<p>বাংলাদেশ সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।</p> <p>বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বিগত সরকারের আমলে সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা এবং বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান।</p> <p>অধ্যাপক ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তাঁর সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেকোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।</p> <p>প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি দেশের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তাহলে তাদেরও (যুক্তরাষ্ট্র সরকার) পূর্ণ সহযোগিতা করা উচিত।</p> <p>বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই বিপ্লব চলাকালে এবং এর পরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবিসংবলিত ‘দি আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উপহার দেন।</p> <p><strong>কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সহায়তার আশ্বাস</strong></p> <p>কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।</p> <p>নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের বৈঠকের ফাঁকে দুই দেশের সরকারপ্রধানদের সাক্ষাৎ হয়।</p> <p>সংক্ষিপ্ত বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় ও স্বাধীনতাকে গভীরতর করার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার এবং বাংলাদেশের তরুণদের সমর্থন করে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।</p> <p>অধ্যাপক ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিপ্লবের সময় এবং পরে ছাত্র ও তরুণদের আঁকা দেয়ালচিত্রের একটি আর্ট বই ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ হস্তান্তর করেন।</p> <p>বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণে সহায়তা করার জন্য কানাডার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে জাস্টিন ট্রুডো পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণে অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন।</p> <p>এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিগত শাসনব্যবস্থা কিভাবে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে, তা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থনের জন্য কানাডার প্রশংসা করেন। তিনি কানাডাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরো ভিসা দেওয়ার অনুরোধ জানান।</p> <p><strong>জাতিসংঘ মহাসচিবের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান</strong></p> <p>জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর জাতিসংঘ সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন।</p> <p>বাসস জানায়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়, যেখানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগদানকারী বিশ্বনেতাদের স্বাগত জানান সংস্থাটির মহাসচিব।</p> <p>অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা ডা সিলভা, মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বিরাজ সিং রূপন এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার সম্পর্কিত হাইকমিশনার ভলকার টুর্কসহ অন্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।</p> <p>জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস সোমবার নিউইয়র্কে পৌঁছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি সংস্থাটির ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দেন।</p> <p>সোমবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে তিনি নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এ সময় জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ডি এম সালাউদ্দিন মাহমুদ প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান।</p> <p>প্রধান উপদেষ্টা বিমানবন্দরে পৌঁছার সময় বিপুলসংখ্যক প্রবাসী তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় প্রবাসীরা ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’ লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন। বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানানো হয়।</p> <p>আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।</p>