<p>আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস আজ শুক্রবার। নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষদের স্মরণে এবং গুমের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতেই প্রতিবছর শুক্রবার দিবসটি পালনের ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন ফর প্রোটেকশন অব অল পারসনস এগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ সম্মেলনে যে আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয়, তাতে ৩০ আগস্টকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।</p> <p>দিবসটি উপলক্ষে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে সকাল থেকে। আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে মায়ের ডাক সংগঠনটির।</p> <p>বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) পৃথক বিবৃতিতে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে সব নাগরিককে গুম থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা, গুমের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা, গুমের শিকার সব নিখোঁজ ব্যক্তিকে অনতিবিলম্বে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া এবং গুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সনদে সই করেন।</p> <p>বলপূর্বক গুমের শিকারদের জন্য আন্তর্জাতিক দিবসের এক দিন আগে এ সনদ সই হয়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা বলপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার এই সপ্তাহের শুরুতে একটি কমিশনও গঠন করে।</p> <p>মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, গুমের শিকার বেশির ভাগ মানুষই সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। গুমের পর নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কার্যকর তদন্ত হয় না বললেই চলে।</p> <p>মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকারের’ তথ্যানুযায়ী ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৮ জন নিখোঁজ হয়েছেন। তবে অপর মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলেছে, ২০০৭ সাল থেকে ২০২৩ সালে গুমের শিকার হয়েছেন ৬২৯ জন। তার মধ্যে ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি ৯৭ জন গুম হন। পরিসংখ্যান বলেছে, ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ২১ জন গুম হন। ২০১০ সালে ৪৭ জন, ২০১১ সালে ৫৯ জন, ২০১২ সালে ৫৬ জন, ২০১৩ সালে ৭২ জন, ২০১৪ সালে ৮৮ জন, ২০১৫ সালে ৫৫ জন, ২০১৭ সালে ৬০ জন, ২০১৮ সালে ৩৪ জন, ২০১৯ সালে ১৩ জন, ২০২০ সালে ৬ জন, ২০২১ সালে ৭ জন, ২০২২ সালে ৫ জন ও ২০২৩ সালে ৯ জন গুমের শিকার হন।</p>