<p>গোলাবারুদের ব্যবসা করে রীতিমতো ফুলেফেঁপে ওঠেন আলফ্রেড নোবেল। পরিণত হন বিশ্বের অন্যতম ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিতে। কিন্তু টাকা আর অস্ত্র তৈরি ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না। বিয়েটাও করেননি। কবিতা লেখেন, নিসঙ্গতায়ও ভোগেন। অনুভব করেন সঙ্গীর। ঠিক তখনই আলফ্রেড নোবেলকে ‘মৃত্যুর কারবারি’ উপাধি দিয়ে তাঁর মৃত্যুর ভুল খবর ছাপা হয়। তখন হুঁস হয় নোবেলের। পাল্টে ফেলতে চান নিজেকে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হচ্ছে আজ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728285229-6830f424b0df039ff3225ccde3eaa348.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হচ্ছে আজ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432707" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৮৭৬ সাল। আলফ্রেড তত দিনে স্থায়ী নিবাস গড়েছেন প্যারিসে। সত্যি বলতে কি ইউরোপের প্রায় সব বড় শহরে তাঁর একটা করে বাড়ি আছে। তবুও প্যারিসেই তাঁর দিন কাটে। কিন্তু নিঃসঙ্গতা আর কত দিন। বয়স তো ৪৪-এর কোঠায়। একটা ফন্দি আসে তাঁর মাথায়। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় গিয়েছিলেন ব্যবসার কাজে। সেখান থেকেই পত্রিকায় দেন বিজ্ঞাপন দেন- ‘ফরাসি এক মধ্যবয়সী ধনকুবের জন্য একজন বহুভাষী স্মার্ট সুন্দরী সহকারী চাই।’ </p> <p>সেই বিজ্ঞাপনে কিছুদিনের মধ্যেই একজন আসেন সাক্ষাৎকার দিতে। বার্থা ফন কিনস্কি। প্রথম দেখাতেই তাঁর প্রেমে পড়ে যান নোবেল। চাকরিটা পাকা করে একদিন বলে ফেলেন মনের কথা। কিন্তু বার্থা আরেকজনের বাগদত্তা। সে-কথা খুলে বলেন নোবেলকে। কিন্তু নোবেল সেটা মানতে নারাজ। বাধ্য হয়ে তাই একদিন গোপনেই ফ্রান্স ছাড়েন বার্থা। প্রেমিকের হাত ধরে চলে যান জর্জিয়ায়। আলফ্রেড এই ঘটনায় মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু বার্থার সঙ্গে এরপর চিঠি চালাচালি করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আমৃত্যু সেই বন্ধন অটুট ছিল। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="এবার কারা পাচ্ছেন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728127448-9b6db3f3f700bff8a64ab0ab80bfe9ac.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>এবার কারা পাচ্ছেন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/05/1432077" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জর্জিয়ায় গিয়ে বার্থা যুদ্ধবিরোধী একটা সংগঠন গড়ে তোলেন। লেখালেখিতেও তত দিনে নাম করেছেন। লিখে যাচ্ছেন যুদ্ধবিরোধী গল্প-কবিতা। তাতে নোবেলেরও সমর্থন আর্থিক সহযোগিতা দুটোই আছে। অথচ নিজে করছেন মৃত্যুর কারবার।</p> <p>এরপরেই ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ। যেটাকে তাঁর মৃত্যুসংবাদ হিসেবে চালিয়েছে পত্রিকাগুলো। সারা দুনিয়ায় তাঁর নামে ঢিঁ ঢিঁ পড়ে যায়। নোবেলের তখন বোধোদয় হয়। বুঝতে পারেন, সত্যি যেদিন তাঁর মৃত্যু ঘটবে, সেদিনও ঘৃণার রাশি রাশি স্তূপ ধেয়ে আসবে তাঁর লাশের দিকে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="চেঙ্গিস খানের সমাধি রহস্য" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/06/1728207996-aef3d0b20f5fdb94b75ad93e954ee7da.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>চেঙ্গিস খানের সমাধি রহস্য</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/06/1432378" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এই উপলব্ধিই পাল্টে দেয় শান্তি আর বিজ্ঞান গবেষণার স্বীকৃতির ইতিহাস। ১৮৯৫ সালে তাঁর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন নোবেল। তখনই চিন্তা করেন মরার আগে কিছু করতেই হবে। তাঁর কোনো উত্তরাধিকার নেই, যে খাবে অঢেল সম্পত্তি। সত্যি সত্যি সে সম্পত্তি মানবকল্যাণে কাজে লাগানোর কথা ভাবেন। উইল করে যান নোবেল ফাউন্ডেশন গড়ার জন্য। তাঁর সম্পত্তি থেকে যে আয় হবে, তা দিয়েই প্রতিবছর বিজ্ঞান, চিকিৎসা আর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য কয়েকজন বিজ্ঞানী, লেখক ও শান্তিবাদীকে পুরস্কৃত করবে নোবেল কমিটি। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="স্মার্টফোন হাত থেকে পড়ে গেলে নষ্ট হয় কেন?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/06/1728206691-f2519382f264e24b8372a3bafb1e6d70.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>স্মার্টফোন হাত থেকে পড়ে গেলে নষ্ট হয় কেন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/06/1432374" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৮৯৬ সালে মারা যান নোবেল। এরপরই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি চলে যায় নোবেল ফাউন্ডেশনের কাছে। নোবেল কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিই ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করে। যুদ্ধবিরোধী অন্দোলনের অগ্রপথিক নোবেলের বন্ধু বা প্রেমিকা বার্থ ফন কিনস্কি পান শান্তিতে নোবেল পুরস্কার, ১৯০৫ সালে। আর যে নামটি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া ‘মৃত্যুর কারবারি’ হিসেবে ঘৃণিত হতে পারত, সেই আলফ্রেড নোবেল নামটি আজ খোদাই শান্তির দূত হিসেবে।</p> <p>সূত্র: বিট্রানিকা/নোবেল প্রাইজ ডট অর্গ</p>