<p>রাত নামলেই সোনা খননকারী, ফেরিওয়ালা ও যৌনকর্মীরা ভিড় জমান পূর্ব ডিআর কঙ্গোর কিভু প্রদেশের কামিতুগা শহরের মদের বারে। ক্রমবর্ধমান মাংকিপক্স প্রাদুর্ভাবের জন্য খনির শহরের এই জমায়েতকে দায়ী করছেন কেউ কেউ।</p> <p>বিতামা সেবুহুনি নামে স্থানীয় একজন সম্পদ আহরণকারী সতর্ক করে বলেছেন, ‘কামিতুগার জীবন মানুষকে পাপের দিকে চালিত করে।’  তিনিও অরক্ষিত যৌনতার কারণে মারাত্মক ভাইরাল এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি আছেন।</p> <p>স্বর্ণখনির জন্য বিখ্যাত কামিতুগা ছিল এমপিক্স বা মাংকিপক্স মহামারির সূচনা বিন্দু। দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত সেপ্টেম্বর থেকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে আঘাত হানে এই মারাত্মক ভাইরাস।</p> <p>১৯৯০-এর দশকে বেলজিয়ান কম্পানিগুলো কামিতুগায় স্বর্ণখনিতে তাদের খনন কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে অনেকে এসব স্বর্ণখনিতে খননকাজ করছেন এবং যা সকল স্তরের আগ্রহী মানুষের আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্র। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ৩ লাখ লোকের বাসস্থান কামিতুগা। </p> <p>কামিতুগার ঔপনিবেশিক যুগের ভবনগুলো এখন সোনা কেনার ব্যুরো, খনির সরঞ্জামের দোকান এবং নাইটক্লাবে পরিণিত হয়েছে। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে এমপিক্স ভাইরাস এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এমপক্স ছড়ানোর জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ তৈরি করেছে।</p> <p>খনিতে তৃষ্ণা মেটাতে সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করেন খননকারীরা। এরপর তারা নগদ অর্থ ব্যয় করে ঘনিষ্ঠ সাহচর্যের সন্ধানে কামিতুগার শহরে আবির্ভূত হন।</p> <p>বিতামা সেবুহুনি বলেন, ‘পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গেলেই আমরা আমাদের দেশের নারী এবং মদ নিয়ে কথা বলি। আমি কোনো ধরনের সুরক্ষা ছাড়াই পতিতাদের সঙ্গে মিলিত হতাম।’ বিতামা সেবুহুনিকে কামিতুগা হাসপাতালের এমপক্স আইসোলেশন কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।  </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইরানে মদের বিষক্রিয়ায় ৬ জনের মৃত্যু : রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/30/1727677218-b5c2b0baf6323afa913fe300eda5d0f0.gif" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইরানে মদের বিষক্রিয়ায় ৬ জনের মৃত্যু : রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/09/30/1430439" target="_blank"> </a></div> </div> <p>আলিমা ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এনজিও-এর ডাক্তার ডালি মুয়াম্বা কাম্বাজি বলেন, ‘আমাদের প্রায় ২০ শতাংশ রোগী যৌন সংক্রমণের কারণে এমপক্সে আক্রান্ত হয়েছিলেন। হাসপাতালের ডাক্তাররা প্রথম ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এমপক্সের মুখোমুখি হন।</p> <p>ডাক্তার জেমস ওয়াকিলোঙ্গা জাংগুইলওয়া বলেন, ‘আমরা একটি নাইটক্লাবের ম্যানেজারের ত্বকে অস্বাভাবিক ক্ষত লক্ষ্য করেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘যখন আমরা লক্ষ্য করলাম ওই নাইটক্লাবের আরো কিছু নারীর ত্বকে একই ধরনের ক্ষত তৈরি হতে শুরু করেছে, তখন আমরা সতর্ক হয়ে যাই।’ </p> <p>‘মামবেনগেটি’ নাইটক্লাবটির দরজা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু নাইটক্লাবটি স্থানীয়ভাবে নতুন ডাকনাম পেয়েছে ‘এমপক্স’হিসেবে। এমপক্সের বিস্তার কামিতুগায় অনেকাংশে যৌনকর্মীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা শহরের গলিতে ঘোরাঘুরি করে, তাদের নিজেদের একটি জেলা এমনকি তাদের নিজস্ব সমিতিও রয়েছে। সমিতির সদস্যরা গলির গোলকধাঁধার শেষে লুকানো একটি বারে জড়ো হয়েছিলেন। </p> <p>একজন যৌনকর্মী ক্যামেরার সামনে কথা বলতে দ্বিধা করেননি। তিনি বলেন, এমপক্সের কারণে তাদের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই রোগের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে গ্রাহকদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।’</p> <p>এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক সংক্রামিত নারী তাদের রোগের কথা প্রকাশ করেন না এই ভেবে যে, তারা তাদের উপার্জনের রাস্তা হারিয়ে ফেলবেন।  এ নিয়ে আরো একজন বলেছেন, ‘আমি না জেনেই সংক্রামিত হয়েছিলাম এবং এটি আমার জন্য কঠিন ছিল।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘এইডসের মতোই সবাই মাঙ্কিপক্সের কথা লুকিয়ে রাখে।’ অ্যালিস নামের ওই নারী বলেন, প্রতিটি সঙ্গীর কাছ থেকে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার কঙ্গোলিজ ফ্রাঙ্ক (প্রায় এক থেকে ৩.৫ ডলার) উপার্জন করেন। তিনি প্রাদেশিক রাজধানী বুকাভু থেকে এসেছেন, যেখানে তিনি কম কঙ্গোলিজ ফ্রাঙ্ক পেতেন। </p> <p>হাসপাতালে ভর্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একজন যৌনকর্মী এএফপিকে বলেন, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অনেকে নারীকে শহরে নিয়ে আসে দালালরা। ভাইরাসটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর দক্ষিণ কিভুজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রদেশটি দেশেটিতে মহামারির কেন্দ্রস্থল এবং আফ্রিকাতে এমপক্স দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ।</p> <p>সূত্র : এএফপি</p> <p><br />  </p>