<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিভ্রাট দিয়ে দিনের শুরু। উইয়ান মুল্ডারের করা চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে মমিনুল হকের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলেন না। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে রিভিউ নিলেন। সেটির নিষ্পত্তি করতে গিয়ে প্রযুক্তির অর্ধেক ব্যবহার করা গেল, বাকি অর্ধেকটা নয়। আলট্রা এজের পর বল ট্র্যাকিং আর করাই গেল না। ওই সময়ে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ইন্টারনেট সংযোগ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সে যাত্রায় মমিনুল বেঁচে যান। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই বাঁহাতি ব্যাটার বাঁচেন, কিন্তু বেশিক্ষণের জন্য নয়। ভারতের কানপুরে খেলা আগের টেস্টে সেঞ্চুরি করা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এক বল পরই নিজের উইকেট উপহার দিয়ে আসেন। অবশ্য আরেক বিভ্রাটে ততক্ষণে স্বাগতিক দলের ব্যাটারদের ওপরে চড়ে বসার উপাদানও পেয়ে গেছেন প্রোটিয়া পেসাররা। মিরপুরের উইকেট স্পিন স্বর্গ হবে জেনেই খেলতে নামা কাগিসো রাবাদারা আরো নিশ্চিত হন, যখন দেখেন বাংলাদেশের একাদশে তিন স্পিনারের সঙ্গে পেসার মাত্র একজন। যদিও খেলা শুরু হতেই দেখা যায় যে উইকেটে বাউন্স আছে এবং পেসাররা মুভমেন্টও পাচ্ছেন। অপ্রত্যাশিত এই প্রাপ্তিযোগে রাবাদা-মুল্ডাররা প্রত্যাশিত দারুণ বোলিং করতে থাকেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অবশ্য শুরু থেকে স্বাগতিকদের লাগাতার উইকেট হারাতে থাকায় প্রোটিয়া পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের অবদান অবশ্য সামান্যই। ভালো বোলিংয়ে ছড়ানো আতঙ্ক থেকে টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটাররা বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে আসছিলেন কি না, সেটিও এক প্রশ্ন। বাউন্স আর মুভমেন্ট মিলিয়ে রাবাদা-মুল্ডাররা নাভিশ্বাস তুলে ছাড়ার পর কেশব মহারাজ বোলিংয়ে এসে দেখেন তাঁর বলও ঘুরছে। শিকারযজ্ঞে যোগ দিতে এই বাঁহাতি স্পিনারের সময় লাগে না তাই। আর মাহমুদুল হাসানের ৩০ রানই যেখানে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস এবং কোনো জুটিও ৩০ ছোঁয় না, তখন সেই দল আর কত দূর যাবে? বাংলাদেশও যায়নি। ১০৬ রানেই শেষ হয়ে যায় তাদের প্রথম ইনিংস। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কিন্তু প্রথম দিনেই স্পিনাররা টার্ন পেতে শুরু করায় প্রোটিয়াদের জন্যও দুর্ভোগ দ্রুতই ঘনিয়ে আনেন তাইজুল ইসলাম। সাকিব আল হাসান যত দিন ছিলেন, অনেক সময়ই কম্বিনেশনের কারণে একাদশে জায়গা হারানো বাঁহাতি স্পিনারের জন্য এই টেস্ট নতুন শুরুই। সাকিবকে ছাড়া বাংলাদেশের টেস্টে পথ চলার শুরুতে তিনি এমন ঝলসালেন যে স্বাগতিকদের পোড়ানোর পর নিজেরাও অক্ষত নয় প্রোটিয়ারা। সাকিবকে (৫৪ টেস্টে) পেরিয়ে দ্রুততম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছানোর দিন তাইজুল (৪৮ টেস্টে) টপাটপ উইকেট তুলে নিতে থাকেন। ত্রয়োদশবারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া বোলারের সৌজন্যে পিছিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ তাই খুব পিছিয়েও নেই। প্রথম দিন শেষে ১৪০ রান তুলতেই ৬ উইকেট খুইয়ে ফেলা সফরকারীরা এগিয়ে মাত্র ৩৪ রানে। বিকেলের সংবাদ সম্মেলনে তাইজুলের বলা কথাটি তাই প্রোটিয়াদের জন্য সতর্কবার্তা হওয়ার মতোই, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রথম দিনেই স্পিনাররা যেমন টার্ন পেয়েছে, বুঝতেই পারছেন...।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনারের পুরো কথা না শুনলেও চলছে। আর প্রথম দিনেই রেকর্ড ১৬ উইকেট পড়ার পর এই টেস্টের আয়ুষ্কালও সংক্ষিপ্তই হওয়ার কথা। হুম, রেকর্ডই। গত ডিসেম্বরে মিরপুরে হওয়া বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সর্বশেষ টেস্টের প্রথম দিনে ১৫ উইকেট পড়েছিল। পরের টেস্টেই ভেঙে গেল সেই রেকর্ড। রেকর্ডের পাতায় আরেকটি পরিবর্তন আনলেন রাবাদাও। এই টেস্ট তিনি শুরু করেছিলেন ২৯৯ উইকেট নিয়ে। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে মুশফিকুর রহিমকে (১১) বোল্ড করে এই ফাস্ট বোলার ৩০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছেন রেকর্ডের সদ্য সাবেক মালিক ওয়াকার ইউনিসের চেয়ে ৭৮৫ বল কম করে। অবশ্য ভালো বোলিংয়ের তুলনায় একটু বিলম্বেই সাফল্য ধরা দিয়েছে রাবাদাকে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এর আগেই মিডিয়াম পেসার মুল্ডারকে (৩/২২) সাফল্যে ভাসিয়েছেন সাদমান ইসলাম (০), মমিনুল (৪) এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন (৭)। দ্বিতীয় স্পেলে মুশফিককে ধরে শুরু করা রাবাদার (৩/২৬) তুলে নিতে সময় লাগেনি লিটন কুমার দাসকেও (১)। এই শিকারে অবশ্য চতুর্থ স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নেওয়া ট্রিস্টান স্টাবসের অবদানও কম নয়। দুই পেসার মিলে স্বাগতিকদের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার পর কেশব মহারাজ (৩/৩৪) ছাঁটতে থাকেন লেজ। দিনের শেষে অবশ্য প্রোটিয়াদের লেজ প্রায় উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তাইজুল (৫/৪৯)। দারুণ ডেলিভারিতে হাসান মাহমুদ প্রোটিয়া অধিনায়ক মারক্রামকে বোল্ড করে শুরুর ধাক্কা দেওয়ার পর থেকে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনের বাকি সময়টা শুধুই তাইজুল রাজত্বের, যে রাজত্ব পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশকেও রাজ্য জয়ের সম্ভাবনা দেখিয়ে রাখছে!            </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>