সুরতহাল করা যাচ্ছে না। মরদেহ পচে ফুলে গেছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের খোঁজে মর্গে আসেনি কেউ।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মর্গ সূত্র জানায়, এসব লাশের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে আটটি, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ৯টি এবং শেরেবাংলানগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তিনটি মরদেহ রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>