<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নবীজির প্রিয় সাহাবি সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর মেয়ের নামও ছিল আয়েশা। তিনি উসমান (রা.)-এর খিলাফতের শেষ দিকে মদিনা মুনাওয়ারায় জন্মগ্রহণ করেন। আয়েশা বিনতে সাআদ (রহ.) ছিলেন তাবেঈ যুগের ইলমপিপাসু একজন মহীয়সী নারী। হাদিস সংরক্ষণ ও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিত্ব। ইবনে হিব্বান (রহ.) তাঁকে সিকাহ তথা নির্ভরযোগ্য হাদিস বর্ণনাকারীদের মধ্যে গণ্য করেছেন। মাজহাবের অন্যতম ইমাম মালেক বিন আনাস (রহ.)-এর কাছেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতার বিশেষ স্থান ছিল। কোনো কোনো বর্ণনা মতে, ইমাম মালেক (রহ.) নারীদের মধ্যে শুধু তাঁর বর্ণিত হাদিসগুলোই গ্রহণ করেছেন। সে সময়ের জগদ্বিখ্যাত হাদিসের ইমাম আইয়ুব সাখতিয়ানি, ছখর বিন জুয়াইরিয়া, জুয়াইদ বিন আব্দুর রহমান, উবায়দা বিন নাবিলসহ অসংখ্য হাদিসবিশারদ ছিলেন তাঁর বিশেষ ছাত্র। সহিহ বুখারি, সুনানে আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ি ও মুসনাদে আহমাদেও তাঁর বর্ণনাকৃত হাদিস আছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নবীজির সম্মানিতা স্ত্রীদের মধ্যে থেকে ছয়জন উম্মাহাতুল মুমিনিনের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ। তাঁরা তাঁকে যথেষ্ট ভালোবাসতেন, খুব স্নেহ করতেন। এমনকি তাঁর জন্য বরকতের দোয়া করতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ের বিধি-বিধান শিক্ষা দিতেন। এ কথা তিনি নিজেই বর্ণনা করেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি ছয়জন উম্মাহাতুল মুমিনিন (রা.)-কে পেয়েছি। আমি প্রায়ই তাঁদের কাছে যাতায়াত করতাম। সেখানে উপস্থিত সব মহিলা সাদা পোশাক পরিধান করতেন। আর আমি জমকালো পোশাকে সজ্জিত হয়ে আসতাম। কিন্তু তাঁরা এ জন্য আমাকে কোনোরূপ তিরস্কার করতেন না। একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এসব কী? তিনি বললেন, স্বর্ণের হার এবং স্বর্ণের কারুকাজ খচিত কাপড়। কিন্তু এ জন্য তাঁদের কেউ তাঁকে ভর্ত্সনা করেননি। কারণ সে সময় নারীদের ইলম অর্জনের প্রধান কেন্দ্রই ছিলেন উম্মাহাতুল মুমিনিনরা, বিশেষ করে আম্মাজান আয়েশা (রা.)-এর ইলম, হিফজ, বুঝশক্তির কথা তো সুপ্রসিদ্ধ। আয়েশা বিনতে সাআদ তাঁদের থেকে ইলমের নুর লাভের পাশাপাশি নিজের পিতা সাহাবি সাআদ বিন আবি ওয়াক্কাসসহ অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম থেকেও ইলম অর্জন করেন। নারীদের মধ্যে আয়েশা ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি তাঁর পিতা থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। নিজ পিতা থেকে তিনি প্রায় ২৭০টি হাদিস বর্ণনা করেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মূলত ফিন্দ নামের এই গোলাম অবাধ্যতা, অসদাচরণ ও নানা রকম অসৎ কাজের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। অন্যদিকে সাআদ ছিলেন পিতার দিক থেকে আবদুর রহমান বিন আউফ (রা.) এবং মায়ের দিক থেকে সাআদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর নাতি, বিখ্যাত আলেম, একনিষ্ঠ আবেদ ও দানশীল ব্যক্তি। তা সত্ত্বেও আয়েশা বিনতে সাআদ (রহ.) তাঁর এই ভুলকেও ছাড় দেননি। কারণ দাস-দাসীদের হক অগ্রগণ্য।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সোনালি যুগের মহীয়সী নারী মুহাদ্দিস আয়েশা বিনতে সাআদ (রা.) ১১৭ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন মুহাজির সন্তানদের মধ্যে সর্বশেষ নারী। এ সম্পর্কে তিনি নিজেই বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আল্লাহর শপথ, এই মুহূর্তে পৃথিবীতে কোনো মুহাজিরের মেয়ে বা মুহাজিরা হিসেবে আমি ছাড়া আর কেউ অবশিষ্ট নেই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (আল ওয়াফি ১৬/১৬৭,৩৪৭; তবাকাতুল কুবরা ৮/৩৪১; আত তারিখুল আওসাত ১/২৫০)</span></span></span></span></span></p> <p> </p>