<p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের ছাত্র সুইতং খুমী। ১৫ জানুয়ারি স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। সেখানে সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ৩.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে নিজের জাতিগোষ্ঠীর একটা অর্জনের সঙ্গে নিজের নাম লেখালেন সুইতং। কারণ বাংলাদেশে তাঁর আগে খুমী সম্প্রদায়ের আর কেউ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হতে পারেননি। তাঁর আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো খুমীর ভর্তি হওয়ারও নজির নেই। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="খুমীদের প্রথম স্নাতক" height="94" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/january/20-01-2024/98900.jpg" style="float:left" width="329" />তবে নিজ জনগোষ্ঠীর উদাহরণ হতে গিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে দুর্গম পাহাড়ে বেড়ে ওঠা এই তরুণকে। চার ভাই-বোনের মধ্যে সুইতং সবার বড়। তাঁর ছোট ভাইটি এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। এক বোন এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবেন। সবার ছোট বোন এখন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বাবা স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। জুম চাষও করতেন। তবু সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভাবে ভরা দুর্গম গ্রাম </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম তারাছা ইউনিয়নের বাসিন্দা সুইতং। তাঁর গ্রামের নাম মংঞোপাড়া। বান্দরবান শহর থেকে গ্রামটির দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি। সরাসরি সড়ক যোগাযোগবিহীন গ্রাম মংঞোপাড়া। কিছু সড়কপথের পর সাঙ্গু নদী ও পরে জঙ্গলঘেরা পাহাড় বেয়ে সুইতংদের বাড়িতে যেতে হয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক কিছুই নেই সুইতংদের গ্রামে। তার তালিকায় আছে সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ লাইন, মোবাইল নেটওয়ার্ক, হাসপাতাল ও স্কুল। তবে স্বপ্নের অভাব ছিল না বাবা নয়লো খুমী ও মা লিংসাই খুমীর। অভাব ছিল এই সংসারের বারো মাসের গল্প। বাবা নয়লো খুমী নিজে বেশিদূর পড়াশোনা করতে না পারলেও চেয়েছিলেন সন্তানদের যত দূর সম্ভব পড়াবেন। সুইতং যখন সবে পাঁচে পড়েছে, তখন বাবা একদিন খবর পেলেন লামার কোয়ান্টাম শিশু কাননে (বর্তমানে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ) নতুন শিক্ষার্থী নেবে। ভর্তি পরীক্ষায় টিকলে বেতন লাগবে না। ছেলে সুইতংকে সেভাবেই প্রস্তুত করলেন তিনি। সুইতং ভালোভাবেই উতরে গেলেন ভর্তি পরীক্ষার বৈতরণী। শুরু হলো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাবাকে হারিয়ে সংসার সমুদ্রে</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিশু সুইতং স্কুলে ঢুকেই প্রথম ধাক্কা খেয়েছিলেন ভাষা নিয়ে। শিক্ষকদের কথা কিছুই বুঝতেন না। এমনকি খিদে বা পিপাসা লাগার কথাও বোঝাতে পারতেন না। তখন ইশারা-ইঙ্গিতে বোঝাতেন। ধীরে ধীরে ভাষাগত এই সমস্যা কেটে গেল। বাড়ি থেকে দূরে স্কুলের নিয়ম-কানুনের জীবনে প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও মানিয়ে নিলেন। দীর্ঘস্থায়ী হলো না সেই স্বস্তির সময়। জেএসসি পরীক্ষার সময় মাথার ওপর থেকে হারালেন বাবার ছায়া।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে যেন অথৈই সাগরে পড়লেন মা লিংসাই খুমী। বেসরকারি স্কুলে পড়া তিন সন্তানের সেখানে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেল। পরে তিনজনকেই ভর্তি করালেন সরকারি স্কুলে। সংসার চালাতে লিংসাই খুমী জুমের কাজ বা চাদর ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুমিনিনা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বোনার কাজ করতেন। কিন্তু সেই আয়ে না চলায় ধারদেনা করতে হয়েছে। পরিবারের এই সংকটের মধ্যেই সুইতং বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৫৯ পেয়ে এসএসসি আর ৪.০৮ পেয়ে এইচএসসি পাস করলেন। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথম হওয়ার গৌরব</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় তিন হাজার জনসংখ্যা বাংলাদেশের খুমী সম্প্রদায়ের। দেশের বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী চাকমাসহ অনেকের তুলনায় তারা নানা কারণে বেশ পিছিয়ে। খুমী জাতিগোষ্ঠীর কেউ এর আগে দেশের কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি। সেই </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথম খুমী</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হওয়ার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলেন সুইতং। সুযোগ পেয়ে গেলে পড়াশোনার খরচ চালাবেন কিভাবে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেই ভয়ও অবশ্য ছিল। সুইতং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন। ফল </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ইউনিটে ৩৩তম। ভর্তি হলেন নিজের পছন্দের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে। স্বপ্ন সত্যি হলো।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রঙিন ক্যাম্পাসে সাদাকালো জীবন</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভর্তি তো হলেন ঠিকই। কিন্তু নিশ্চিত আর্থিক সমর্থন ছাড়া রাজধানী শহরে জীবন, পড়াশোনা চালাবেন কী করে? একসময় বনশ্রীতে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে খণ্ডকালীন চাকরি নিলেন সুইতং। সেই চাকরি থেকে যা পেতেন তা দিয়ে নিজে তো চলতেনই, ভাই-বোনদের পড়ার খরচও চালাতেন।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তরুণ সুইতংয়ের অশক্ত কাঁধে তখন পরিবারের গুরুভার। ফলে চারুকলার মতো বর্ণিল ক্যাম্পাসে বস্তুত সাদাকালো জীবনই কেটেছে সুইতংয়ের। সহপাঠী-বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া, হৈ-হুল্লোড়ের উপায় ছিল না তাঁর। প্রথমবর্ষ থেকেই ক্লাস শেষে ছুটতেন কর্মস্থলে। কালের কণ্ঠকে বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেখতাম হলের বন্ধুরা টিএসসিতে বসে আড্ডা দিচ্ছে, কনসার্টে যাচ্ছে। দলবেঁধে বাইরে বেড়াতে যাচ্ছে। কিন্তু আমার সে সুযোগ ছিল না। রেস্টুরেন্টের পার্টিগুলো যতটা পারতাম এড়িয়ে চলতাম। যাতে অযথা খরচ এড়ানো যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে পড়াশোনা তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। সহপাঠীদের প্রায় সবারই ল্যাপটপ, ক্যামেরাসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা সহায়ক সরঞ্জাম কমবেশি ছিল। এসবের কিছুই ছিল না সুইতংয়ের। কর্মস্থলের ধীরগতির ডেস্কটপই ছিল সম্বল। তার পরও ধৈর্য ধরে লেগে ছিলেন।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুমীদের মধ্যে প্রথম স্নাতক লেলুং খুমী নামের আরেকজন। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন ক্রস ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হন লেলুং খুমী। তাই দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা প্রথম খুমী স্নাতক সুইতংই। তাঁর সাফল্যে আনন্দিত লেলুং খুমী। তিনি বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুইতংয়ের সাফল্যে আমরা আনন্দিত। আশা করছি, তাঁর দেখানো পথে অনেক খুমী শিক্ষার্থী উঠে আসবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মায়ের চোখ অশ্রুসজল</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছেলের এই কৃতিত্বের খবর শুনে আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছে লিংসাই খুমীর। লিংসাইয়ের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তিনি তখনো কাপড় বুনছিলেন। বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লোকের কাছ থেকে ধারদেনা করে ছেলেমেয়েদের বড় করেছি। আজ মনে হয় আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। খুব খুশি লাগছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিজে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছেন বলে অন্যের দুঃখে সমব্যথী হন সুইতং। চেষ্টা করেন নিজের সম্প্রদায়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তীচ্ছু আট শিক্ষার্থীকে গাইড কিনে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে নৃগোষ্ঠীগুলোর ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মোটিফ নিয়ে গবেষণা করতে চান। এনিমেশন নিয়েও বড় কাজ করার আগ্রহ আছে তাঁর। নৃগোষ্ঠীগুলোর লোকগাথা, গল্প, প্রচলিত কাহিনিগুলো এনিমেশনের মাধ্যমে বৃহত্তর সমাজে তুলে ধরতে চান।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="1col" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="1col" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="1col" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="1col" style="text-align:left"> </p>