<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং জলবায়ুর প্রতিকূল পরিবর্তনের কারণে পৃথিবী নামক গ্রহটি ক্রমেই ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য মূলত দায়ী মানুষের অপরিকল্পিত ও প্রকৃতিবিনাশী কর্মকাণ্ড। এই ধ্বংসযাত্রা থেকে পৃথিবীকে রক্ষার উপায় খুঁজতে বিশ্বনেতারা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে একত্র হয়েছেন। সেখানে গত বুধবার কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যথার্থই বলেছেন, এই গ্রহের ধ্বংসের জন্য দায়ী মানুষ। তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই এটি করছে এবং তারা এমন একটি জীবনধারা বেছে নিয়েছে, যা পরিবেশের প্রতিকূলে কাজ করে। ড. ইউনূস বলেন, টিকে থাকার জন্য আমাদের ভিন্ন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যার ভিত্তি হবে শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন। তাঁর মতে, এই সংস্কৃতি নৈমিত্তিক ভোগ সীমিত করবে, কোনো বর্জ্য অবশিষ্ট রাখবে না। কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি থাকবে না, থাকবে শুধু নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এতে এমন একটি অর্থনীতি গড়ে উঠবে, যার ভিত্তি হবে মূলত সামাজিক ব্যবসার মতো ব্যক্তিগত পর্যায়ে শূন্য মুনাফা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে বৈশ্বিক সংকট তৈরি হয়েছে, তার প্রধান শিকার হচ্ছে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো। আর এই পরিস্থিতির জন্য প্রধানত দায়ী উন্নত দেশগুলো, যাদের কর্মকাণ্ড ও জীবনযাত্রায় কার্বন নির্গমনের হার অনেক বেশি। বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে এলডিসি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবেলা এবং পৃথিবী ও মানবকল্যাণকর নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে প্রয়োজন এক নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো। বুধবার বাকুতে কপ২৯ সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পাঁচটি প্রধান জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ স্বল্পোন্নত দেশ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নেপাল, মালাউই, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া ও বাংলাদেশের নেতারা যোগ দেন। প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু আলোচনার জন্য একটি নতুন পদ্ধতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান পদ্ধতিটি বিশ্বের বেশির ভাগ চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলো সবচেয়ে বড় অবিচারের সম্মুখীন হয়েছে। তিনি বলেন, জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য একটি বৃহত্তর তহবিল সুরক্ষিত করার জন্য এলডিসি দেশগুলোকে আরো কঠোর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ। ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিল যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা হবে, সম্ভব হলে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে কমিয়ে আনা হবে। কপ২১ নামে পরিচিত ওই সম্মেলনে এ জন্য কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কতটুকু কমাতে হবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সেই লক্ষ্য অর্জনের ধারেকাছেও আমরা পৌঁছতে পারিনি। বিশ্বনেতাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, কপ২৯ থেকে সেই লক্ষ্য অর্জনে আরো বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হোক। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে রক্ষায় প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হোক। </span></span></span></span></p>